দুদক মামলা : আদালতে হাজিরা দিলেন আব্বাস দম্পতি

আগের সংবাদ

শিল্প খাতে বাড়ল গ্যাসের দাম > সবচেয়ে বেশি বাড়ছে ক্ষুদ্রশিল্পে, মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ বাড়বে : বিশেষজ্ঞদের অভিমত

পরের সংবাদ

ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা : প্রধানমন্ত্রী সময় দিলে এ মাসেই পাতাল রেলের কাজের উদ্বোধন

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দেব দুলাল মিত্র : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে সময় পাওয়া গেলেই দেশে প্রথম ভূগর্ভস্থ মেট্রোরেল বা পাতাল রেল প্রকল্পের দ্বার উন্মোচিত হবে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে সব কিছুই প্রধানমন্ত্রীর সময়ের ওপর নির্ভর করছে। তিনি সময় না দিতে পারলে প্রকল্পের কাজের উদ্বোধনের তারিখ পেছাতে পারে।
ডিএমটিসিএল সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার বেশ কিছু মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল-৬ এর উদ্বোধনের পর এবার কমলাপুর থেকে এয়ারপোর্টের তৃতীয় টার্মিনাল পর্যন্ত এমআরটি-১ নামের পাতাল রেল মেগা প্রকল্পের কাজ শুরুর অপেক্ষা করা হচ্ছে। দীর্ঘ ২৬ দশমিক ৬ কিলোমিটার পাতাল রেলপথের পাতাল অংশ হবে ১৬ দশমিক ৪ কিলোমিটার এবং উড়াল অংশ হবে ১০ দশমিক ২ কিলোমিটার। এছাড়া নতুন বাজার থেকে কুড়িল পর্যন্ত ৩ দশমিক ৬৫ কিলোমিটার আন্ডারগ্রাউন্ড ট্রানজিশন লাইনসহ ৩১ দশমিক ২৪ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হবে। এই পাতাল রেলের ১২টি স্টেশন থাকবে মাটির নিচে এবং ৭টি স্টেশন উড়াল সেতুর ওপরে থাকবে। ২০২৬ সালে এমআরটি লাইন-১ চালু হলে প্রতিদিন ৮ লাখ যাত্রী পরিবহন সক্ষমতা তৈরি হবে। এমআরটি লাইন-১ বা পাতাল রেলের ডিপো হবে পূর্বাচলের পিতলগঞ্জে। প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুসারে এমআরটি লাইন-১ এর নির্মাণ কাজ ২০২৬ সালের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। মেট্রোরেল-৬ এর মতো ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) পাতাল রেলের নির্মাণ করবে। সমীক্ষা, পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করাসহ বিভিন্ন বিভাগের কাজের অগ্রগতি হয়েছে। গত বছর অক্টোবরের শেষ দিকে পাতাল রেল প্রকল্পের কাজের জন্য জাপানের নিপ্পন কোয়ি কোম্পানি লিমিটেড নির্মাণ কাজের তদারকির দায়িত্ব

পেয়েছে। প্রকল্পের কাজের উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সময় চাওয়া হয়েছে।
ডিএমটিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এত বড় প্রকল্পের কাজের উদ্বোধন করবেন। এ জন্য সময় চেয়ে ডিএমটিসিএল এর পক্ষ থেকে একটি চিঠি আমরা সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে পাঠিয়েছি। তারা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। আমরা চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে কাজের উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত রয়েছি। যে দিন প্রধানমন্ত্রী আমাদের সময় দেবেন সেদিনই উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণা করা হবে। প্রকল্পে পাতাল পথ তৈরির জন্য ৪টি পয়েন্টে সুড়ঙ্গ করে বোরিং মেশিন ঢুকানো হবে।
তিনি আরো বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অতিরিক্ত বোরিং বা সুড়ঙ্গ পথ তৈরির জন্য অতিরিক্ত মেশিন রাখার নির্দেশ দেয়া হবে। আমরা ২০২৬ সালের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে চাই। কখনো কোনো মেশিন নষ্ট হলে কাজ যেন থেমে না থাকে সেদিকে বিশেষ গুরুত্ব ও নজর দেয়া হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে রাজধানীর সঙ্গে সংযুক্ত থেকে ৬টি এমআরটি লাইন দৃশ্যমান করার কাজ চলছে।
এম এ এন সিদ্দিক বলেন, সবার সহযোগিতা ছাড়া ঢাকায় মেট্টোরেল লাইন-৬ চালু করা সম্ভব হতো না। পাতাল রেলের কাজেও সবার সহযোগিতা পাব বলে আশা করছি। এমআরটি-১ প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে জাপানের বহুজাতিক কনসোর্টিয়ামের নিপ্পন কোয়াই করপোরেশন কোম্পানি জেভির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। দেশি-বিদেশি আরো ৮টি প্রতিষ্ঠান এ কনসোর্টিয়ামের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এমআরটি-১ বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ডিএমটিসিএল সূত্রে জানা গেছে, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) পাতাল রেলের কাজের জন্য ঢাকা ম্যাস ট্রান্সজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) ও নিপ্পন কোয়ি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে। ডিএমটিসিএলের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এএন সিদ্দিকী ও নিপ্পন কোয়ির পক্ষে নাও কি কুদো নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। তাদেরকে কাজ শুরুর অনুমতি দেয়া হয়েছে। গত ২৩ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সড়ক পরিবহন ও যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতিতে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি ও বাংলাদেশে নিযুক্ত জাইকা অফিসের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইতিগুচি টমোহাইডো এতে উপস্থিত ছিলেন।
ডিএমটিসিএল সূত্রে আরো জানা গেছে, জাপানের বৃহত্তর দাতা সংস্থা জাইকা এই প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে। এমআরটি লাইন-১ প্রকল্পের বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে প্রকল্প সহায়তা বাবদ জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি ৩২ লাখ টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার ১৩ হাজার ১১১ কোটি ১১ লাখ টাকা দেবে। সমীক্ষার জন্য জাইকা ১ হাজার ১২৩ কোটি টাকা দেবে। বাংলাদেশ সরকার ৩৯৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়