সহিংসতা প্রতিরোধে মাঠে থাকবে ১৪ দল

আগের সংবাদ

পঞ্চগড়ে নৌকা ডুবে নিহত ২৫, নিখোঁজ অর্ধশতাধিক : করতোয়া তীরে শোকের মাতম

পরের সংবাদ

নোয়াখালীতে বিক্ষোভ : স্কুলছাত্রী হত্যায় গৃহশিক্ষকের স্বীকারোক্তি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মোহাম্মদ সোহেল, নোয়াখালী থকে : স্কুলছাত্রী অদিতাকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে হত্যা করার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে নিহত ছাত্রীর সাবেক গৃহশিক্ষক আবদুর রহিম ওরফে রনি। গতকাল শনিবার দুপুরে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় আবদুর রহিম ওরফে রনি। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নোয়াখালী পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
পুলিশ সুপার বলেন, অদিতা হত্যার ঘটনায় পুলিশ মাঠে নেমে জানতে পারে নোয়াখালী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ল²ীনারায়ণপুর মহল্লার লাতু কাউন্সিলরের বাড়ির খলিল মিয়ার ছেলে অভিযুক্ত আবদুর রহিম ওরফে রনি (৩০) নামে এক যুবকের কাছে প্রাইভেট পড়ত নোয়াখালী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তাসমিয়া হোসেন অদিতা। হঠাৎ করে অদিতা তার কাছে প্রাইভেট পড়তে অনীহা প্রকাশ করে এবং নতুন শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়তে শুরু করে। এতে রনি নাখোশ হয়।
এ বিষয়সহ অদিতার ব্যাপারে আরো বিস্তারিত জানার জন্য তাৎক্ষণিক রনিকে প্রথমে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। তখন তার থুথনি ও ঘাড়ে নখের আঁচড়ের তাজা দাগ দেখা যায়। নখের আঁচড়ের বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে একেক সময় একেক তথ্য দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। আঁচড়ের ব্যাপারে কোনো সদুত্তর না পেয়ে তার বিষয়ে আরো সন্দেহ জোরাল হয়। তখন তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে আদালতে সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত রিমান্ড আবেদনের প্রেক্ষিতে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করলে শুক্রবার সন্ধ্যায় তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়। রিমান্ডে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে রনি ঘটনার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন।
এসপি আরো বলেন, গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে অদিতার বাসায় যায় সাবেক কোচিং শিক্ষক রনি। বাসায় গিয়ে বন্ধ দরজা নক করলে অদিতা বাসার দরজা খুলে দেয়। তখন সে বাসায় প্রবেশ করে অদিতার সঙ্গে গল্পগুজব করে। গল্পগুজবের একপর্যায়ে রনি অদিতাকে জড়িয়ে ধরে চুমু দিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এরপর রাগান্বিত হয়ে অদিতা বিষয়টি সবাইকে জানিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার ভয়ে রনি অদিতাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে। পরবর্তীতে রান্না ঘর থেকে ছোরা এনে অদিতার বাম হাতের রগ এবং গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে হাতের বাঁধন খুলে দেয়। এরপর আসামি রনি ঘটনাকে ভিন্ন খাতে রূপ দিতে ঘরের আলমিরা ও ওয়ারড্রফের জামা-কাপড়, কাগজপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রুমের দরজা লক করে মূল ঘরের দরজা বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায়। শনিবার দুপুরে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামি রনি এসব কথা বলেন।
এদিকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তাসমিয়া হোসেন অদিতাকে জবাই ও হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্ত গৃহশিক্ষক রনির ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও সভা-সমাবেশে উত্তাল হয়ে উঠেছে সমগ্র নোয়াখালী।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়