কুমিল্লাকে হারের স্বাদ দিল রংপুর

আগের সংবাদ

বাংলাদেশ-ব্রাজিল বাণিজ্য বাড়ানোয় জোর প্রধানমন্ত্রীর

পরের সংবাদ

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের রোড মার্চ পণ্ড

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঢাবি প্রতিনিধি : ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইতশেহারে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের দেয়া প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়নের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় অভিমুখে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের রোড মার্চ পুলিশি বাঁধায় পণ্ড হয়ে গেছে। গতকাল শনিবার সাত দফা দাবি নিয়ে ঢাকার রমনা কালী মন্দির থেকে যাত্রা শুরু করে টিএসসি হয়ে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে পৌঁছালে সেখানে অবস্থানরত পুলিশ রোড মার্চকে সামনে এগুতে দেয়নি। এসময় ‘ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার’, ‘পদ্মা-মেঘনা-যমুনা, তোমার আমার ঠিকানা’, ‘আজকের সমাবেশ সফল হোক সফল হোক, ঐক্য পরিষদের সমাবেশ সফল হোক সফল হোক’, ‘সংখ্যালঘু কমিশন গঠন কর, করতে হবে, আমাদের দাবি, আমাদের দাবি, মানতে হবে, মানতে হবে!’ -বলে স্লোগান দেন নেতাকর্মীরা।
এরপর পুলিশের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ আলোচনা শেষে পরিষদের অন্যতম সভাপতি নিম চন্দ্র ভৌমিকের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল স্মারকলিপি প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটের দিকে প্রতিনিধি দলটি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে অভিমুখে রওনা দেন। প্রতিনিধি দলের অন্যরা হলেন- রানা দাশ গুপ্ত, কাজল দেবনাথ, উষাতন তালুকদার, জয়ন্ত কুমার দেব, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক চন্দ্র নাথ পোদ্দার।
এর আগে বেলা ১২টায় সংগঠনের অন্যতম সভাপতি উষাতন তালুকদারের সভাপতিত্বে নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের দাবিতে রমনা কালিমন্দিরের সামনে সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে তাদের পেশকৃত সাত দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবি জানান। দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি মশাল মিছিল কর্মসূচির ঘোষণা দেন নেতারা। এরপরও দাবি আদায় না হলে আমরণ অনশন কর্মসূচিরও ঘোষণা দেয়ার হুমকি দেন নেতারা।
সমাবেশে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আমরা গনিমতের মাল হিসেবে থাকতে চাই না। রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের বিভিন্নভাবে ব্যবহার করে, সেই ব্যবহার আর আমরা করতে দেব না। গণতন্ত্রের স্বার্থে আপনারা আমাদের থেকে কী নেবেন আর কী দেবেন এই সমঝোতা আজকে প্রয়োজন। এই সমাবেশে আমরা যে দাবি নিয়ে উপস্থিত হয়েছি, একই দাবি করেছিলাম ২০১৮ সালে। সরকারি দল এই দাবি মেনে নিয়ে তাদের ইশতেহারে অঙ্গিকার করেছিলেন, নির্বাচনে জয়যুক্ত হলে তারা তা বাস্তবায়ন করবেন। আমরাও আশা করেছিলাম, কিন্তু আর মাত্র এক বছর বাকি। এখনো তার কিছুই হয়নি। বাংলাদেশের বিদ্যমান রাজনীতির প্রতি আমরা আর আস্থা রাখতে পারছি না।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, আপনি আমাদের শেষ ভরসাস্থল। আপনার ওপর আমরা আশা ও আস্থা রাখতে চাই। আমরা চাই না এতে বিন্দুমাত্র ঘাটতি হোক। আমাদের দাবিগুলো যদি বিবেচিত না হয়, আমাদের দিকে যদি ফিরে তাকাতে কুণ্ঠাবোধ করেন, তাহলে আমরাও আপনাদের প্রতি কতটুকু ফিরে তাকাবো সেই বিষয়েও চিন্তাভাবনা করতে হবে।
এরপর রোডম্যাপের আনুষ্ঠানিক ঘোষণাপত্র পাঠ করেন রানা দাশগুপ্ত। পরবর্তী কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, সরকারি দলের নির্বাচনি প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়নের দাবিতে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশের বিভাগীয় শহর, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে মশাল মিছিলের কর্মসূচির ঘোষণা করছি। আজকের রোডম্যাপ, স্মারকলিপি প্রদান ও পরবর্তী সময়ে মশাল মিছিলের কর্মসূচি দিয়েও যদি দাবি বাস্তবায়ন না হয় তবে আমরণ অনশন কর্মসূচি দিতে আমরা প্রতিশ্রæতিবদ্ধ।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের অন্যতম সভাপতি উষাতন তালুকদার বলেন, এই সমাবেশে থেকে সংখ্যালঘুদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে চাই, আজকে এই কনকনে শীতের মধ্যে এসকল মানুষ আনন্দ করতে

আসেনি। তারা এসেছে তাদের অধিকার আদায়ে, ন্যায্য দাবির লড়াইয়ে। প্রধানমন্ত্রী আমরা জানি আপনার সীমাবদ্ধতা রয়েছে, অনেক মহল রয়েছে। কিন্তু আপনি কথা দিলে কথা রাখেন। আমরা আশা করছি আপনি অবিলম্বে আমাদের দাবি মেনে নেবেন।
উল্লেখ্য, তাদের সাত দফা দাবি হলো- জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, দেবোত্তর সম্পত্তি সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন, সমতলে অধিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পণ আইন যথাযথ বাস্তবায়ন, পার্বত্য শান্তি চুক্তি ও পার্বত্য ভূমি কমিশনের যথাযথ কার্যকরীকরণ, বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়