কাগজ প্রতিবেদক : যুক্তরাষ্ট্রের কেমব্রিজে গত বুধবার দুপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস আমহার্স্টের শিক্ষার্থী সৈয়দ আরিফ ফয়সাল। নিজেদের কমিউনিটির সন্তান ফয়সালের এই মৃত্যুকে ‘হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে বর্ণনা করে সেখানে বিক্ষোভ করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশে তার পরিবারও বিচারের দাবি জানিয়েছে। তরুণ ফয়সালের মৃত্যুর বিচার দাবিতে গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে ‘সচেতন নাগরিক সমাজ’ ব্যানারে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিচার দাবি করা হয়।
মানববন্ধন শেষ হওয়ার কিছু সময় পর মন্ত্রণালয়ে আসেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এ ধরনের মানববন্ধন ‘উৎসাহব্যঞ্জক’ না। আমি এর কিছু জানি না। তবে, এ ধরনের বিষয় উৎসাহব্যঞ্জক না। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের ঘটনার তদন্ত ও বিচার হয়ে থাকে। তাদের ওখানে আইনের শাসন আছে। আমরা বিশ্বাস করি তদন্তের পর এ ঘটনারও বিচার হবে। আর সাংবাদিকদের প্রশ্নে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আরিফের মৃত্যুর বিষয়টি মার্কিন প্রশাসনের কাছে ইতোমধ্যে তুলে ধরেছেন। যুক্তরাষ্ট্র সরকার আমাদের আশ্বস্ত করেছে, ন্যায়বিচার হবে এবং যে পুলিশ কর্মকর্তার গুলিতে বাংলাদেশি ছাত্র নিহত হয়েছেন, তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে বা ডিউটি থেকে সরানো হয়েছে।
এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে মানববন্ধনে শ খানেক মানুষ অংশ নেন। ‘যুক্তরাষ্ট্রে আজ মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত’, ‘জাস্টিস ফর ফয়সাল’, ‘ইউএসএতে বাংলাদেশি নিহত, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চুপ কেন?’, ‘স্টপ কন্টিনিউয়াস হিউম্যান রাইটস ভায়োলেশন’ প্রভৃতি প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা। মানববন্ধনে একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত বলেন, যেসব দেশে বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দূতাবাসগুলোকে আমরা সেসব জায়গায় প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা কোথাও মানবাধিকার লঙ্ঘন চাই না। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে কথা বলে। আমরা বলব নিজ দেশে কী ঘটছে, তার ওপর নজর দিন। ওয়াশিংটন পোস্টের খবর বলছে, সেখানে এক বছরে পুলিশ এক হাজার লোককে হত্যা করেছে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে বলব, এই যে এক হাজার লোককে হত্যা করার ঘটনা, তাতে চোখ বন্ধ করে থাকবেন না। আপনারা নিজের নাগরিকদের মানবাধিকারের বিষয়ে সোচ্চার হোন।
অন্যদের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিক, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদউদ্দিন আহমেদ রতন মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন।