ঢাকা-ওয়াশিংটন : রোহিঙ্গা, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা

আগের সংবাদ

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি : শিক্ষার্থী পায়নি ২০০ প্রতিষ্ঠান

পরের সংবাদ

আন্তর্জাতিক ফুটবলকে গ্যারেথ বেল ও হুগো লরিসের বিদায়

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে পরাজিত হয় হুগো লরিসের অধীনস্থ ফ্রান্স ফুটবল দল। সে ঘটনার প্রায় তিন সপ্তাহ পর তিনি গতকাল ফ্রান্সের জার্সি তুলে রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে বিদায় নিলেও ক্লাব ফুটবলে খেলা চালিয়ে যাবেন এ গোলরক্ষক। একই দিনে মাত্র ৩৩ বছর বয়সে ফুটবল ক্যারিয়ারের ইতি টানার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন গ্যারেথ বেল। নিজের ভেরিফাইড টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে তিনি এ ঘোষণা দিয়েছেন।
প্রথম অধিনায়ক হিসেবে পরপর দুটি বিশ্বকাপ জেতার সুযোগ হাতছানি দিচ্ছিল ফরাসি অধিনায়ক হুগো লরিসকে। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে ফ্রান্স খেলেছেও সেভাবেই। অন্যদিকে আর্জেন্টাইনরা খেলেছে মেসির শেষ বিশ্বকাপে তার হাতে কাপ দেখার লক্ষ্যে।
শেষ পর্যন্ত হার মানতে হয়েছিল এমবাপ্পেদের। এর তিন সপ্তাহ পর ফরাসি গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে লরিস আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে বিদায় নেয়ার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমি সবটা দিয়ে ফেলেছি। তাই আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
সামনেই শুরু হতে যাচ্ছে ২০২৪ ইউরোর বাছাই পর্ব। একে ঘিরেই চলছে ফ্রান্সের পরিকল্পনা। দেশমের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন হওয়ায় তার সঙ্গে নতুন মিশনে নামতে পারতেন তিনি। তবে তার মতে বিদায় বলার এটাই ঠিক সময়। তিনি জানিয়েছেন, ‘ইউরোর বাছাইপর্ব শুরু হবে আড়াই মাস পরই, তাই এখনই অবসরে যাওয়ার সেরা সময়। আর একটা সময় তো আসেই, যখন বিদায় বলতে হয়। আর আমি সব সময়ই বলি, ফ্রান্স ফুটবল দল নির্দিষ্ট কোনো ফুটবলারের ওপর নির্ভরশীল নয়।’
এই মুহূর্তে নিজের পরিবারকে বেশি সময় দেয়ার লক্ষ্য তার। বিদায়ের পর নিজের স্থানে কে আসতে পারে তা নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘১৪টির বেশি মৌসুম ফ্রান্সের হয়ে খেলেছি, এটা অনেক বড় বিষয়। আমি মানসিকভাবে কিছুটা ক্লান্তও। এসি মিলানের গোলরক্ষক মাইক মাইগনান খেলার জন্য প্রস্তুত। আমার পরিবারকে আরো বেশি সময় দেয়া প্রয়োজন। তবে আশা করছি, সর্বোচ্চ স্তরের ক্লাব ফুটবলে আরো কিছু বছর খেলতে পারব।’ ২০০৮ সালে উরুগুয়ের বিপক্ষে তার অভিষেক হয়েছিল। ১৪৫টি ম্যাচে খেলেছেন ফ্রান্সের হয়ে. যার শেষটি হলো কাতার বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ। তিনি ১২১টি ম্যাচে ফ্রান্সের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। অধিনায়ক হিসেবে তার সেরা অর্জন ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ ছোঁয়া।
দিদিয়ের দেশম লরিসের এ সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘নিজের সেরা অবস্থানে থাকার সময়েই অবসর নিলেন লরিস। অভিজ্ঞ এই গোলরক্ষকের সিদ্ধান্তকে সবার সম্মান করা উচিত।’
অন্যদিকে হঠাৎই ১৭ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছেন ওয়েলসের ফরওয়ার্ড গ্যারেথ বেল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে তিনি আন্তর্জাতিক ও ক্লাব ফুটবল থেকে বিদায় নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। নিজের ভেরিফাইড অ্যাকাউন্টে তিনি লিখেছেন, ‘অনেক ভেবেচিন্তে আমি ক্লাব ও আন্তর্জাতিক ফুটবল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যে খেলাটাকে আমি ভালোবাসি সেটা খেলতে পেরে নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হয়। এটা সত্যি সত্যিই জীবনের সেরা কিছু মুহূর্ত উপহার দিয়েছে আমাকে। সামনে যাই থাক না কেন, সেই ১৭টি মৌসুমকে ফিরিয়ে আনা অসম্ভব।’
বেল ১৯৫৮ সালের পর প্রথমবারের মতো ওয়েলসের বিশ্বকাপের মঞ্চে আসায় ভূমিকা রেখেছিলেন। কিন্তু জাতীয় দলের হয়ে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলা এবং সর্বোচ্চ গোলদাতা বিশ্বকাপে দলকে টেনে নিতে পারেননি। কাতার বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই ছিটকে গিয়েছিল তার দল। দেশটির হয়ে সবচেয়ে বেশি ১১১ ম্যাচ খেলার কীর্তি রয়েছে তার।
দেশের হয়ে বেল কোনো শিরোপা জিততে পারেননি। তবে ক্লাব ফুটবলে তিনি সফলতার ছোঁয়া পেয়েছেন ভালোভাবেই। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে তিনি পাঁচটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জিতেছেন। এছাড়া তিনি সাউদাম্পটন, টটেনহ্যাম হটস্পার্স এবং সর্বশেষ লস এঞ্জেলসের হয়ে খেলেছেন। একসময় তিনি বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবলার ছিলেন। অনেকের মতে তিনি ওয়েলসের সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়।
তার বক্তব্যেই বোঝা যায় ওয়েলসের হয়ে খেলা থেকে বিদায় নেয়াটা তার জন্য কতটা কঠিন ছিল। তিনি বলেছেন, ‘ওয়েলস আমার পরিবার।
আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্ত আমার ক্যারিয়ারে এ পর্যন্ত নেয়া কঠিনতম সিদ্ধান্ত। আমি কীভাবে ব্যাখ্যা করব, এই দেশের এবং জাতীয় দলের অংশ হওয়াটা আমার কাছে কেমন? আমার জীবনের ওপর এর প্রভাবই বা কেমন, সেটা কীভাবে লিখব? ওয়েলসের জার্সি পরার প্রতিটি মুহূর্ত কেমন অনুভব করেছি, সেটা কীভাবে প্রকাশ করব?’
নিজের এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন নিজেই। তিনি লিখেছেন, ‘আমার উত্তর হচ্ছে, এগুলো সম্ভবত আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। কিন্তু ওয়েলস ফুটবলের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিটি মানুষ জাদুটা অনুভব করেন, শক্তিশালী এবং অনন্য উপায়ে প্রভাব রাখেন, এ কারণে আমি জানি, আমি যেটা অনুভব করছি, সেটা আপনারাও করছেন…এবং সেটা মুখে না বললেও।’
এত কম বয়সে শুধু জাতীয় দল ছাড়তে পারতেন তিনি। অনেকেই এ বয়সে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে বিদায় নিয়ে ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত থাকেন। তবে বেল সে ধরনের মানুষ নন। বিদায়বেলায় কোনো আক্ষেপও নেই তার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়