বসতঘর থেকে মা ও ২ শিশু সন্তানের মরদেহ উদ্ধার

আগের সংবাদ

বছরজুড়েই ‘উন্নয়নে’র দুর্ভোগ : ভাঙাচোরা সড়কে সমন্বয়হীন খোঁড়াখুঁড়ির ফাঁদ > নিত্যসঙ্গী তীব্র যানজট > সামান্য বৃষ্টিতেই জলজট

পরের সংবাদ

কাটাছেঁড়া সড়কে বর্ষণের জলজট : যানজটে নাকাল নগরবাসী

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : কয়েকদিনের ভ্যাপসা গরমের পর গতকাল রবিবার ভোর থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে থেমে থেমে বৃষ্টি হয়। এতে ভ্যাপসা গরম কিছুটা কমায় রাজধানীবাসী স্বস্তি পেলেও তীব্র যানজটের কারণে সকালে অফিস ও স্কুলগামীদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে বনানী থেকে উত্তরাগামী মানুষকে। এছাড়া বৃষ্টি ও উন্নয়নকাজের জন্য তীব্র যানজটে থমকে ছিল গাজীপুর থেকে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সড়ক। এর প্রভাব পড়েছে রাজধানীর অভ্যন্তরের সড়কগুলোতে।
সরজমিন দেখা গেছে, রাজধানীর ভেতরে প্রবেশ এবং বের হয়ে যাওয়ার দুই পথেই তীব্র যানজট। সেই সঙ্গে রাস্তায় মানুষের ভিড়। বৃষ্টির কারণে সকাল থেকে রাজধানীতে গণপরিবহন সংকট ছিল। ফলে রাস্তায় মানুষের ভিড় বাড়ে। গণপরিবহনের অভাবে ও যানজটের কারণে অনেকেই হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু রাস্তায় মানুষের ভিড়ের কারণে ফুটপাত দিয়ে হাঁটাও কঠিন হয়ে পড়ে। এদিন দুপুর পর্যন্ত আবদুল্লাহপুর থেকে উত্তরা, এয়ারপোর্ট, খিলক্ষেত, বিশ্বরোড, বনানী, কুড়িল প্রগতি সরণিজুড়েই তীব্র যানজট ছিল। অন্যদিকে বনানী, বিশ্বরোড, খিলক্ষেত, কাওলা, এয়ারপোর্ট, উত্তরা, আবদুল্লাহপুর পেরিয়ে গেছে যানবাহনের দীর্ঘ সারি।
জানা যায়- একাধিক উন্নয়ন কাজের ধাক্কায় স্বাভাবিক সময়েই রাজধানীর উত্তরা-বিমানবন্দর সড়কে থাকে যানবাহনের ধীরগতি। গতকাল বষণের ফলে উত্তরায় বিমানবন্দর সড়কে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। আর এই জলাবদ্ধতার কারণে সকাল থেকেই তীব্র যানজটে প্রায় থমকে যায় মূল সড়ক। স্থবির হয়ে পড়ে বিমানবন্দরসহ এর আশপাশের চলাচল। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে যানবাহনগুলোকে। চরম ভোগান্তিতে পড়া সাধারণ মানুষকে অতিষ্ঠ হয়ে একপর্যায়ে পায়ে হেঁটেই গন্তব্যের দিকে রওনা হতে দেখা যায়। এমন পরিস্থিতিতে শ্যালো মেশিন সংগ্রহ করে বিমানবন্দর সড়কের পানি সরাতে উদ্যোগ নেয় পুলিশের ট্রাফিক উত্তর বিভাগ। দুপুর ১২টার দিকে এই মেশিন দিয়ে তারা পানি সরানোর কাজ শুরু করে। ঘণ্টাখানেক পর কমে সড়কের পানি। তখন বিমানবন্দর সড়কে যান চলাচলে গতি বাড়ে কিছুটা।
মোহাম্মদপুরের শিয়া মসজিদ থেকে আবদুল্লাহপুরগামী আলিফ পরিবহনের যাত্রী রাতুল জানান, শিয়া মসজিদ থেকে বনানী পর্যন্ত আসতে ঘণ্টাখানেক সময় লেগেছে। এরপর বনানীতেই গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে এক ঘণ্টার বেশি। উত্তরায় অফিস হওয়ায় নেমে হেঁটে যাওয়াও সম্ভব হচ্ছে না। স্বাভাবিক সময়ে সর্বোচ্চ ২ ঘণ্টায় অফিস গেলেও আজ কত ঘণ্টা লাগবে তার ঠিক নেই। সোহান আহমেদ নামের আরেক যাত্রী বলেন, যানজটের কারণে মহাখালী থেকে বনানী যাওয়ার জন্য হাঁটা শুরু করেছি। রাস্তায় মানুষের চাপের কারণে ঠিকমতো হাঁটাও কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নতুনবাজার থেকে কুড়িল পর্যন্ত ২ ঘণ্টায় এসেছেন আছিম পরিবহনের চালক ফারুক। তিনি জানান, পুরো সড়কই থমকে আছে, গাড়ি চলছে না বললেই চলে। যাত্রীরা বেশি যানজট দেখলে নেমে যেতে পারলেও তাদের নিস্তার নেই। যত ঘণ্টাই লাগুক তাদের বাধ্য হয়েই বসে থাকতে হবে।
চালক, যাত্রী এবং ট্রাফিক পুলিশের সংশ্লিষ্টরা জানান, যানজটের প্রধান কারণ উত্তরা এলাকায় বিআরটিএ’র প্রকল্প। প্রকল্পের কাজের জন্য সড়কে বড় বড় গর্ত হয়েছে। এসব গর্তে জমেছে পানি। এই পরিস্থিতিতে বিমানবন্দর হয়ে টঙ্গী বা গাজীপুরের দিকে যানবাহন দ্রুত গতিতে চলতে পারছে না। ফলে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। ট্রাফিক উত্তর বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, কিছুদিন আগেও বৃষ্টির কারণে সড়কে পানি জমে এমন যানজট তৈরি হয়েছিল। তখন বিআরটিএ প্রকল্পের সংশ্লিষ্টদের নিচের সড়ক সংস্কার করতে বলা হয়। কিন্তু তারা করবো করবো বলে এখন পর্যন্ত সড়কগুলো ঠিক করেনি। ফলে বিমানবন্দর সড়ক প্রায় স্থবির হয়ে আছে।
ডিএমপির ট্রাফিক উত্তর বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. বদরুল হাসান জানান, বিমানবন্দর সড়ক বলতে গেলে স্থবির হয়ে আছে। ঢাকা থেকে কোনো গাড়ি বের হতে ও ঢাকায় প্রবেশ করতে পারছে না। এর ফলে গাড়ির জটলা বাড়তে বাড়তে রাজধানীর ভেতরেও এর প্রভাব পড়েছে। তিনি বলেন,

বিমানবন্দর এলাকার রাস্তায় ও গাজীপুরের সড়কে চলমান উন্নয়ন কাজের প্রভাবের সঙ্গে যোগ হয়েছে বৃষ্টি। জলাবদ্ধতার কারণে যানবাহনের ধীরগতি থেকে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে ট্রাফিক বিভাগ সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে বলেও জানান ট্রাফিক পুলিশের এই কর্মকর্তা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়