সমাজকল্যাণমন্ত্রী : ভিক্ষুক নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালাচ্ছে মোবাইল কোর্ট

আগের সংবাদ

বৈশ্বিক সংকটে চাপা প্রত্যাবাসন : রোহিঙ্গা শরণার্থী

পরের সংবাদ

শীতে স্থবির জনজীবন : সর্বনিম্ন ৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গলে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২১, ২০২৩ , ১২:৩৩ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক, মৌলভীবাজার : কয়েকদিন ধরেই মৌলভীবাজার জেলাজুড়ে চলছে শীতের দাপট। তাপমাত্রার পারদ যত কমছে, ততই শীতের তীব্রতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এ জেলা। ঘন কুয়াশার সঙ্গে হিম বাতাস থাকায় স্থবির হয়ে পড়েছে ওই এলাকার মানুষের জনজীবন।
গতকাল শুক্রবার জেলার শ্রীমঙ্গলে সর্বনিম্ন ৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আগের দিন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অফিসের সহকারী কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান বলেন, তাপমাত্রা কমে যাওয়ার ফলে মৌলভীবাজারে বইছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। ফলে জেলাজুড়ে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। এ পরিস্থিতি দুই-তিন দিন বিরাজ করতে পারে।
সিলেট বিভাগের মাঝে সবচেয়ে বেশি শীত শ্রীমঙ্গলেই রেকর্ড করা হয়। প্রকৃতি ও পরিবেশগত কারণে এখানকার ঠাণ্ডা সিলেটের অন্যান্য জায়গার তুলনায় বেশি বলে তিনি জানান।
এদিকে শীতবস্ত্রের চাহিদা বাড়ায় ইতোমধ্যে সরকারি- বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। সচ্ছলরা শরীরে মোটা কাপড় জড়িয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করলেও নিম্নবিত্ত, অসচ্ছল ও খেটে খাওয়া মানুষরা পড়েছে বিপাকে। হাড় কাঁপানো তীব্র শীতে কাঁপছেন তারা। সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন বোরো চাষি, ছিন্নমূল ও দিনমজুররা।
মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলার কাউয়াদীঘি হাওর বেষ্টিত এলাকার অধিকাংশ মানুষই খেটে খাওয়া ও নিম্নআয়ের। শীত এলেই তাদের কষ্ট বাড়ে। শীতের তীব্রতায় কাহিল হয়ে পড়েছে তারা। ঘন কুয়াশার কারণে সময় মতো কাজে যেতে পারছে না তারা।
রাজনগর উপজেলার সোনাটিকি গ্রামের বোরো চাষি আফরান মিয়া বলেন, প্রচণ্ড ঠাণ্ডা ও কুয়াশায় মাঠে কাজে যাই। কাজে বের না হলে সংসার চলবে কি করে।
শহরে ভোরবেলায় ফেরি করে সবজি বিক্রি করেন সদর উপজেলার গিয়াসনগর এলাকার মইনউদ্দিন। তিনি বলেন, এই শীত ও কুয়াশায় ভ্যানগাড়ি চালিয়ে শহরে আসতে খুবই কষ্ট হয়। তারপরও ভোরে চলে আসি, পেটের জ্বালায়।
শহরের চৌমোহনা চত্বরে কথা হয় দিনমজুর সোহেল, সাদিক ও মোশাহিদ মিয়ার সঙ্গে। তারা জানান, শীতের কারণে কয়েকদিন ধরে সময়মতো কাজে যোগ দিতে পারছে না। একটু বেলা হয়ে গেলে অনেক সময় সেদিনের মজুরি থেকেও তারা বঞ্চিত হন।
এদিকে জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩১ জন, এআরআইয়ে ১৩ জন এবং অন্যান্য শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ জন। গত এক সপ্তাহে শীতকালীন রোগে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৭৮৬ জন। শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও বাড়ে হাসপাতালে। সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় শিশু ও বয়স্করা। অন্যান্য সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ সংখ্যক রোগীকে প্রতিদিন আউটডোর এবং ইনডোরে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।
এদিকে জেলা প্রশাসনের সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে জেলার ৬৭ ইউনিয়ন ও পাঁচ পৌরসভায় ৩৫ হাজার ২৮০টি কম্বল পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি জেলার ৭টি উপজেলার প্রতিটিতে নগদ দুই লাখ টাকা করে আর্থিক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর আরো কম্বলের চাহিদা দেয়া হয়েছে। সেগুলো পেলে বিতরণ করা হবে বলে জানা গেছে।
জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান জানান, তীব্র শীতে শীতার্ত মানুষের মাঝে উষ্ণতা ছড়িয়ে দিতে জেলা প্রশাসনের কম্বল বিতরণ অব্যাহত থাকবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়