অমিত শাহের আশ্বাস : রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের পাশে থাকবে ভারত

আগের সংবাদ

বিশ্বকাপের বাঁশি বাজল কাতারে

পরের সংবাদ

বাঞ্ছারামপুর : পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতার মৃত্যু

প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ও কাগজ প্রতিবেদক : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে বিএনপি নেতাকর্মীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ছাত্রদল নেতা নয়ন মিয়া (১৮) মারা গেছেন। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
গতকাল শনিবার বিকালে উপজেলা সদরের মোল্লাবাড়ির ব্রিজের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে একজন গুলিবিদ্ধ ও ৭ পুলিশ সদস্য আহত হন। গুলিবিদ্ধ নয়ন মিয়া (২২) উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহসভাপতি ও চরশিবপুর এলাকার রহমত উল্লাহর ছেলে। স্বজনরা জানান, ঢাকার কেরানীগঞ্জের কালিগঞ্জে একটি কাপড়ের দোকানে চাকরি করতেন নয়ন। আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম (৪১), পরিদর্শক (তদন্ত) তরুণ কান্তি দে (৩২), উপপরিদর্শক আতিউর রহমান (৩৫), আফজাল হোসেন (৩০) ও বিকিরণ চাকমা (৩২), কনস্টেবল শফিকুল ইসলাম (৩৩) ও বিশ্বজিৎ চন্দ্র দাস (২৬)।
উপজেলা বিএনপি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায় বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বেলা সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলা সদরে প্রচারপত্র বিলি করেন। পরে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ময়মনসিংহের (’৯০-’৯১ সালের) সাবেক ভিপি সায়েদুজ্জামান কামালের নেতৃত্বে উপজেলা সদরে মোল্লাবাড়ি থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বাজার, থানা ও উপজেলা পরিষদ এলাকা ঘুরে পুনরায় মোল্লাবাড়ির মসজিদের সামনে আসে। সেখানে বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলমের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা সায়েদুজ্জামান কামালকে আটক করতে যায়। এ সময় দুপক্ষের হাতাহাতি ও একপর্যায়ে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেলও ছোড়া হয়। এ সময় নয়ন পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহটি মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে।
রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, জুলুম-নিপীড়নের প্রতিবাদ করায় বিএনপির নেতাকর্মীদের হত্যার মধ্যে দিয়ে কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করছে সরকার। আ. রহিম থেকে শুরু করে, নুরে আলম, নারায়ণগঞ্জে ও মুন্সীগঞ্জে দুই শাওন, অনিক ও সবশেষ আজ বাঞ্ছারামপুরে নয়নকে হত্যা করা হলো।
হাসপাতালে বিএনপির নির্বাহী কমিটির দপ্তর সম্পাদক (সংযুক্ত) আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী জানান, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উপজেলায় লিফলেট বিতরণকালে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আহত প্রায় ২০ জনকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এদিকে ঘটনাস্থল থেকে বিএনপির দুই কর্মী রফিকুল ইসলাম (৪২) ও সাইদুর রহমানকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সাবেক ভিপি সায়েদুজ্জামান কামাল বলেন, আমরা বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে শান্তিপূর্ণ মিছিল করি। কোনো রকম উসকানি ছাড়াই পুলিশ আমাদের মিছিলে অতর্কিত গুলি ছোড়ে। এতে ছাত্রদল নেতা নয়ন গুলিবিদ্ধ হয়।
বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম বলেন, বিকালে বিএনপি একটি মিছিল নিয়ে আকস্মিকভাবে থানার সামনে জড়ো হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে তারা ইটপাটকেল ছোড়া শুরু করে। সেখানে থাকা টহল পুলিশের কাছ থেকে তারা অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় কনস্টেবল এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। তিনি আরো বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের হামলায় আমিসহ ৭ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছি। তাদের (বিএনপির) এক কর্মীও আহত হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়