ঢাকা-ওয়াশিংটন : রোহিঙ্গা, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা

আগের সংবাদ

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি : শিক্ষার্থী পায়নি ২০০ প্রতিষ্ঠান

পরের সংবাদ

বিপিএলে সবার উপরে সিলেট

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) জয়যাত্রা অব্যাহত রেখেছে মাশরাফির স্ট্রাইকার্স। টানা চার ম্যাচ জিতে পয়েন্ট টেবিলে সবার উপরে রয়েছে মাশরাফি বাহিনী। গতকাল সিলেটের করা পাহাড়সম ২০১ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটাই ভালো হয়নি ঢাকা ডমিনেটরসের। ৩০ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে যখন দিশাহারা ঢাকা, তখন কিছুটা আশার আলো হয়ে আসে মিথুন-নাসির জুটি। তাদের ৭৭ রানের জুটিতে রানটাও ছিল নাগালের মধ্যেই। কিন্তু দুই ব্যাটারের দ্রুত বিদায়ের পর বড় হার এড়াতে পারেনি ঢাকা। হোম অব ক্রিকেট মিরপুরে গতকাল বিপিএলের অষ্টম ম্যাচে ঢাকাকে ৬২ রানে হারিয়েছে মাশরাফি বিন মর্তুজার সিলেট। তৌহিদ হৃদয়ের টানা তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরিতে ভর করে ৮ উইকেট হারিয়ে ২০১ রানের বড় সংগ্রহ পায় সিলেট। জবাব দিতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার খেলে সব উইকেট হারিয়ে ১৩৯ রানের বেশি করতে পারেনি ঢাকা। গতকাল ঢাকা ডমিনেটরসের বিপক্ষে ৪৬ বলে ৮৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস উপহার দিয়ে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ২০০-র ঘরে পৌঁছে দেন তৌহিদ হৃদয়। দুর্দান্ত ৮৪ রানের ইনিংস খেলায় গতকালও ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন তিনি।
গতকাল ফিল্ডিং করার সময় দুর্ভাগ্যের শিকার হন সিলেট স্ট্রাইকার্সের ব্যাটার তৌহিদ হৃদয়। ফিল্ডিংয়ের সময় হাত ফেটে গেছে তার।
ঢাকার অধিনায়ক নাসির হোসেনের স্কোয়ার কাট ধরতে গিয়ে বাঁ-হাতের তালু ফেটে রক্ত বেরিয়ে পড়ে। ফিজিও এসে তাকে ধরে ড্রেসিং রুমে নিয়ে যান।
সিলেটের পেসার রেজাউর রহমান রাজার শর্ট বলে সজোরে স্কোয়ার কাট করেছিলেন নাসির। প্রচণ্ড গতিতে যাওয়া সেই শট বুক সমান উচ্চতায় চলে যায় ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে দাঁড়ানো তৌহিদ হৃদয়ের কাছে। তিনি তা ধরে রাখতে পারেননি। মারের প্রচণ্ডতায় বল গিয়ে আঘাত করে তার হাতের তালুতে। সঙ্গে সঙ্গে বলের সিমে লেগে তালু ফেটে রক্তাক্ত হয়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে আঘাত কতটা গুরুতর? তা জানা না গেলেও প্রেসবক্স থেকে দেখে মনে হয়েছে সেলাই দিতে হতে পারে। আর সেলাই দিতে হলে তৌহিদ হৃদয়ের পক্ষে চট্টগ্রাম পর্ব খেলা সম্ভব হবে কিনা সন্দেহ।
আগের দুই ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে জিতিয়েছিলেন সিলেট স্ট্রাইকার্সকে। গতকাল ও ব্যাট হাতে দুর্বার ছিলেন তিনি। আগের দুই ম্যাচে রান তাড়া করতে গিয়ে খেলেছেন ৫৫ এবং ৫৬ রানের দুটি চমৎকার ইনিংস। এবার প্রথমে ব্যাট করতে নেমে খেললেন ৪৬ বলে ৮৪ রানের এক টর্নেডো ইনিংস।
সঙ্গে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠেছেন নাজমুল হোসেন শান্তও। ৩৯ বলে তিনি খেললেন ৫৪ রানের এক অতি কার্যকরী ইনিংস। দুজনের এই দুই ইনিংসের সুবাদে এবারের বিপিএলে প্রথম ২০০ প্লাস স্কোর গড়ে সিলেট স্ট্রাইকার্স। শুধু তাই নয়, বিপিএলে এখনো পর্যন্ত সর্বোচ্চ স্কোর গড়েছে তারা।
টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেট হারিয়ে ২০১ রান করে মাশরাফি বিন মর্তুজার সিলেট স্ট্রাইকার্স। জয়ের জন্য ২০২ রান করতে নেমে ১৩৯ রানে গুটিয়ে ঢাকা ডমিনেটরসের ইনিংস।
টানা তিন ম্যাচে ফিফটি প্লাস স্কোর করা চাট্টিখানি কথা নয়, কিন্তু তরুণ ব্যাটার তৌহিদ হৃদয় সেটা দেখিয়ে দেন এবারের বিপিএলে। তার ব্যাটে চড়ে সিলেট স্ট্রাইকার্সও উড়ছে। টানা তিন ম্যাচ জয়ের পর চতুর্থ ম্যাচেও দলকে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান সংগ্রহ করে দিয়েছেন।
টস হেরে ব্যাট করতে নামার পর শুরুতেই ওপেনার মোহাম্মদ হারিসের উইকেট হারায় সিলেট। ৬ বলে ৬ রান করে আউট হন তিনি। এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত এবং তৌহিদ হৃদয় মিলে গড়েন ৮৮ রানের জুটি। ১০৫ রানের মাথায় আউট হন শান্ত। ৩৯ বলে ৭টি বাউন্ডারি এবং ২ ছক্কায় এই রান করেন তিনি।
তৌহিদ হৃদয় ৪৬ বলে ৫টি করে বাউন্ডারি এবং ছক্কায় ৮৪ রানের ঝড়ো ইনিংসটি খেলেন। জাকির হাসান করেন ১০ রান। ১১ রান করেন থিসারা পেরেরা। মুশফিক আউট হন ৬ রান করে। ইমাদ ওয়াসিম আউট হয়ে যান কেবল ১ রান করে। আকবর আলি রানআউট হন ৬ রানে। মাশরাফি ৭ রানে অপরাজিত থাকেন।
ঢাকা ডমিনেটরসের হয়ে ৩ উইকেট নেন আল আমিন হোসেন, ২ উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ, ১টি করে উইকেট নেন আরাফাত সানি এবং আরিফুল হক। প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি- টোয়েন্টি ক্রিকেটে শততম ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়েন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার মুশফিকুর রহিম।
গতকাল ঢাকা ডমিনেটরসের বিপক্ষে সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে মাঠে নেমে বিপিএল ইতিহাসে শততম ম্যাচ খেলার মাইলফলক স্পর্শ করলেন মুশফিক।
২০১২ সালে শুরু হওয়া বিপিএলের প্রথম আসর থেকেই খেলছেন মুশফিক। গতকালের আগে বিপিএলের ৯৯ ম্যাচে অংশ নিয়ে টুর্নামেন্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৫৮২ রান করেছেন মুশি। ৮১ ম্যাচে ২৬৭৬ রান নিয়ে সবার ওপরে তামিম ইকবাল।
বিপিএলে মুশফিকের ব্যাটিং গড় ৩৭ দশমিক ৯৭। বিপিএলে কোনো সেঞ্চুরি করতে না পারলেও ১৬টি হাফ-সেঞ্চুরি আছে মুশির। তার সর্বোচ্চ রান ৯৮। উইকেটের পেছনে ৫৭টি ক্যাচ ও ১০টি স্টাম্প আছে মুশফিকের। খেলোয়াড় হিসেবে বিপিএলের শিরোপার স্বাদ পাননি মুশফিক। একবার ফাইনাল খেললেও রানার্স-আপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে।
মুশফিকের পর বিপিএলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯৬ ম্যাচ খেলেছেন ওপেনার এনামুল হক বিজয়। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৯৫ ম্যাচ খেলেছেন এবারের আসরে সিলেটের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। গত বছর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেন মুশফিক। দেশের হয়ে ১০২টি টি-টোয়েন্টিতে ১৫০০ রান আছে তার। সব মিলিয়ে ২৪৫টি টি-টোয়েন্টিতে ৫০৮১ রান করেছেন মুশফিক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়