প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
বর্তমানে দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির বাজারে এমনিতেই দেশের বেশিরভাগ মানুষের প্রাত্যহিক জীবনযাপনে গলদ্ঘর্ম অবস্থা, তার ওপর শিক্ষার্থীদের শিক্ষাসামগ্রীর দাম বৃদ্ধিতে দেশের এক বিশাল জনগোষ্ঠী পড়েছে বিপাকে। বিশেষ করে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের শিক্ষার সরঞ্জাম কিনে দিতে অভিভাবকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিগত কয়েক সপ্তাহে বই, খাতা, রাবার, স্কেল, বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের ল্যাবরেটরির সরঞ্জামাদি এবং ক্যালকুলেটর পেন্সিলসহ সব ধরনের শিক্ষাসামগ্রীর দাম বেড়েছে। শিক্ষাসামগ্রীর দাম বৃদ্ধির বিষয়টি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে অবশ্যই চিন্তা-ভাবনা করা উচিত। এমনিতেই কয়েক বছর ধরে করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী দরিদ্রতার কারণে ঝরে পড়েছে। তার ওপর বিভিন্ন সময়ে নিত্যপণ্যগুলোর মূল্য বৃদ্ধির কারণে দেশের মানুষকে পরিবার-পরিজন নিয়ে অত্যন্ত কষ্টকর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। ফলে নতুন বছরে বই-খাতাসহ নানা প্রয়োজনীয় শিক্ষাসামগ্রী সন্তানদের কিনে দিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন অভিভাবকরা। প্রাইমারি থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত সরকার বিনামূল্যে বই শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দিলেও শিক্ষার অন্যান্য সামগ্রী যেমন- খাতা, কলম, পেন্সিল, রাবার ইত্যাদি বাইরে থেকে কিনে নিতে হয়। যার ফলে অভিভাবকদের আয়ের ওপর ব্যাপক চাপ পড়ছে।
দেশে মধ্যবিত্তদের অনেকেই ছোট চাকরিজীবী, অনেকেই আছেন বেসরকারি চাকরিজীবী। দেশের বিভিন্ন জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও তাদের আয় তেমনিভাবে বাড়েনি। ফলে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম হতাশার মধ্যে আছেন। প্রকৃতপক্ষে এ দেশের গ্রামীণ পর্যায়ে বিশালসংখ্যক শিক্ষার্থীর বসবাস, যারা অনেকেই মা-বাবাকে ক্ষেতখামারসহ বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করার মাধ্যমে তাদের লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে। বাবা-মাকে সাহায্য করতে না পারলে এসব শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষাজীবন চালিয়ে নিতে সক্ষম হচ্ছে না। এসব শিক্ষার্থীর এমনিতেই লেখাপড়া চালাতে কষ্ট হয়, তার ওপর শিক্ষাসামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের অভিভাবকরা পড়েছেন বিপাকে। এমন অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের উচ্চমহলে পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। গত ২০২২ সালের তথ্যানুযায়ী প্রাইমারি থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত দেশে প্রায় ২ কোটি ৭৫ লাখের মতো শিক্ষার্থী রয়েছে। এদের সিংহভাগই গ্রামীণ পর্যায়ে তাদের শিক্ষাজীবন অতিবাহিত করে চলেছে। ফলে এদের কথা চিন্তা করে নতুন বছরে শিক্ষাসামগ্রীর দাম কীভাবে এদের হাতের নাগালে রাখা যায় সে বিষয়ে এখনই সিদ্ধান্ত নেয়া জরুরি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।