জাহাঙ্গীর কবির নানক : বিএনপির মানবতার শিক্ষা নেয়া দরকার

আগের সংবাদ

এপার ওপার সুড়ঙ্গ সংযোগ : কর্ণফুলীর তলদেশে ‘বঙ্গবন্ধু টানেল’ উদ্বোধনের অপেক্ষায়

পরের সংবাদ

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপরাধীদের কঠোর হাতে দমন করতে হবে

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপরাধপ্রবণতা দিন দিন বাড়ছেই। আমরা শুরু থেকেই এ বিষয়ে শঙ্কার কথা জানিয়ে আসছি। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হলে স্বাভাবিকভাবেই সন্ত্রাসবাদের উত্থান হবে। খুন, ধর্ষণ, মাদক পাচার, শিশু পাচার, ডাকাতি, অপহরণ, পতিতাবৃত্তিসহ সব ভয়ংকর অপরাধের আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে রোহিঙ্গারা। সর্বশেষ গত সোমবার পার্বত্য জেলা বান্দরবানে মাদকবিরোধী অভিযানের সময় রোহিঙ্গা মাদককারবারিদের গুলিতে ডিজিএফআইয়ের এক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। তার নাম রেজওয়ান রুশদি। তিনি বিমানবাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার ছিলেন। গোলাগুলিতে এক রোহিঙ্গা নারীও নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন সোহেল বড়ুয়া নামের এক র‌্যাব সদস্য। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। জানা গেছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে সক্রিয় ১০-১৫টি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপের খবর। সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোকে প্রতিহত করতে গিয়ে প্রায়ই ঘটছে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা। গত পাঁচ বছরে ১০১টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া স্থানীয় তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে মে মাসে দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযানে কক্সবাজারে বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ২৭৯ জন প্রাণ হারিয়েছে। এদের মধ্যে রোহিঙ্গা ১০৯ জন। নিহত রোহিঙ্গাদের মধ্যে তিনজন নারীও ছিলেন বলে সূত্র জানিয়েছে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প অপরাধ জগতে পরিণত হয়েছে। এটা আমাদের জন্য উদ্বেগের খবর। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটেই চলেছে। বিশেষ করে মাদক, অস্ত্র ও স্বর্ণ ব্যবসা নিয়ে অভ্যন্তরীণ বিরোধ চরম আকার ধারণ করেছে। প্রতি রাতে ক্যাম্পগুলোতে শোনা যায় গুলির শব্দ। জানা গেছে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পভিত্তিক একাধিক সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর হাতে হাতে পৌঁছে গেছে অস্ত্র। অস্ত্রের ব্যবহারের মাধ্যমে তারা ক্যাম্পের ভেতরে-বাইরে ডাকাতি, অপহরণ, খুন, ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ সংঘটিত করছে। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের অস্ত্র সরবরাহ করতে এ দেশের অস্ত্র কারবারিদের সম্পৃক্ততায় পাহাড়ের গহিন অরণ্যে স্থাপন করা হয়েছে অস্ত্র তৈরির কারখানা। জাতিগত নির্মূল অভিযানের ফলে ২০১৯ সালের আগস্ট থেকে মিয়ানমারের ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এর আগেও এখানে অবস্থান করছিল ৩ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। অবৈধ অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের কারণে আমাদের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোয় আর্থ-সামাজিক ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটছে। অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিদেশ গিয়ে নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে এবং এর দায়ভার বর্তাচ্ছে বাংলাদেশের ওপর। এত বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে নিয়মশৃঙ্খলার মধ্যে রাখা কঠিন কাজ বটে। শুধু ক্যাম্পের অভ্যন্তরে নয়, ক্যাম্পের বাইরেও রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা স্থানীয় গ্রামবাসীদের সঙ্গেও বিভিন্ন সময় সংঘর্ষে লেগে যায়। স্থানীয় অনেকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীর হাতে অপহরণ ও হত্যার শিকার হয়েছে। নানাভাবে তারা অপরাধপ্রবণতায় জড়িত। এরা আক্রোশী মনোভাবের। সব বিবেচনা করেই প্রশাসনকে অত্যন্ত কঠোর হতে হবে। অন্যথায় আরো অপরাধ বাড়তে পারে। যা আমাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি বটে। আশা করছি, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সব ধরনের অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের দক্ষতার পরিচয় দেবে। পাশাপাশি বাড়াতে হবে গোয়েন্দা নজরদারি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়