কাগজ প্রতিবেদক : ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থপরিপন্থি ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে গাজীপুরের সাময়িক বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে ক্ষমা ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সই করা এক চিঠিতে এই ক্ষমা করার কথা জানানো হয়েছে। জাহাঙ্গীর আলম সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তিনি আজ (শনিবার) চিঠি পেয়েছেন।
চিঠিতে বলা হয়, ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থপরিপন্থি কার্যক্রম ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে তাকে ক্ষমা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে, তা ক্ষমার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে বলেও চিঠিতে তাকে সতর্ক করা হয়েছে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গোপনে ধারণ করা মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও গাজীপুর জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগ ওঠে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ প্রতিবাদ মুখর হয়ে ওঠে। ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ জাহাঙ্গীর আলমকে বহিষ্কার করে। পরে মেয়র পদ থেকেও বরখাস্ত হন তিনি।
ক্ষমা ঘোষণা করে দেয়া ওবায়দুল কাদেরের সই করা চিঠিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগের স্বার্থ, আদর্শ, শৃঙ্খলা, তথা গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র পরিপন্থি সম্পৃক্ততার জন্য ইতোপূর্বে জাহাঙ্গীর আলমকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার/অব্যাহতি দেয়া হয়েছিল। অভিযোগ স্বীকার করে তিনি ভবিষ্যতে এই ধরনের কর্মকাণ্ডে যুক্ত না হওয়ার বিষয়ে লিখিত অঙ্গীকার করেছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দলের গত ১৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সিদ্ধান্ত অনুসারে তাকে ক্ষমা করা হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে এ ধরনের সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে তা ক্ষমার অযোগ্য বিবেচিত হবে।
জানা যায়, জাহাঙ্গীর আলমকে ক্ষমা করার খবর দ্রুত গাজীপুরে ছড়িয়ে পড়ে। সমর্থকদের অনেকেই বলেছেন, দলে ফেরায় মেয়র পদও ফিরে পাবেন জাহাঙ্গীর আলম। গাজীপুরের ছয়দানা এলাকায় জাহাঙ্গীরের বাসভবন ও এর সামনে আবারো নেতাকর্মীদের ভিড় দেখা গেছে। দলীয় নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে এবং জাহাঙ্গীর আলমকে অভিনন্দন জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, দল আমাকে ক্ষমা করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ। আমি দেশ ও জনগণের জন্য নিবেদিত হয়ে কাজ করে যেতে চাই। এর জন্য সবার কাছে দোয়া চাইছি।
সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের আগে অনুষ্ঠিত জাতীয় কমিটির সভায় সাংগঠনিক শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে অব্যাহতিপ্রাপ্তদের ক্ষমা করে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সে মোতাবেক দলের সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত চিঠিতে ব্যক্তিগতভাবে জানিয়ে দেয়া হয়। জাহাঙ্গীর আলমের চিঠিটি গত ১ জানুয়ারি ইস্যু করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।