প্রধান শিক্ষককে পিটুনি : আ.লীগ নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি

আগের সংবাদ

ভোক্তা অধিদপ্তরের মতবিনিময় সভা : আমদানি স্বাভাবিক না থাকলে বাজার নিয়ন্ত্রণ কঠিন হবে

পরের সংবাদ

আরবের বর্ষসেরা মরক্কোর আশরাফ হাকিমি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : ইউরোপিয়ান ফুটবলের পরিচিত মুখ আশরাফ হাকিমি এবার জিতলেন আরবের বর্ষসেরা ক্রিড়াবিদের পুরস্কার। গত পরশু সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত জয় অ্যাওয়ার্ড সেরেমনিতে আরবের সব ক্রীড়াবিদদের ছাপিয়ে এই পুরস্কার জেতেন তিনি। কাতার বিশ্বকাপে মরক্কোকে সেমিফাইনালে তোলার অন্যতম নায়ক ছিলেন পিএসজির এই ডিফেন্ডার।
গত বছরের পারফরমেন্স বিবেচনায় এই এই পুরস্কার দেয়া হয়। সৌদি আরবে মায়ের সঙ্গে পুরস্কার নিতে হাজির হন তিনি। পুরস্কার পাওয়ার পর তিনি বলেন, ‘আসসালাম আলাইকুম। এখানে এসে সত্যিই খুশি আমি। সৌদি আরব একটি বিশেষ দেশ। মায়ের সঙ্গে এখানে থাকতে পেরে আমি সত্যিই খুশি। তিনি আমার পাশে আছেন। পিএসজি এবং আমার দেশ মরক্কোকেও পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ। এখানে এসে নিজেকে খুব গর্বিত মনে হচ্ছে।’
১৯৭০ সালে মেক্সিকো বিশ্বকাপে প্রথম খেলে মরক্কো। এরপর দ্বিতীয় বিশ্বকাপ খেলতে তাদের অপেক্ষা করতে হয় ১৬ বছর। ১৯৮৬ সালে আবারো মেক্সিকোতেই বিশ্বকাপে আফ্রিকার অন্যতম প্রতিনিধিরা খেলেছিল দ্বিতীয় রাউন্ডে। এরপর ১৯৯৪, ১৯৯৮ বিশ্বকাপে চূড়ান্তপর্বে খেললেও গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয় তাদের। আটানব্বইয়ের বিশ্বকাপের পর ২০০২, ২০০৬, ২০১০, ২০১৪ বিশ্বকাপের চূড়ান্তপর্বে আসতে পারেনি তারা। ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপে আবারো চূড়ান্তপর্বে খেলার সুযোগ পেলেও দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে পারেনি মরক্কো। তবে দীর্ঘ অপেক্ষার পর কাতার বিশ্বকাপে রূপকথার জন্ম দিয়ে আফ্রিকা মহাদেশের ইতিহাসে প্রথম দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠে তারা। আর তাদের সেই রূপকথার অন্যতম নায়ক ছিলেন আশরাফ হাকিমি। পিএসজির জার্সিতে গত বছর ৩৮ ম্যাচ খেলে গোল করেছেন ৪টি এবং জাতীয় দলে ২০ ম্যাচে গোল করেছেন ৩টি।
বিশ্বকাপে এর আগে আফ্রিকার দলগুলোর সেরা সাফল্য ছিল কোয়ার্টার ফাইনাল। ১৯৯০ সালে ক্যামেরুন, ২০০২ সালে সেনেগাল ও ২০১০ সালে ঘানা বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে। কাতারে এবার আফ্রিকার চতুর্থ দল হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে মরক্কো। কাতার বিশ্বকাপে ‘এফ’ গ্রুপে মরক্কোর প্রতিপক্ষ ছিল ক্রোয়েশিয়া, বেলজিয়াম ও কানাডা। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে ড্র করার পর বেলজিয়াম ও কানাডাকে হারিয়ে শেষ ষোলোতে সজায়গা পায় তারা। নকআউটে সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন স্পেনকে বিদায় করে ইতিহাস গড়ে মরক্কো। যেখানে ¯œায়ুচার নিয়ন্ত্রণে রেখে টাইব্রেকারে গোল করে দলকে জেতান হাকিমি। এরপর বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পর্তুগালকে ১-০ গোলে হারিয়ে শেষ চারের টিকেট পায় মরক্কানরা। তবে সেমিফাইনালে ফ্রান্সের কাছে হেরে যায় তারা। এছাড়া তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে চতুর্থ দল হিসেবেই বিশ্বকাপ মিশন শেষ করে তারা।
আশরাফ হাকিমির জন্ম স্পেনে। মা-বাবার সঙ্গে সেখানেই বেড়ে ওঠেন তিনি। এক সময় মাদ্রিদের রাস্তায় ফেরি করে মালামাল বিক্রি করতেন তার বাবা আর বাসাবাড়ি পরিষ্কারের কাজ করতেন তার মা। রিয়াল মাদ্রিদ একাডেমি থেকে আশরাফ হাকিমির ফুটবলে হাতেখড়ি। স্পেন যুব দলে ডাকও পেয়েছিলেন তিনি।
তবে সেই ডাকে সাড়া দেননি। ফুটবল খেলতে চেয়েছিলেন তার বাবা-মায়ের দেশ মরক্কোর হয়ে। মাদ্রিদ একাডেমিতে হাতেখড়ি হলেও রিয়াল মাদ্রিদ জার্সি গায়ে খুব একটা দেখা যায়নি তাকে। মাত্র নয় ম্যাচ খেলেছেন তিনি। সেখান থেকে জার্মান ক্লাব বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের নজরে পড়েন। আর এখন খেলেন ফ্রেঞ্চ ক্লাব পিএসজির হয়ে। মরক্কো দলটি নিয়ে বিশ্বকাপের আগে যতবার আলোচনা হয়েছে, ততবার এসেছে আশরাফ হাকিমির নাম। হাকিমি ছিলেন দলটির সবচেয়ে বড় তারকা। তাই সবাইকে ছাপিয়ে আরবের বর্ষসেরা পুরস্কার জিতে নেন তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়