চট্টগ্রামে ফয়েস লেক বেসক্যাম্প উদ্বোধন

আগের সংবাদ

কাটবে যেসব সংকট : আইএমএফের ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ

পরের সংবাদ

গৃহায়ণ ও রাজউকের ১১ উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী : আওয়ামী লীগ সরকারে আছে বলেই দেশের উন্নয়ন হচ্ছে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ সরকারে আছে বলেই দেশের মানুষের সার্বিক উন্নয়ন করা সম্ভব হচ্ছে। কারণ আমরা জনগণের জন্য কাজ করছি। জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে ২০১৪ সালে নির্বাচিত করেছে। ২০১৮ সালে ভোট দিয়ে আবার নির্বাচিত করেছে, এর একমাত্র কারণ হলো আমরা তাদের উন্নয়নে কাজ করেছি। কাজেই গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকলেই দেশের মানুষের উন্নতি হয়। এটা হচ্ছে বাস্তবতা।
গতকাল সোমবার সকালে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ ও রাজউকের ১১টি প্রকল্প উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। রাজধানীর রমনা পার্কে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে গণতন্ত্র আছে বলেই উন্নয়নগুলো সম্ভব হয়েছে। এই ধারা না থাকলে এত উন্নয়ন হতো না। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। পরমাণু শক্তিতে যুক্ত হতে পেরেছি। এই পরমাণু দিয়ে আমরা বোমা বানাব না, বিদ্যুৎ উৎপাদন করব।
করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলো যখন হিমশিম খাচ্ছে আমরা তারপরও আমাদের অর্থনীতির গতিধারা অব্যাহত রেখেছি। প্রবৃদ্ধি ৭ ভাগ অর্জন করতে পেরেছি। ২০২৩ সাল হবে মন্দার বছর, এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। দেশে যেন এর ধাক্কা না লাগে, সেজন্য এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না। প্রতি ইঞ্চি জমিতে চাষাবাদ করতে আমি দেশবাসীর প্রতি বারবার অনুরোধ জানিয়ে আসছি। সেই সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ-গ্যাস ব্যবহারেও সবাইকে আমি সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। রাজধানীবাসীর অতীতের পানির কষ্টের কথা স্মরণ করিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরে সুপেয় পানির বড় অভাব ছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েই আমরা রাজধানীর সায়েদাবাদ ১, ২ ও ৩ সহ বিভিন্ন ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট করে দিয়েছি। কাজেই পানির ব্যবহারেও সবাইকে সাশ্রয়ী হতে হবে। তিনি বলেন, আমরা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাই শুধু বাড়াইনি তাদের আবাসন সুবিধা ৩২ শতাংশে উন্নীত করেছি। লক্ষ্য হলো ৪০ শতাংশে নিয়ে যাওয়া। এ সময় হাইকোর্টে এ্যানেক্স ভবন নির্মাণ, আইনজীবীদের জন্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, বিচারকদের জন্য আবাসন সুবিধা বৃদ্ধি, জেলায় জেলায় নতুন আদালত ভবন তৈরিসহ সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সমস্যা দূর করার পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৭৫-এর পর এ দেশে ক্ষমতার পরিবর্তন হয়েছে বন্দুকের নল দিয়ে। অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে হত্যা, ষড়যন্ত্রের মধ্যদিয়ে, ‘মার্শাল ল’ চলেছে। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মাধ্যমে দেশে যে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত হয়েছিল সেটা ব্যাহত হয়ে যায়। এভাবেই ২১ বছর সরকার পরিচালিত হয়। ফলে মানুষের উন্নয়নের গতিও ব্যাহত হয়। অথচ জাতির পিতা মাত্র সাড়ে ৩ বছরে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলে প্রবৃদ্ধি ৯ ভাগের ওপরে তুলে দেশকে স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। ’৭৫-এ জাতির পিতাকে হত্যার পর এই অগ্রগতি থেমে যায়। কারণ, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারি দিয়ে কখনো দেশের উন্নয়ন হয় না। আর ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করেই এই জনগণের কিছুটা হলেও উন্নয়ন করতে পেরেছিল। অনির্বাচিত

সরকার দিয়ে কখনো দেশের উন্নতি হয় না উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জাতির পিতার হত্যার পর যিনি সেনাপ্রধান হলেন, তিনিই একদিন নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিলেন। ঘোষিত রাষ্ট্রপতি, অনির্বাচিত লোক দিয়ে কখনো দেশের উন্নতি হয় না, এটা প্রমাণিত সত্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর আমরা জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করেছি। জনগণের উন্নয়ন অন্তত আমরা করতে পেরেছিলাম। বিদ্যুৎ উৎপাদন, সাক্ষরতার হার, খাদ্য উৎপাদন বাড়িয়েছিলাম। পরিকল্পনার মধ্য দিয়েই আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাই। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে ২০০৮ সালের নির্বাচনে আমরা রূপকল্প-২০২১ ঘোষণা দিয়ে সরকার গঠন করি। আমাদের যে পরিকল্পনা সেই পরিকল্পনার মধ্য দিয়েই আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাই। বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। যদি এই ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক ধারা না থাকত তাহলে এ দেশ কিন্তু এতো উন্নত হতে পারত না।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন করা ১১টি প্রকল্প হলো- গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকল্প : ঢাকার আজিমপুরে বিচারকদের জন্য ২০ তলাবিশিষ্ট আবাসিক ভবন নির্মাণ (৯০টি ফ্ল্যাট), তেজগাঁওয়ে সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য বহুতল (১৩ তলা) আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ (৬টি ১৩ তলা ভবনে ২৮৮টি ফ্ল্যাট), মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ২৮৮টি আবাসিক ফ্ল্যাট, নোয়াখালী সদরে সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ (৯টি ১০তলা ভবনে ৩২৪টি ফ্ল্যাট)। এছাড়াও রয়েছে ঢাকার রমনা পার্কের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং রমনা লেকসহ সার্বিক সৌন্দর্য বৃদ্ধিকরণ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার লাইব্রেরি ভবন, এনেক্স ভবন এবং অডিটোরিয়াম নবায়নসহ আনুষাঙ্গিক কাজ।
জাতীয় গৃহায়ণ কতৃর্পক্ষের প্রকল্প : মিরপুর ৯ নম্বর সেকশনে মধ্যম আয়ের লোকদের জন্য ১ হাজার ৪০টি আবাসিক ফ্ল্যাট (স্বপ্ননগর-১) নির্মাণ, মিরপুর ১৫ নম্বর সেকশনে ১৪ তলাবিশিষ্ট ১ হাজার ২৫০ বর্গফুট আয়তনের ১০০টি ফ্ল্যাট নির্মাণ ও সিলেটের সুনামগঞ্জে সাইট এন্ড সার্ভিসেস আবাসিক প্লট উন্নয়ন।
রাজউকের প্রকল্প : রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পূর্বাচল পানি সরবরাহ প্রকল্প (প্রথম পর্যায়) ও পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্রগতি উচ্চ বিদ্যালয় ভবন, পলখান উচ্চ বিদ্যালয় ও পূর্বাচল আদর্শ কলেজ ভবন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়