শান্তিগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি : শান্তিগঞ্জ উপজেলার বাগেরকোণা-সলফ সড়কের ৪০০ মিটার পাকা রাস্তা দুই বছর আগে মহাসিং নদীর ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে উপজেলার বাগেরকোনা, মৌগাঁও, লালপুর, সলফ, ধরমপুর, বাবনগাঁও, লাউগাং, নগদীপুর, কাউয়াজুরিসহ ৯টি গ্রামের মানুষ ও যান চলাচল বন্ধ হওয়ায় চরম বিপাকে রয়েছেন। এতে সাধারণ মানুষ ৬ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে গন্তব্য যাচ্ছে।
গত বুধবার দুপুরে সরজমিনে দেখা যায়, বাগেরকোনা গ্রামের সিজিল মিয়া, খালিক মিয়া, সাদিক মিয়া, শাহিন মিয়া, সিদ্দিক মিয়ার বাড়ির উত্তর পাশের মহাসিং নদীর ভাঙনে দুই বছর আগে রাস্তা ও বসতভিটা বিলীন হয়ে গেছে। ওই গ্রামের আব্দুস শহিদ ও শফিক মিয়ার বাড়ির সামনের সড়কটি নদী ভাঙনে বিলীন হয়েছে। সড়কের ৩টি অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ থাকায় ৬ কিলোমিটার সড়ক পায়ে হেঁটে চলাচল করছে। পাশাপাশি নৌকাযোগে ছয়হারা পয়েন্ট হতে বীরগাঁও, সলফসহ আশপাশের এলাকায় লোকজনদের চলাচল করতে হচ্ছে। বাগেরকোনা গ্রামের ভাঙন এলাকার খালিক মিয়া বলেন, মহাসিং নদীর ভাঙন অব্যাহত থাকলে আমাদের ঘরবাড়িও নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। আমরা সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।
ভাঙন এলাকার আব্দুস শহিদ ও শফিক মিয়া জানান, নদী ভাঙন শুরু হয়েছে গত দুই বছর ধরে। কিন্তু সরকারিভাবে ভাঙন রোধে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এ কারণে এই সড়কের একটি অংশ নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। আমাদের বাড়িঘর হুমকির মুখে পড়েছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে এই নদী আমাদের ঘরবাড়িও গিলে খাবে।
সলফ গ্রামের মুজিবুর রহমান জানান, এ সড়কের ব্যাপারে আমরা কয়েকবার এলজিইডি অফিসে যোগাযোগ করেছি। আবেদন করেছি এবং পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানকে অবগত করেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ সড়কের নদী ভাঙন অংশে সংস্কার কাজ শুরু করা প্রয়োজন।

দরগাপাশা ইউপি চেয়ারম্যান মো. সুফি মিয়া জানান, বাগেরকোণা-সলফ সড়কটি জনগুরুত্বপূর্ণ। পাকা সড়কটি নদী ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় উল্লিখিত রাস্তাটি অন্যদিকে সরিয়ে নতুন রাস্তা নির্মাণের জন্য এলাকাবাসীর সঙ্গে যোগাযোগ করে আলাপ আলোচনা করেছি। জায়গার সমস্যা আছে। আশা করি শিগগিরই সমাধান হবে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী আল নুর তারেক জানান, বাগেরকোনা-সলফ সড়কের বড় একটি অংশ মহাসিং নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। এ বিষয়ে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। নদী ভাঙন রোধ করা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ। নদী ভাঙন এলাকা দিয়ে আমরা সড়ক তৈরি বা মেরামত করতে পারব না। এলাকার জনগণ যদি সড়কের জায়গা অন্যদিকে দেন তাহলে আমরা প্রাক্কলন তৈরি করে সড়ক নির্মাণ করে দিতে পারব।