রাজধানীর বাজারদর : সবজিতে স্বস্তি মাছ-ডিমের দাম অপরিবর্তিত

আগের সংবাদ

বই সংকটে উৎসবে ছন্দপতন : শিক্ষার্থীদের হাতে দেয়া হয় একটি-দুটি অথবা গতবছরের বই > ফেব্রুয়ারির আগে সব শিক্ষার্থী বই পাবে না

পরের সংবাদ

জাতিসংঘের প্রস্তাবনা : ফিলিস্তিনের পক্ষে ভোট দিয়েছে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : মধ্যপ্রাচ্যের ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েল পাঁচ দশক ধরে অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে ফিলিস্তিনের বেশ কয়েকটি অঞ্চল। এই অবৈধ দখলদারিত্বের কারণে ইসরায়েল ‘কী ধরনের বিচারের মুখে পড়বে’ সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের (আইজিসে) মতামত জানতে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় জাতিসংঘে। এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে বাংলাদেশ। প্রস্তাবের পক্ষে বাংলাদেশসহ ভোট দিয়েছে মোট ৮৭টি দেশ। বিপক্ষে ভোট দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলসহ ২৬টি দেশ। ভোটদানে বিরত ছিল ৫৩টি দেশ। ৮৭টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ায় এটি পাস হয়েছে।
গত শুক্রবার জাতিসংঘে এ প্রস্তাব পাস হওয়াকে নিজেদের বিজয় হিসেবে উল্লেখ করেছে ফিলিস্তিন। তারা বলেছে, এর মাধ্যমে ইসরায়েলের অপরাধ উন্মোচিত হবে। তবে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যুতে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত যে মতামত দেবে— গুরুত্বের বিচারে তা যথেষ্ট হলেও, সেই মতামত বা পরামর্শ বাস্তবায়নের ক্ষমতা আইসিজের নেই।
বাংলাদেশ ছাড়াও ফিলিস্তিনের পক্ষে যেসব দেশ ভোট দিয়েছে : আলজেরিয়া, অ্যাঙ্গোলা, আর্জেন্টিনা, আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, বাহামাস, বাহরাইন, বার্বাডোস, বেলজিয়াম, বেলিজ, বলিভিয়া, বসতওয়ানা, ব্রুনাই দারুসালাম, কম্বোডিয়া, চিলি, চীন, কলম্বিয়া, কিউবা, উত্তর কোরিয়া, জিবোতি, মিসর, এল সালভাদর, গ্যাবন, গ্রেনাডা, গিনি, গিনি-বিসাউ, গায়ানা, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইরাক, আয়ারল্যান্ড, জ্যামাইকা, জর্ডান, কাজাখস্তান, কুয়েত, কিরগিজস্তান, লাউস, লেবানন, লেসোতো, লিবিয়া, লুক্সেমবার্গ, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মালি, মাল্টা, মরিশানিয়া, মরিশাস, মেক্সিকো, মঙ্গোলিয়া, মরক্কো, মোজাম্বিক, নামিবিয়া, নিকারুগুয়া, নাইজেরিয়া, ওমান, পাকিস্তান, প্যারাগুয়ে, পেরু, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, কাতার, রাশিয়া, সেন্ট কিটস-নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট ভিনসেন্ট, সৌদি আরব, সেনেগাল, সিয়েরা লিয়ন, সিঙ্গাপুর, স্লোভেনিয়া, সোমালিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, সুদান, সিরিয়া, তাজিকিস্তান, ত্রিনিদাদ এন্ড টোবাগো, তিউনিসিয়া, তুর্কি, তুর্কমেনিস্তান, উগান্ডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভিয়েতনাম, ইয়েমেন, জাম্বিয়া এবং জিম্বাবুয়ে।
যেসব দেশ বিপক্ষে ভোট দিয়েছে : যুক্তরাষ্ট্র, আলবেনিয়া, অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, কানাডা, কোস্টারিকা, চেক রিপাবলিক, এস্তোনিয়া, জার্মানি, হাঙ্গেরি, গুয়েতেমালা, ইসরায়েল, ইতালি, কেনিয়া, লাইবেরিয়া, লিথুয়ানিয়া, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ, মাইক্রোওশেনিয়া, নাউরু, পালাউ, পাপুয়া নিউ গিনি, রোমানিয়া, যুক্তরাজ্য। যেসব দেশ ভোটদানে বিরত ছিল : অ্যানডোরা, বেলারুশ, বসনিয়া, বুলগেরিয়া, বুরুন্ডি, ক্যামেরুন, আইভরি কোস্ট, সাইপ্রাস, ডেনমার্ক, ডমিনিকান রিপাবলিক, ইকুয়েডর, ইরিত্রি, ইথিওপিয়া, ফিজি, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জর্জিয়া, ঘানা, গ্রিস, হাইতি, হন্ডুরাস, আইসল্যান্ড, ভারত, জাপান, কিরিবাতি, লাটভিয়া, লিশচেনস্তেন, মালাই, মোনাকো, মন্তেনেগ্রো, মিয়ানমার, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, পানামা, ফিলিপাইন, দক্ষিণ কোরিয়া, মলদোভা, রুয়ান্ডা, সামোয়া, সান মারিনো, সার্বিয়া, স্লোভাকিয়া, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, দক্ষিণ সুদান, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ডস, থাইল্যান্ড, তানজানিয়া, উরুগুয়ে এবং ভানুয়াতু।
জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মনসুর সাধারণ পরিষদের এই ভোটগ্রহণকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘এমন এক সময় এই প্রস্তাব পাস হয়েছে যখন একটি চরম ডানপন্থি সরকার ইসরায়েলের ক্ষমতায় আসীন হতে যাচ্ছে, যারা নিজেদের দখল কার্যক্রম বাড়াতে বদ্ধ পরিকর।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আজ এই ভোটের ফলাফল যা ই হোক- আপনি যদি আন্তর্জাতিক আইন ও শান্তিতে বিশ্বাসী হন, তাহলে আপনি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের পরামর্শকে সমর্থন করবেন।’
ভোটের আগে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান এক বিবৃতিতে বলেন, ‘নিজভূমিতে ইহুদিরা দখলদার কিনা- সেই সিদ্ধান্ত কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা নিতে পারে না। আদর্শগতভাবে দেউলিয়া ও রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট জাতিসংঘের এই প্রস্তাব পুরোপুরি ভিত্তিহীন এবং অবৈধ।’
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্ব›দ্ব মেটাতে আন্তর্জাতিক আদালতের পরামর্শ কামনা করে যে প্রস্তাবটি সাধারণ পরিষদে পাস হয়েছে, সেটির কাজ শুরু হয়েছিল প্রায় ১ মাস আগে। ইসরায়েলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইয়াইর লাপিদ সেসময় বৈশ্বিক নেতাদের এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, ‘এর মাধ্যমে চরমপন্থিরা উৎসাহিত হবে।’
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে পশ্চিম তীর, গাজা ও পূর্ব জেরুজালম দখল করে ইসরায়েল। ২০০৫ সালে গাজা ভূখণ্ড থেকে নিজের বাহিনী সরিয়ে নিলেও মিসরের সঙ্গে জোট বেঁধে এই ভূখণ্ডের সীমান্ত এখনো নিয়ন্ত্রণ করছে ইসরায়েল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়