সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী : সাম্প্রদায়িক সম্প্রীরীতি রক্ষায় সজাগ থাকতে হবে সবাইকে

আগের সংবাদ

পঞ্চগড়ে নৌকাডুবিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫০, এখনো নিখোঁজ অন্তত ২৭ : মরদেহের অপেক্ষায় স্বজনরা

পরের সংবাদ

অস্ত্র মামলা : জিকে শামীম ও সাত দেহরক্ষীর যাবজ্জীবন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : কথিত যুবলীগ নেতা এসএম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জিকে শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীকে অস্ত্র আইনের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল রবিবার দুপুর ১টায় ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শেখ ছামিদুল ইসলাম মামলার রায় পড়া শুরু করেন। এরপর ৩ মিনিটে সংক্ষিপ্তভাবে রায় ঘোষণা শেষ করেন তিনি। রায়ে বিচারক বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় জিকে শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীর সবাইকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হলো। এছাড়া প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হলো যা অনাদায়ে আরো তিন মাস কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। এদিকে রায়ের প্রতিক্রিয়ায় জিকে শামীম দাবি করেছেন, তিনি নির্দোষ। গভীর ষড়যন্ত্র করে তাকে ফাঁসানো হয়েছে।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত জিকে শামীমের সাত দেহরক্ষী হলেন- মো. জাহিদুল ইসালাম, মো. শহিদুল ইসলাম, মো. কামাল হোসেন, মো. সামসাদ হোসেন, মো. আমিনুল ইসলাম, মো. দেলোয়ার হোসেন ও মো. মুরাদ হোসেন। গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় জিকে শামীম ও তার দেহরক্ষীদের কারাগার থেকে আদালতে এনে হাজতখানায় রাখা হয়। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তোলা হয় এজলাসে। রায় ঘোষণা শেষে সবাইকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে ফের কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালত থেকে বের করে প্রিজনভ্যানে তোলার আগে জিকে শামীম ভোরের কাগজকে বলেন, গভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত করে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। ষড়যন্ত্র কেন করা হয়েছে- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্বার্থের জন্য আমার সিন্ডিকেটের লোকজনই আমাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। আমি নির্দোষ।
এদিকে রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর সালাহউদ্দিন হাওলাদার বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। তাই তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিয়েছেন আদালত। আর জিকে শামীমের আইনজীবী শাহিনুর রহমান বলেন, রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। এ রায়ের বিরুদ্ধে অবশ্যই উচ্চ আদালতে যাব।
উল্লেখ্য, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হলে ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর নিকেতনে জিকে শামীমের বাড়ি ও অফিসে অভিযান চালিয়ে ৮টি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল পরিমাণ গুলি, ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর এবং নগদ প্রায় এক কোটি ৮১ লাখ টাকা, বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা এবং মদ জব্দ করে র‌্যাব। এ ঘটনায় জিকে শামীমের বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও মানি লন্ডারিং আইনে তিনটি মামলা করা হয়।
এরপর ২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর অস্ত্র মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে র‌্যাব। চার্জশিটে বলা হয়, আসামি আমিনুল ইসলাম জামালপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হয়েছে মর্মে ডকুমেন্ট দেখালেও যাচাইয়ে তার সত্যতা মেলেনি। তিনি অবৈধ অস্ত্রের নকল কাগজপত্র নিয়ে ২০১৭ সালে প্রথমে এস.এম বিল্ডার্স নামে এক কোম্পানিতে যোগদান করেন। পরে ২০১৯ সালের মাঝামাঝি জিকে শামীমের দেহরক্ষী হিসেবে যোগ দেন আমিনুল। তিনি মূলত অবৈধ অস্ত্রটি ৭০ হাজার টাকায় কিনে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র তৈরি করেন। এছাড়া অন্য আসামিরা নিরাপত্তার অজুহাতে অস্ত্রের লাইসেন্সপ্রাপ্ত হলেও তারা শর্ত ভঙ্গ করে অস্ত্র প্রকাশ্যে বহন, প্রদর্শন ও ব্যবহার করে লোকজনের মধ্যে ভয়ভীতি সৃষ্টির মাধ্যমে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, মাদক ও জুয়ার ব্যবসা করে স্বনামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়