জি এম কাদের : ৩০০ আসনেই শক্তিশালী প্রার্থী দিবে জাপা

আগের সংবাদ

নাটকীয় সমঝোতার পথে জাপা :

পরের সংবাদ

কুষ্টিয়ায় নির্বাচন ঘিরে সহিংসতা ইউএনওর গাড়ি ভাঙচুর

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৩১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক, কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ার খোকসায় উপজেলা, সদর উপজেলার দুটি এবং মিরপুর উপজেলার দুটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে নির্বাচনী এলাকায়। আগামী ২ নভেম্বর খোকসা উপজেলা পরিষদ এবং সদর উপজেলার কাঞ্চনপুর, জিয়ারখি ও মিরপুর উপজেলার ধুবইল, চিথলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, অগ্নিসংযোগ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
এসব ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকার সাধারণ ভোটাররা। জানা যায়, শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে খোকসা বাজারে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বাবুল আক্তারের লোকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী মোতাহার হোসেনের এক সমর্থককে মারধরের অভিযোগ তোলেন। এ নিয়ে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হলে উভয়পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেয় এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন বিশ্বাস ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে আবারো শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। তবে কেউ হতাহত হয়নি। এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া যায়। স্বতন্ত্র প্রার্থী মোতাহার হোসেন জানান, সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা তার এক কর্মীকে মারধর করে। এতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তবে তার লোকজন কোনো সংঘর্ষে জড়াননি বলে দাবি তার।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী বাবুল আক্তার তার কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেন। উল্টো প্রতিপক্ষের হামলায় তার ৩ কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন বিশ্বাস জানান, নির্বাচনকে সামনে রেখে উপজেলা আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী বাবুল আখতারের সমর্থক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোতাহার হোসেন ঘোড়া প্রতিকের সমর্থকদের মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে উত্তেজনা চলে আসছিল। একপর্যায়ে শনিবার রাতে পুনরায় বাজার এলাকায় দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে খোকসা থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ আশিকুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উভয়পক্ষকে শান্ত করে ফেরার পথে কে বা কারা পেছন থেকে তার গাড়িতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে গাড়ির পেছনের কাচ ভেঙে দেয়। এ ব্যাপারে গাড়ির ড্রাইভার বাদশা মিয়াকে বাদী করে খোকসা থানায় অজ্ঞাত কয়েকজনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
অন্যদিকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার নবগঠিত কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চশমা প্রতীক স্বতন্ত্র প্রার্থী ও নৌকার প্রার্থীর মধ্যে প্রচারণা নিয় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার রাতে সদর উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের রাতুলপাড়া নৌকার প্রার্থী একরামুল হকের নির্বাচনী ক্যাম্পে স্বতন্ত্র প্রার্থী আনিচুর রহমান ঝন্টুর সমর্থকরা আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ এনে কুষ্টিয়া মডেল থানায় রাতেই নৌকার সমর্থক শরিফুল ইসলাম ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ ব্যাপারে নৌকার প্রার্থী একরামুল হক বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আনিচুর রহমান ঈর্শ^ান্বিত হয়ে রাতে তার লোক দিয়ে আমার ক্যাম্পে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক জানান, আনিচুর রহমান ঝন্টু আমার সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনিসহ ৮ জন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন।
কিন্তু দল সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি একরামুল হককে মনোনয়ন দিয়েছে। প্রতীক চূড়ান্ত হওয়ার পরও দেখা গেল আনিচুর রহমান ঝন্টু একজন আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল পদে থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বহাল থাকলেন। দলীয় ফোরামে তাকে বলা হয়েছে তারপরও তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াননি। পরে বিধি অনুযায়ী গত ২৪ অক্টোবর তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর থেকেই তিনি যেন বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়