উগ্র মৌলবাদের বিরুদ্ধে গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের কর্মসূচি

আগের সংবাদ

গৃহায়ণ ও রাজউকের ১১ উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী : আওয়ামী লীগ সরকারে আছে বলেই দেশের উন্নয়ন হচ্ছে

পরের সংবাদ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপনির্বাচন : স্বতন্ত্র প্রার্থী আসিফ নিখোঁজ নাকি আত্মগোপনে?

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির বহিষ্কৃৃত নেতা আবু আসিফের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। গত শুক্রবার রাত থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন বলে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন তার স্ত্রী মেহেরুন্নিছা। তবে প্রায় দুদিন হলেও এখন পর্যন্ত নিখোঁজের বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি কিংবা কোথাও কোনো রকম লিখিত অভিযোগও করেননি তিনি।
এতে করে আসিফ নিখোঁজ, নাকি আত্মগোপনে রয়েছেন তা নিয়ে ধু¤্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। এছাড়াও তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সনের সাবেক উপদেষ্টা ও এই আসন থেকে পাঁচবারের সাবেক সংসদ সদস্য বহিষ্কৃত উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার অন্যতম প্রতিদ্ব›দ্বী। আবু আসিফ মোটরগাড়ি প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছিলেন। আবু আসিফের নিখোঁজের বিষয়টি জেলার সর্বত্র নানা আলোচনার ঝড় তুলেছে। তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার যোগযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
আবু আসিফ অভিযোগ করে আসছিলেন, নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য তার ওপর প্রচণ্ড চাপ ছিল। তার নির্বাচনী প্রচারণার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মী-সমর্থকদের নানাভাবে হয়রানি করাসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছিল। তবে এর মধ্যেও তিনি নির্বাচন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন। কিন্তু শুক্রবার রাত থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এর আগে গত বুধবার আবু আসিফের নির্বাচনী প্রচারণার দায়িত্বে থাকা মুসা মিয়া (৮০) নামে এক বৃদ্ধকে হামলা ও সংঘর্ষ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। আবু আসিফের নির্বাচনে প্রধান সমন্বয়কারী ও তার শ্যালক সাফায়েত সুমনও নিখোঁজ হন। তিনি আশুগঞ্জের লালপুর গ্রামের বাসিন্দা।
আবু আসিফের স্ত্রী মেহেরুন্নিছা জানান, গত দুই দিন ধরে আমার স্বামী ঘরে ফেরেনি। আমাদের

লোকজনও ভয়ে থাকছে। এজেন্ট নিয়োগ দিতে সমস্যা হচ্ছে। কাজের লোক এলেও ছবি তুলে রাখে। ভিডিও করে রাখে। এভাবে তো সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না। প্রতিনিয়ত আমাদের হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। বাড়িতে পুলিশ এসে অযথা তল্লাশি করে হয়রানি করছে। বাড়ির সামনেও কিছু পুলিশ আসা-যাওয়া করছে। তারা একজনকে জেতাবে এটি আগে বললেই তো পারে। কেন আমাদের এতো টাকা খরচ করাল? আমার ছোট ভাইকেও বুধবার থেকে পাচ্ছি না। এ বিষয়ে থানায় বা কোথাও লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের পালিয়ে থাকতে হচ্ছে। আমিও ভয়ের মধ্যে আছি। দ্রুত একটা কিছু করব।
আবু আসিফের আশুগঞ্জ বাজারের বাড়ির দারোয়ান মো. ইউসুফ বলেন, পরশু রাতে কয়েকজন এসে পুলিশ পরিচয় দিয়ে পুরো বাড়ি তল্লাশি করে। পরদিন আবার আসে। বাসার সামনে সাদা পোশাকধারী লোকজন অবস্থান করছেন। কে এলো না এলো তার ছবি তুলছেন আশুগঞ্জ থানার ওসি মো. আজাদ রহমান জানান, এ ধরনের আলোচনা বা রিউমার সব সময়ই থাকে। তার নিখোঁজের বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ দেয়া হয়নি। বাড়ির সামনে সাদা পোশাকধারীদের অবস্থানের বিষয়টিও তিনি জানেন না বলে উল্লেখ করেন। অন্য কোনো সংস্থার লোকজন হতে পারে।
জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহগীর আলম জানান, জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি।
এদিকে এখন পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে আছেন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া (কলার ছড়ি), আবু আসিফ আহমেদ (মোটর গাড়ি), জাপার কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব আবদুল হামিদ ভাসানি (লাঙ্গল) ও জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম (গোলাপ ফুল)। অবশেষে তিনিও গত দুদিন ধরে নিখোঁজ থাকায় তার পক্ষেও কোনো প্রচারণা নেই।
উল্লেখ্য, গত ১১ ডিসেম্বর বিএনপির চেয়ারপার্সনের সাবেক উপদেষ্টা উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করায় আসনটি শূন্য হয়। তিনি এখন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ না করলেও উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া সমর্থকগোষ্ঠীর ব্যানারে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা, এমপি, জেলা ও উপজেলার নেতারা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়