দুদক মামলা : আদালতে হাজিরা দিলেন আব্বাস দম্পতি

আগের সংবাদ

শিল্প খাতে বাড়ল গ্যাসের দাম > সবচেয়ে বেশি বাড়ছে ক্ষুদ্রশিল্পে, মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ বাড়বে : বিশেষজ্ঞদের অভিমত

পরের সংবাদ

তামিম ঝলকে খুলনার প্রথম জয় : সিলেটের জয়রথ থামাল কুমিল্লা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৮, ২০২৩ , ১:৪৫ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : মাশরাফির ‘অপ্রতিরোধ্য’ সিলেটকে গতকাল হারের স্বাদ দিয়েছে ইমরুল কায়েসের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এবারের বিপিএলে টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে এক প্রকার চমকেই দিয়েছিল সিলেট স্ট্রাইকার্স। ঢাকা পর্বের প্রথম অংশের পর চট্টগ্রামেও জয় নিয়েই শুরু করেছিল মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। গতকাল ষষ্ঠ ম্যাচে এসে কুমিল্লার বিপক্ষে হেরেছে ৫ উইকেটে। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে হারানোর ফলে পরপর দুই দিন দুই জয়ে পয়েন্ট টেবিলে কুমিল্লা এখন তলানি থেকে চতুর্থ অবস্থানে ওঠে এসছে।
উড়তে থাকা সিলেটকে ১৩৩ রানে থামিয়ে গতকাল প্রতিশোধের মঞ্চটা গড়ে দেন কুমিল্লার বোলাররাই। বাকি কাজটা করেন লিটন দাস। ৪২ বলে ৭০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে ম্যাচটা সিলেটের নাগালের বাইরে নিয়ে যান। ৭টি চার ও ৪টি ছক্কা ছিল লিটনের ইনিংসে। অফ স্পিনার শরীফুল্লাহর এক ওভারেই ২৪ রান নিয়েছেন লিটন। এবারের বিপিএলে এটিই তার প্রথম ফিফটি। সে ইনিংসে ভর করেই ৬ বল বাকি থাকতে ৫ উইকেটের জয় নিশ্চিত হয় কুমিল্লার।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই কুমিল্লার বোলারদের তোপের মুখে পড়ে সিলেট। টপঅর্ডারের সাত ব্যাটারের কেউ বিশের ঘরও ছুঁতে পারেননি। মোহাম্মদ হারিস ৭, নাজমুল হোসেন শান্ত ১৩, আকবর আলি ১, জাকির হাসান ৯, মুশফিকুর রহিম ১৬, শরিফুল্লাহ ১ আর মাশরাফি বিন মর্তুজা করেন ০। ৫৩ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে সিলেট। সেই কঠিন বিপদ থেকে দলকে উদ্ধার করেন ইমাদ আর পেরেরা। ইমাদ ৩৩ বলে ৩ চার আর ১ ছক্কায় ৪০, পেরেরা ৩১ বলে দুটি করে চার-ছক্কায় ৪৩ রানে অপরাজিত থাকেন। কুমিল্লার দুই পেসার হাসান আলি আর মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ নেন দুটি করে উইকেট।
অন্যদিকে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) গতকাল দিনের প্রথম ম্যাচে রংপুর রাইডার্সকে ৯ উইকেটে হারিয়ে আসরের প্রথম জয়ের দেখা পেয়েছে খুলনা টাইগার্স। আমাদ বাট ও ওয়াহাব রিয়াজের নিয়ন্ত্রি বোলিংয়ের পর তামিমের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ১০ বল বাকি থাকতেই জয়ের লক্ষ্যে পৌছে যায় খুলনা।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্বান্ত নেন খুলনার অধিনায়ক ইয়াসির আলি রাব্বি। টসে হেরে আগে ব্যাট করেতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১২৯ রান সংগ্রহ করে রংপুর। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৮ ওভার ২ বলেই জয়ের লক্ষ্যে পৌছে যায় খুলনা। এর আগে তিন ম্যাচের তিনটিতেই হেরে রংপুরের বিপক্ষে খেলতে নামে তারা।
১৩০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ওপেনার তামিম ইকবাল দূরন্ত সূচনা করেন। অপর প্রান্তে ধীরগতিতে ব্যাট করেন আরেক ওপেনর মৃুনিম শাহরিয়ার। মুনিম ২১ বলে ২১ রান করে আজমতউল্লাহর বলে সাজঘরে ফিরলেও ওয়ান ডাউনে নামা মাহমুদুল হাসান জয়ের সঙ্গে আবারো জুটি বাঁধেন তামিম। এরপর আর কোন উইকেট হারায়নি খুলনা। তামিমের অপরাজিত ৪৭ বলে ৬০ এবং জয়ের অপরাজিত ৪২ বলে ৩৮ রানের সুবাদে সহজেই জয় তুলে নেয় খুলনা। দলের সবচেয়ে বড় তারকা তামিম ইকবাল পেলেন এবারের বিপিএলে নিজের প্রথম হাফসেঞ্চুরি।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে নিচু উইকেটে রংপুর রাইডার্সকে বেশি দূর যেতে দেয়নি খুলনা। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ২০ ওভারে ১২৯ রানে গুটিয়ে দেয় তারা। নতুন বলে নাহিদুল ইসলামের দারুণ বোলিংয়ের পর দুই পাকিস্তানি পেসার ওয়াহাব রিয়াজ ও আমাদ বাটের তোপে বেশি দূর যেতে পারেনি নতুন অধিনায়ক নিয়ে খেলতে নামা দলটি। গত পরশু অনুশীলনে জড়তা ও অস্বস্তি কাজ করছিল রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানের। নেটে ব্যাট-বলে ঠিকঠাক যোগাযোগ স্থাপন করতে পারছিলেন না। সাইড স্ট্রেইনের চোটে ভুগতে থাকা এ ব্যাটসম্যানকে নেটে যেতে মানাও করেছিলেন রংপুরের কোচ সোহেল ইসলাম। কিন্তু নিজেকে বাজিয়ে দেখতে থ্রোয়ার নিয়ে নেটে গিয়ে আরো বিপদ ডেকে আনেন সোহান। চোট বাড়ায় ব্যাট ছুড়ে ফেলতেও দেখা যায় তাকে। ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হলে গতকাল খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে মাঠে নামতে পারেননি সোহান। তার পরিবর্তে রংপুরকে নেতৃত্ব দেন পাকিস্তানের অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক। নিজেদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে বিষয়টি নিশ্চিত করে রংপুর জানায়, ‘সাইড স্ট্রেইন ইনজুরিতে ক্যাপ্টেন নুরুল হাসান সোহান। দিন কয়েকের বিশ্রাম শেষে পূর্ণাঙ্গ ফিট হয়ে জয়ের লড়াইয়ে ফিরবেন ক্যাপ্টেন, প্রত্যাশা দলের ফিজিওর।’ এছাড়া রংপুরের আগের ম্যাচের নায়ক রবিউল ইসলামকে এ ম্যাচে একাদশে রাখেনি রংপুর। কম্বিনেশনের কারণে তাকে বিশ্রাম দিয়েছে টিম ম?্যানেজমেন্ট। রংপুরের হয়ে অভিষেক হয় পাকিস্তানের দুই ক্রিকেটার হারিস রউফ ও মোহাম্মদ নওয়াজের।
আগে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় বলেই ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন রনি তালুকদার। নাহিদুল ইসলামের বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হন প্রথম দুই ম্যাচে দারুণ ব্যাট করা ওপেনার। এর কিছুক্ষণ পর পাওয়ার প্লেতেই আউট হন ওয়ান ডাউনে নামা নাঈম শেখ। তিনি করেন ৯ বলে ১৩ রান। পাওয়ার প্লেতে আসে ২ উইকেটে ৩৫ রান।
আটসাট বোলিংয়ে ২ ওভারে স্রেফ ৫ রান দেন মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। রংপুরের হয়ে প্রথম সুযোগ পাওয়া পারভেজ হোসেন ইমন খোলস ভাঙতে কিছুটা সময় নেন। তবে বড় কিছু করতে পারেননি পারভেজ। দলীয় পঞ্চাশ পেরোনোর পর ওয়াহাব রিয়াজের বলে ক্যাচ আউট হয়ে ফেরেন তিনি।
৩ চার ও ১ ছয়ে ২৫ রান করতে খেলেন ২৪ বল।
নতুন অধিনায়ক শোয়েব মালিকও দেখাতে পারেননি কোন চমক। আমাদ বাটের বলে পয়েন্টে দারুণ ক্যাচ নিয়ে মালিকের বিদায় নিশ্চিত করেন মাহমুদুল হাসান জয়। তিনি করেন ১৪ বলে ৯ রান।
একপ্রান্ত ধরে রেখে দলের বড় সংগ্রহের আশা বাঁচিয়ে রাখেন শেখ মেহেদি হাসান। তার ৩৪ বলে ৩৮ রানের সুবাদে ১০০ রানের গন্ডি পেরয় রংপুর। আমাদ বাটের বলে স্কুপ করতে গিয়ে হাওয়ায় ভাসিয়ে দেন মেহেদি।
উইকেটের পেছনে সহজ ক্যাচ নেন আজম খান। শেষ দিকে সাইফ উদ্দিনের বাউন্সারে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মারেন রকিবুল হাসান। তবে শেষ ওভারে রংপুরকে চেপে ধরেন ওয়াহাব। তার দুই উইকেটের সঙ্গে রান আউটে একটি উইকেট হারিয়ে ওভার থেকে রংপুর নিতে পারে কেবল ১ রান।
খুলনার হয়ে স্রেফ ১৪ রান খরচায় ৪ উইকেট নেন ওয়াহাব। বাট ১৬ রানে ৩ উইকেট নেন। নাহিদুল ২৩ রানে নেন ২ উইকেট। পাওয়ার প্লে’তে বোলিং করে টপঅর্ডারের দুই ব্যাটসম্যানকে ফেরান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়