৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে সংসদ অধিবেশন

আগের সংবাদ

চ্যালেঞ্জ অনেক, প্রত্যয়ী আ.লীগ : অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা > সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরা ও অপপ্রচারের জবাব দেয়া

পরের সংবাদ

ছাত্রলীগকে ওবায়দুল কাদের : অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে যাত্রা করতে হবে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রাফিউজ্জামান লাবীব, ঢাবি : বর্তমান ছাত্রলীগের নেতৃত্বের পতাকা যাদের হাতে তাদের অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নবতর যাত্রার সূচনা করতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, বর্তমানে আমরা প্রতিকূল স্রোতে সাঁতার কেটে যাচ্ছি। সা¤প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ ও এদের পৃষ্ঠপোষক বিএনপির বিরুদ্ধে এ যুদ্ধে আমাদের জয়ী হতে হবে। এখন আমাদের অনেক পথ চলার বাকি রয়েছে। ছাত্রলীগকে আবার নতুন করে শপথ নিতে হবে।
ছাত্রলীগের ৭৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার বিকাল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আনন্দ শোভাযাত্রার উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। বেলুন ও কবুতর উড়িয়ে তিনি শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন। এর আগে বিকাল ৩টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় ও দলীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে ছাত্রলীগের শোভাযাত্রা কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, লিয়াকত সিকদার, এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ, মো. সাইফুর রহমান সোহাগ ও সদ্য সাবেক সভাপতি আল-নহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না, অজয় কর খোকন, নজরুল ইসলাম বাবু, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, সিদ্দিকী নাজমুল আলম, এস এম জাকির হোসাইন, মো. গোলাম রাব্বানী ও সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা এবং বর্তমান সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধুর আগমন উপলক্ষে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উচ্ছ¡াসকে স্মরণ করে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু ৫৪ বছর ছয় মাস বেঁচেছিলেন। এই অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি আমাদের একটি দেশ দিয়ে গেছেন। এই জনপদে দুইজন মানুষ কোনোদিন মরবে না। একজন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। অপরজন মুক্তির কাণ্ডারি শেখ হাসিনা। যিনি বাঙালি জাতিকে মুক্তি দিয়েছেন এবং বীরদর্পে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে গেছেন।
দ্রুত ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের কমিটিতে প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারির পদ দেয়া হয়েছে। অনেক কর্মী আশা নিয়ে বসে আছে। বাকি কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে যাতে বেশি সময় না নেয়া হয়। আমাদের আর দেরি করার সুযোগ নেই। আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। রাজনীতিতে কমিটমেন্ট থাকতে হবে কমিটমেন্ট থাকলে ফলাফল একদিন আসবেই। মূল্যায়ন একদিন হবে।
ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, বাংলাদেশের তরুণ ছাত্রসমাজ ইতোমধ্যেই স্মার্ট বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার অগ্রযাত্রার পক্ষে রায় দিয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেন ‘স্মার্ট ক্যাম্পাসে’ পরিণত হয় সে লক্ষ্যে আমরা ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শপথ নিয়েছি। দেশের অর্ধকোটি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে নিয়ে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত বিজয় অর্জন পর্যন্ত লেগে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, যে চোখ বঙ্গবন্ধু তনয়ার স্বপ্ন ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করবে ছাত্রলীগ সে চোখকে উপড়ে ফেলবে।
এদিকে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য চলাকালীন ৪টা ১০ মিনিটে ভেঙে পড়ে পুরো মঞ্চ। পড়ে গিয়ে আহত হন যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীসহ বেশ কয়েকজন। আহত নেতাকর্মীদের দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয়। অতিরিক্ত মানুষ মঞ্চে উঠার কারণেই মঞ্চটি ভেঙে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সেখানে থাকা অনেক নেতাকর্মী।
মঞ্চ ভেঙে পড়ার কিছুক্ষণ পর আবারো বক্তব্য শুরু করেন ওবায়দুল কাদের। এ সময় তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রতিবাদ করেছিলাম এই ক্যাম্পাসে, মধুর ক্যান্টিনের সামনে। সেদিনও আমরা হামলায় আহত হয়েছিলাম, রক্তাক্ত হয়েছিল অনেকে, গুরুতর হয়েছে অনেকে, অনেককে হাসপাতালে যেতে হয়েছে। আজ স্টেজ ভেঙে পড়েছে, এটা স্বাভাবিক একটা ব্যাপার।
তিনি বলেন, আমাদের এত নেতা দরকার নেই। আমাদের দরকার কর্মী। স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট কর্মী দরকার। যে কোনো অনুষ্ঠানে গেলে সামনের লোকের চেয়ে মঞ্চে লোক বেশি। এত নেতা কেন? নেতা উৎপাদনের এত বড় কারখানা আমাদের দরকার নেই। ছাত্রলীগ হোক কর্মী উৎপাদনের কারখানা।
এর পরে শোভাযাত্রা শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় হয়ে মৎস্য ভবন দিয়ে প্রেস ক্লাব, পুরান পল্টন মোড়, নুর হোসেন চত্বর (জিরো পয়েন্ট), ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। এই শোভাযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল শাখা, ঢাবির অধিভুক্ত কলেজ, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়