শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হচ্ছে নি¤œচাপ : মঙ্গলবার আঘাত হানতে পারে ‘সিত্রাং’

আগের সংবাদ

সিত্রাংয়ের ভয়াবহ ছোবল ১৩ জেলায় : ভোলা ও নড়াইলে ৩ জনের মৃত্যু > তিন বিমানবন্দরে কার্যক্রম বন্ধ > ২৫ লাখ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে > তদারকি করছেন প্রধানমন্ত্রী

পরের সংবাদ

নারায়ণগঞ্জ আ.লীগ সম্মেলন : সভাপতি আবদুল হাই সম্পাদক বাদল

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রবিবার ওসমানী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে আবদুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক পদে আবু হাসনাত শহীদ বাদলকে বহাল রাখা হয়েছে। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কার্যকরি পরিষদের সদস্য এডভোকেট রিয়াজুল কবির কাওছার, আনোয়ার হোসেন, সাহাবউদ্দিন ফরাজী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক একেএম শামীম ওসমান, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ডা. সেলিনা হায়াত আইভি, পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহিদ বাদল।
ওবায়দুল কাদের বলেন, খেলা হবে। ভোট জালিয়াতির বিরুদ্ধে খেলা কবে, লুটপাটের বিরুদ্ধে খেলা হবে, দুর্নীতি, গুম খুনের বিরুদ্ধে খেলা হবে, নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে খেলা হবে। বিএনপির বিরুদ্ধে খেলা হবে। আসল খেলা হবে ডিসেম্বরে। তত্ত্বাবধায়কের আশা বাদ দিন। তিনি আরো বলেন, আজ আমি নারায়ণগঞ্জে এসে আনন্দিত যে এক মঞ্চে দুই গণমানুষের নেতা শামীম ওসমান ও মেয়র আইভী পাশাপাশি আছেন। এরাই নারায়ণগঞ্জের শক্তি। আমি আরো মুগ্ধ যে, এ দুর্যোগেও নারায়ণগঞ্জে সম্মেলন হয়েছে। ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দীর্ঘদিন পর নারায়ণগঞ্জে সম্মেলনে আপনাদের উচ্ছ¡াস দেখছি। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নারায়ণগঞ্জের অনেক অবদান রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে আমরা তা দেখতে পাই। বাঙালিরা কোনোদিন স্বাধীন ছিল না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সামনের কাতারে থেকে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করেছেন। সব আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জের মানুষ ভূমিকা রেখেছে। আজকের এ চিত্র প্রমাণ করে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের ঘাঁটি ছিল, ভবিষ্যতেও তা থাকবে।
শামীম ওসমান বলেন, আকাশে শকুন উড়ছে, মানচিত্রে থাবা দেবে। আমরা প্রমাণ করতে চাই নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের ঘাঁটি ছিল, আছে এবং থাকবে। নারায়ণগঞ্জবাসী আপনাদের নির্দেশের অপেক্ষায় আছে। তিনি বলেন, মানুষ আর হাইব্রিডের ধাক্কা খেতে চায় না। তৃণমূলের মূল্যায়ন চায়। কমিটিতে যেন তৃণমূলের মূল্যায়ন করা হয়। মানুষ তৃণমূল নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন চায়। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে তৃণমূলের ত্যাগী নেতাদের দিয়ে কমিটি গঠন করতে হবে।
ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, কারো নামে স্লোগান নয়, নেত্রীর নামে স্লোগান দিন। আওয়ামী লীগের উন্নয়নের কথা তুলে ধরতে হবে। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হতে হবে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার নাম। তিনি আরো বলেন, গুম-খুন বন্ধ করে নারায়ণগঞ্জে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ চাই। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সব ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজনীতি করতে হবে। ঐক্যের আওয়ামী লীগ গড়তে চাই।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের তাৎকালীন প্রশাসক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাইকে সভাপতি এবং সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে সিনিয়র সহসভাপতি ও আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদলকে সাধারণ সম্পাদক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট জেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্র। এর ১৩ মাস পর ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর ৬টি পদ শূন্য রেখে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ৭৪ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্র। কিন্তু ৫ বছরেও পূরণ হয়নি শূন্য পদগুলো। অভিযোগ রয়েছে, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সিনিয়র সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে ৬টি পদ ভাগাভাগি নিয়ে শেষ পর্যন্ত তার আর পূরণ হয়নি।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলার সর্বশেষ কাউন্সিল হয় ১৯৯৭ সালের ২০ ডিসেম্বর। অধ্যাপিকা নাজমা রহমান সভাপতি ও এমপি শামীম ওসমান সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এরপর ২০০২ সালের ২৭ মার্চ নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এস এম আকরামকে আহ্বায়ক করে কেন্দ্র থেকে ৬১ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি করে দেয়া হয়। পরে ২০১১ সালে নাসিক নির্বাচনের পর আকষ্মিকভাবে আহ্বায়কের পদ থেকে এস এম আকরাম পদত্যাগ করে যুক্ত হন নাগরিক ঐক্যের সঙ্গে। পরে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক করা হয় যুগ্মআহ্বায়ক মফিজুল ইসলামকে। কিন্তু ২০১৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মফিজুল ইসলাম মারা যান। ফলে দীর্ঘ ১৪ বছর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি উপহার দিতে পারেনি এস এম আকরাম ও মফিজুল ইসলাম।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়