জাহাঙ্গীর কবির নানক : বিএনপির মানবতার শিক্ষা নেয়া দরকার

আগের সংবাদ

এপার ওপার সুড়ঙ্গ সংযোগ : কর্ণফুলীর তলদেশে ‘বঙ্গবন্ধু টানেল’ উদ্বোধনের অপেক্ষায়

পরের সংবাদ

কাউনিয়ার সতের গ্রামের প্রধান বাহন ঘোড়াগাড়ি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গৌতম সরকার, কাউনিয়া (রংপুর) থেকে : কাউনিয়ায় ঘোড়াগাড়ি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের যোগাযোগের ক্ষেত্রে চরের জাহাজ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। বিভিন্ন চরে ঘোড়াগাড়ির ব্যাপক ব্যবহারের ফলে কর্র্র্মসংস্থানের নব দিগন্তের সূচনা হয়েছে।
সরজমিন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন তিস্তা নদীবেষ্টিত ১৭টি চরাঞ্চলের গ্রাম চর নাজিরদহ, চর সাব্দি, গোপিডাঙ্গা, আরাজি হরিশ্বর, তালুকশাহাবাজ, চর গনাই, চর গদাই, হরিচরন শর্মা, চর গনাই, চর বিশ্বনাথ, হয়বতখাঁ চর, টাপুর চর, সদরা তালুক, চর আজমখাঁ ঘুরে দেখা গেছে এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থায় একমাত্র বাহন হিসেবে স্থান করে নিয়েছে ঘোড়ার গাড়ি। বালু আর মরা তিস্তার শাখানদীর রাস্তাসহ কাদা রাস্তায় যেখানে ভ্যান, রিক্সা, ট্রলি, ট্রাক যেতে পারে না সেসব রাস্তার জনপ্রিয় বাহন হিসেবে ঘোড়াগাড়ির কদর বেড়েছে।
উপজেলার সিংহভাগ রবি শস্য, ধান, পাট, আলু, বাদাম, ভুট্টা, পেঁয়াজ, মরিচ, ডাল এসব অর্থকারী ফসল চরাঞ্চলেই বেশি উৎপাদন হয়। কৃষকের উৎপাদিত ফসল হাটে নিয়ে যেতে না পারায় কম দামে ফড়িয়া দালালদের কাছে বাধ্য হয়েই চরেই বিক্রি করতে হতো। বর্তমানে ঘোড়ার গাড়ি চালু হওয়ায় কৃষক এখন তার উৎপাদিত ফসল হাটে নিয়ে ন্যায্য দামে বিক্রি করছে। কাউনিয়ায় এসব চরাঞ্চলে প্রায় ৪ শতাধিক ঘোড়াগাড়ি রয়েছে।
কাউনিয়ায় থানা রোডে হারাগাছ ইউপির চর নাজিরদহ গ্রামের ঘোড়াগাড়ি চালক জিল্লুর রহমান জানায়, এক সময় তার সংসার চলতো না, খেয়ে না খেয়ে দিন কাটিয়েছে পরিবার পরিজন নিয়ে। ঘোড়াগাড়ি চালানো শুরুর পর থেকে তার সংসারে এখন তেমন অভাব নেই।
পল্লীমারী একতা গ্রামের ঘোড়াগাড়ি চালক গনি মিয়া জানায়, প্রায় ৫ বছর থেকে সে ঘোড়াগাড়ি চালায়, তার দৈনিক আয় ৭০০-৮০০ টাকা। তবে আলুর মৌসুমে আয় আরো বেশি হয়। একই কথা জানালেন ঘোড়াগাড়ি চালক আ. খালেক ও নুর নবী। ঘোড়ার পেছনে তাদের এক থেকে দেড়শ টাকা খাদ্য বাবদ ব্যয় হয়। ঘোড়াগাড়ির চাকা তাদের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে আছে।
ঘোড়াগাড়ির ব্যাপারে হারাগাছ ইউপি চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ জানান, তার ইউনিয়নে দেড়শতাধিক ঘোড়াগাড়ি আছে। বালাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আনছার আলী জানান, তার ইউনিয়নে ৫০ থেকে ৬০টি ঘোড়াগাড়ি আছে।
টেপামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম জানান, তার ইউনিয়নে শতাধিক ঘোড়াগাড়ি আছে।
শহীদবাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আ. হান্নান জানান, তার ইউনিয়নে ৩৫ থেকে ৪০টি ঘোড়াগাড়ি রয়েছে। আজ থেকে বছর চার পাঁচ আগেও এ উপজেলায় ঘোড়া দেখা যেত না। এখন প্রায় গ্রামে ঘোড়াগাড়ি হয়েছে। সেই সঙ্গে ঘোড়াগাড়ি যোগাযোগের জন্য চরাঞ্চলের জাহাজ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে এবং কর্মসংস্থানের নব দিগন্তের সৃষ্টি হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়