রাজধানীর বাজারদর : সবজিতে স্বস্তি মাছ-ডিমের দাম অপরিবর্তিত

আগের সংবাদ

বই সংকটে উৎসবে ছন্দপতন : শিক্ষার্থীদের হাতে দেয়া হয় একটি-দুটি অথবা গতবছরের বই > ফেব্রুয়ারির আগে সব শিক্ষার্থী বই পাবে না

পরের সংবাদ

দেশের ইতিহাসে সেরা ক্রীড়াবিদ সাকিব

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রীড়াবিদ নির্বাচিত হয়েছেন টাইগারদের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস এসোসিয়েশন (বিএসপিএ) ইতিহাসের সেরা ক্রীড়াবিদ হিসেবে সাকিবকেই বাছাই করে। বাংলাদেশের শীর্ষ ১০ ক্রীড়াবিদ নির্বাচিত করেছে দেশের ক্রীড়া সাংবাদিক ও লেখকদের এই সংগঠন।
রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বিএসপিএর ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সাবেক ফুটবলার ও বর্তমানে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন ও দাবাড়– গ্র্যান্ড মাস্টার নিয়াজ মোর্শেদকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রীড়াবিদ নির্বাচিত হন সাকিব আল হাসান। তাকে বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা ক্রীড়াবিদের সম্মাননা তুলে দেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা কিংস ক্লাবের সভাপতি ইমরুল হাসান ও এআইপিএস এশিয়ার সভাপতি হি-দং-জং। পুরস্কৃত করা হয়েছে ১০ জন সাংবাদিককেও।
সেরা দশ ক্রীড়াবিদের তালিকায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বাদে বাকিরা হলেন- প্রয়াত ফুটবলার মোনেম মুন্না, বক্সার মোশারফ হোসেন, ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মুর্তজা, শুটার আসিফ খান, স্প্রিন্টার শাহ আলম, সাঁতারু মোশারফ হোসেন খান ও গলফার সিদ্দিকুর রহমান।
সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১০ ক্রীড়া সাংবাদিক ও লেখককে হীরকজয়ন্তী সম্মাননা প্রদান করা হয়। তারা হলেন আব্দুল হামিদ, তৌফিক আজিজ খান, বদি-উজ-জামান, মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, আব্দুল তৌহিদ, আতাউল হক মল্লিক, মতিউর রহমান চৌধুরী, দিলু খন্দকার, শহিদুল আজম ও মোস্তফা মামুন। একই সঙ্গে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয় মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রাক্কালে ব্যাটে জয়-বাংলা স্লোগান লিখে মাঠে নামার অসীম সাহসিকতা দেখানো বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক এ এস এম রকিবুল হাসানকে।
দীর্ঘ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে সাকিবের অর্জনের তালিকা বেশ লম্বা। ভালোয় মন্দে মিলিয়ে ২০২২ সাল কেটেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যেমন বাংলাদেশ নিজেদের সেরা অর্জন করেছে দ্বিতীয় রাউন্ডে প্রথমবারের মতো দুটো ম্যাচ জিতে, তেমনি এ বছর শ্রীলঙ্কা-ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে সিরিজ হার, কিংবা এশিয়া কাপের প্রথম রাউন্ডে বিদায়ের বিষাদেও ডুবেছে দল। বিএসপিএর অনুষ্ঠান শেষে সাকিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা আমার জন্য অনেক গর্বের বিষয়। ব্যক্তিগতভাবে আমার সেরা অর্জন। আমি আগেও বলছি, এখানে যে ১০ জন আছেন, সবাই তাদের জায়গায় সেরা। সবাই যার যার খেলায় অবদান রেখেছেন। একজনকে তো সেরা হিসেবে নির্বাচিত করতে হতো। সেটা শেষ পর্যন্ত আমি হয়েছি। সবাইকে ধন্যবাদ, যারা আমাকে নির্বাচিত করেছেন। আশা করি, ভবিষ্যতে যত দিন খেলায় থাকব, এই পুরস্কারের প্রতিদান দিতে পারব।’
খেলার মাধ্যমে দেশকে আরো সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যের কথাও জানিয়েছেন সাকিব। তার কথা, ‘আমাদের সবারই দায়িত্ব আছে যার যার জায়গা থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। যেহেতু আমরা খেলার মানুষ, আমরা খেলার মাধ্যমে এগিয়ে নিতে পারি। সেটাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত। এই পুরস্কার আমাকে আরো বেশি দায়িত্বশীল করবে, অনুপ্রাণিত করবে। এমন বিষয় যে কাউকেই অনেক বেশি অনুপ্রাণিত করে। সেক্ষেত্রে এমন একটা পুরস্কার আমার জন্য অনেক বেশি অনুপ্রেরণাদায়ক ও দায়িত্বের। আমি চেষ্টা করব সামনেও ভালো করে যাওয়ার।’
২০২৩ সালে বাংলাদেশ আরো ভালো করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। এই বছর দুটো বড় ইভেন্ট আছে বাংলাদেশের সামনে। এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ। দুটোই ওয়ানডে ফরম্যাট, যাতে আবার বাংলাদেশ বেশ কয়েক বছর ধরেই খেলছে বেশ দাপটের সঙ্গে। তবে সাকিবের অভিমত, শুধু ওয়ানডেতেই নয়, বাকি দুই ফরম্যাটেও সেরা বছরটা অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের জন্য। অনুষ্ঠান শেষে তিনি আরো বলেন, ‘আমি শেষ সংবাদ সম্মেলনে (ভারতের বিপক্ষে সিরিজ শেষে) যেটা বলেছি- ২০২৩ সালটা আমি মনে করি আমাদের জন্য, আমাদের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা বছর হবে। আমি বিশ্বাস করি, মনেপ্রাণেই বিশ্বাস করি এমনটা হবে। আর এটা শুধু একটা ফরম্যাটে না, তিনটা ফরম্যাটেই।’
বাংলাদেশের ক্রিকেটের রেকর্ডের বরপুত্রই বলা যায় সাকিবকে। টেস্ট, ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টি সব ফরম্যাটেই ব্যাটিং বা বোলিংয়ে কিছু না কিছু রেকর্ড আছে তার। তবে অলরাউন্ডার হিসেবে যেসব রেকর্ড তিনি গড়েছেন, সেগুলো গুনেই শেষ করা মুশকিল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শুরুর ম্যাচেই অনন্য এক এলিট ক্লাবে ঢুকে পড়েন তিনি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচের তৃতীয় ওভারে দুই উইকেট নেয়ার মাধ্যমেই সাকিব স্পর্শ করেন ক্রিকেটের তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ৬০০ উইকেটের মাইলফলক। আর তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ১২ হাজারের বেশি রান ছিল আগেই। তাতে ক্রিকেট বিশ্বে সব ফরম্যাট মিলিয়ে ১২ হাজারের বেশি রান আর ৬শ উইকেটধারী একমাত্র অলরাউন্ডারে পরিণত হন বাংলাদেশের ‘গোল্ডেন বয়’ সাকিব। অলরাউন্ডার হিসেবে অনন্য রেকর্ডের পাশাপাশি টি-টোয়েন্টির বোলার হিসেবেও রেকর্ডের খাতা ওলটপালট করে দিয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারিও এই অলরাউন্ডার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়