সংসদে অর্থমন্ত্রী : গত বছরের ১১ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯.৫৮ বিলিয়ন ডলার

আগের সংবাদ

তারল্য সংকটে বিপাকে ব্যাংক : সংকট উত্তরণে দরকার দৃশ্যমান রাজনৈতিক অঙ্গীকার, এখনই সমাধান না করলে সংকট আরো গভীর হবে

পরের সংবাদ

সাউথ ব্লকের ১২০ দেশের ভিডিও কনফারেন্স আজ : পশ্চিমাদের নতুন বার্তা দিতে চায় নয়াদিল্লি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শাহরিয়ার বিপ্লব : নতুন বছরের শুরুতেই এশিয়া, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকার উন্নয়নশীল দেশগুলোকে নিয়ে একটি মহাসম্মেলনের আয়োজন করছে নয়াদিল্লি। আজ এবং আগামীকাল ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই সম্মেলনে ১২০টিরও বেশি দেশকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারত। আমন্ত্রিতদের মধ্যে রাষ্ট্রপ্রধানদের পাশাপাশি বিভিন্ন দপ্তরের মন্ত্রীরাও আছেন। করোনা মহামারী ও এর ক্ষত, ইউক্রেন যুদ্ধের আন্তর্জাতিক প্রভাব, খাদ্য, সার এবং জ্বালানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, ঋণের বোঝার মতো বিষয়গুলো নিয়ে অধিবেশন হবে। উদ্বোধনী বক্তব্য রাখবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। উপস্থিত থাকবেন ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শ্রী বিনয় কোয়াত্রা বলেছেন, সবগুলো উন্নয়নশীল দেশকে এক মঞ্চে এনে বিভিন্ন বিষয়ে অগ্রাধিকার ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাস্তবতায় আমাদের চলার পথ ভাগাভাগি করে নিতে চাইছি আমরা। তিনি আরো জানান, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর ‘সব কা সাথ, সব কা বিকাশ, সব কা বিশ্বাস এবং সব কা প্রয়াস’ নীতির সঙ্গে এই উদ্যোগ সংযুক্ত।
‘ভয়েস অব গেøাাবাল সাউথ’ শিরোনামে এই সম্মেলনের কথা ঘোষণা করে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আরো বলেন, প্রত্যেকটি দেশের নিজস্ব উদ্দেশ্যকে চিহ্নিত করে সার্বিক ঐকমত্য গড়ে তোলাই এই সম্মেলনের লক্ষ্য। জি-২০ ভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে বাইরের দেশগুলোর সংযোগ ঘটানোরও চেষ্টা করা হবে এই সম্মেলনে। কোয়াত্রা বলেন, যে সব দেশ উন্নয়নশীল এবং পেছনে পড়ে রয়েছে, তাদের কথা সব সময় শোনা হয় না। এই সম্মেলনে একটি অধিবেশন রাখা হবে এই জি-২০ গ্রুপের বাইরের দেশগুলোর বক্তব্য শোনার জন্য।

ফলে যারা ওই গোষ্ঠীর সদস্য নয়, বিশ্ব ব্যবস্থা এবং বাণিজ্য নীতি নিয়ে তাদের মতামতও জানার সুযোগ হবে। তাদের এই কথাগুলো আমরা জি-২০ মঞ্চে পৌঁছে দেব।
এই প্রথম জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর শীর্ষ কর্মসূচিতে জায়গা করে নিতে চলেছে এশিয়া, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকার গরিব দেশগুলোর মতামত ও চাহিদার ভাষ্য। ভারতের নেতৃত্বাধীন দুদিনের ‘ভয়েস অব গেøাবাল সাউথ’ সম্মেলনের আগে এমনটাই দাবি করছে সাউথ ব্লকের সূত্র। কূটনৈতিক শিবিরের অনুমান, বিশ্বের এই বড় অংশকে সঙ্গে রেখে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বাস্তবতাকে তুলে ধরে নিজের অবস্থানে অন্যদের সমর্থনের একটা সিলমোহর লাগাতেও চাইছে মোদি সরকার।
কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, ‘গেøাবাল সাউথ’ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রগুলোর অধিকাংশই রাশিয়ার উপরে চাপানো আমেরিকা এবং ইউরোপের নিষেধাজ্ঞাকে সমর্থন করে না। তারা ইউক্রেনে শান্তি ফেরাতে ভারতের মতোই সংলাপ এবং কূটনীতির পথে চলায় বিশ্বাসী। অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত তৃতীয় বিশ্বের রাষ্ট্রগুলো যে পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে, তাতে দেশগুলোর পক্ষে বর্তমান ভূ-কৌশলগত রাজনীতিতে কোনো একটি বিশেষ মেরুর দিকে ঝুঁকে থাকা বা পক্ষ নেয়া বিলাসিতা মাত্র। রাষ্ট্রগুলোর নুন আনতে পান্তা ফুরোচ্ছে। ফলে সস্তায় জ্বালানি পেলে তা ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে হেলায় ফিরিয়ে দেয়া গেøাবাল সাউথের পক্ষে সম্ভব নয়।
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এখানেই সুযোগটাকে কাজে লাগাতে চাইছে ভারত। স¤প্রতি অস্ট্রিয়া সফরে গিয়ে ভিয়েনা থেকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছিলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বাইরেও অনেক সমস্যা রয়েছে বহু দেশের, যা ইউরোপ বা আমেরিকা কানে তোলে না। জ্বালানি, খাদ্যসারের সংকট, কোণঠাসা অর্থনীতির কথা সেদিন উল্লেখ করেছিলেন জয়শঙ্কর। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে আগাগোড়া নিরপেক্ষ কূটনীতির সাবধানী রাস্তায় থাকা নরেন্দ্র মোদি সরকার এবার চাইছে জি ২০’র মঞ্চে অনুপস্থিত বিশ্বের এই বিশাল অংশের ভয়েসকে (সাউথ) নিজেদের সঙ্গে রাখতে।
সূত্র বলছে, সেটা ভারতের নিজস্ব রাশিয়া-ইউক্রেন নীতিকে আরো পোক্ত করবে। ভারত নিজেও রাশিয়া থেকে সস্তায় অশোধিত তেল আমদানির পক্ষে। জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে আমেরিকা এবং ইউরোপ নয়াদিল্লির উপর প্রবল চাপ তৈরি করবে এটা স্পষ্ট। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, এর আগে এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোকে নিজেদের সঙ্গে রাখতে চাইছে সাউথ ব্লক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়