বাংলা একাডেমির তিনটি পুরস্কার ঘোষণা

আগের সংবাদ

মহাসড়কে পদে পদে মরণফাঁদ :

পরের সংবাদ

জেলহত্যা দিবস : জাতীয় চার নেতাকে স্মরণ > হত্যার রাজনীতি বন্ধের প্রত্যয়

প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিন¤্র শ্রদ্ধায় জাতীয় চার নেতাকে স্মরণ করেছে জাতি। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ও ৩ নভেম্বরের ঘটনা দুটি একই চক্রান্তের ধারাবাহিকতা উল্লেখ করে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে হত্যা-সন্ত্রাস চিরতরে বন্ধের প্রত্যয় ব্যক্ত করে। একইসঙ্গে এসবের পৃষ্ঠপোষক বিএনপির অপরাজনীতি চিরতরে বন্ধেরও দাবি জানানো হয়। আর জেলহত্যায় নিহত চার নেতার পরিবারের সদস্যরা দিবসটিকে জাতীয় দিবস হিসেবে পালনের স্বীকৃতি চায়। আওয়ামী লীগ বলছে, এটি সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্ত। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর ৩ নভেম্বর তার বিশ্বস্ত চার সহচর মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, অর্থমন্ত্রী ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং খাদ্য ও ত্রাণমন্ত্রী এএইচএম কামরুজ্জামানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। প্রতি বছর দিবসটি গুরুত্বসহকারে পালিত হয়ে আসছে। এবারো নানা আয়োজনে সারাদেশে দিবসটি পালন করেছে আওয়ামী লীগ।
গতকাল সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে হত্যার রাজনীতির প্রধান হোতা বিএনপি। তারাই বঙ্গবন্ধু হত্যা, জেলহত্যা ও ২১ আগস্টে গ্রেনেড মেরে নেতাকর্মীদের হত্যাকারী। মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে আমাদের চেতনায় লালন করি, পালন করি। এজন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাজনীতিতে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে এবং হত্যার রাজনীতি চিরতরে বন্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে নৃশংস হত্যাকাণ্ড হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারের হত্যা করে নিঃসঙ্গ করে দেয়াই ছিল তাদের লক্ষ্য। ৩ নভেম্বর জেলের অভ্যন্তরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা ছিল ১৫ আগস্টের ধারাবাহিকতা। ২০০৪ সালে সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ২৩টি তাজা প্রাণে রক্তাক্ত হয় বঙ্গবন্ধু এভিনিউ। তাদের প্রধান টার্গেট ছিল শেখ হাসিনা। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জেলহত্যা দিবসকে জাতীয় দিবস করার বিষয়টি সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তের বিষয়। আর বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ থেকে ‘পলিটিকস অফ কনফ্রন্টেশন’কে চিরদিনের জন্য বিদায় দিতে হলে বিএনপির অপরাজনীতি বন্ধ হওয়া দরকার। অন্যথায় দেশে সাংঘর্ষিক রাজনীতি বন্ধ করা সম্ভব হবে না।
বুধবার সূর্যোদয়ের ক্ষণে বঙ্গবন্ধু ভবন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে সংগঠনের সবস্তরের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল ৭টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত ধানমন্ডির ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথমে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর এই মহান নেতা এবং জাতীয় চার নেতার স্মৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠন আওয়ামী যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, যুব মহিলা লীগ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও জাতির পিতার প্রতিকৃতির বেদীতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু এবং জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী বনানী কবরস্থানে যান এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এবং ৩ নভেম্বর হত্যাকাণ্ডে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এসব কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, শাজাহান খান, এডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।
জাতীয় চার নেতার মধ্যে এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে রাজশাহীর কাদিরগঞ্জে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। সেখানেও পরিবার ও জেলা-মহানগর আওয়ামী লীগ দিবসটি পালন করে। গাজীপুরের কাপাসিয়াতেও তাজউদ্দিন আহমদের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায় স্থানীয় প্রশাসন ও দলীয় নেতাকর্মীরা। সকাল ১০টায় পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে বঙ্গবন্ধু ও চার নেতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইজি প্রিজন্সসহ কর্মকর্তারা।
দিবসটি উপলক্ষে বিকাল ৩টায় রাজধানীর আন্তর্জাতিক বঙ্গবন্ধু সম্মেলনকেন্দ্রে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সরাসরি অংশ নেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা এতে বক্তব্য রাখেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়