মর্টার শেল নিক্ষেপ,: রোহিঙ্গা নিহত, আহত ছয়জন

আগের সংবাদ

মাঠে মারমুখী আওয়ামী লীগ

পরের সংবাদ

জেলা পরিষদ নির্বাচন : বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে কী ভাবছে আওয়ামী লীগ?

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মুহাম্মদ রুহুল আমিন : আগামী ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান জেলা পরিষদের নির্বাচন। তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া বাকি ৬১টি জেলায় এ নির্বাচন হবে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীক থাকছে না। সরাসরি অংশ নিচ্ছে না বিএনপিসহ ওই জোটের ছোট ছোট অন্য রাজনৈতিক দলগুলো। তবে ৩ থেকে ৪টি জেলায় জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। দলগতভাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এরই মধ্যে প্রতিটি জেলায় দলীয় প্রার্থীও ঘোষণা করেছে দলটি। গত বৃহস্পতিবার ছিল মনোনয়ন ফরম দাখিলের শেষদিন। ওইদিন ২০টির বেশি জেলায় একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম দাখিল করেছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা। ফলে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় বিজয়ী হতে চলেছেন তারা। ভোরের কাগজের জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে দেখা গেছে, এ সংখ্যা ২৩টি জেলায়। বাকি ৩৮টি জেলার বেশির ভাগই আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন একই দলের জেলাপর্যায়ের নেতাদের কেউ কেউ।
এদিকে এ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নৌকা না থাকায় বিদ্রোহীদের বিষয়ে বড় ধরনের কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে না আওয়ামী লীগ।

নির্বাচনে অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকতে তাদের ওপর তেমন চাপও প্রয়োগ করা হবে না। কেননা, দলটির হাইকমান্ড চায় জেলা পরিষদের এ নির্বাচনটি হোক অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ। যদিও কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতাদের কেউ কেউ বলছেন, যে কোনো নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে দলের অবস্থান যা আছে, তা এখনো বহাল আছে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একটি সূত্রে জানা গেছে, জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলের যেসব প্রার্থী বিদ্রোহী হিসেবে মাঠে আছেন, নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ করতে তাদের প্রয়োজন আছে। কাজেই নির্বাচন থেকে সরে যেতে দলের হাইকমান্ড বিদ্রোহীদের ওপর তেমন কোনো চাপ প্রয়োগ করবে না। কেননা এই নির্বাচনে সরাসরি জনগণের ভোট দেয়ার সুযোগ নেই। ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌরসভা ও উপজেলাপর্যায়ে যারা জনপ্রতিনিধি অর্থাৎ চেয়ারম্যান, মেয়র, ভাইস-চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ইউপি সদস্যরা ভোট দিয়ে থাকেন। তাদের ভোটেই জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিনিধি নির্বাচিত হবে। সেজন্যই বিদ্রোহীদের ওপর তেমন কোনো চাপ প্রয়োগ হবে না। এমনটিই বলছেন কেউ কেউ।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যদের কেউ কেউ আবার বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে কঠোর অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। তাদের মতে বিদ্রোহী প্রার্থীদের সাংগঠনিক শাস্তির মুখে পড়তেই হবে। তবে যাদের দলে কোনো পদে নেই, তাদের বিরুদ্ধে কিছু করণীয়ও নেই দলের। আর যারা দলে আছেন, তাদের বিরুদ্ধে মনোভাব আগের অবস্থানেই আছে। মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য ও দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, বিদ্রোহীদের বিষয়ে আওয়ামী লীগ কঠোরই থাকবে। ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই।
বোর্ডের আরেক সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান ভোরের কাগজকে জানান, মাঠের পরিস্থিতি বুঝেই হয়তো নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে। সেটা আমাদের পার্টিপ্রধানের এখতিয়ার। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমাদের দলের সিদ্ধান্ত আগে থেকেই যা আছে, সেটাই বহাল আছে। সেক্ষেত্রে অন্য জেলা পরিষদগুলোতে সবার জন্য উন্মুক্ত থাকছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ফারুক খান বলেন, আগে আমরা মাঠের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করি। তারপর দেখা যাবে। আরেক সদস্য এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, নির্বাচনে অংশ সবাই নিতে পারে। কিন্তু দল করলে অবশ্যই তাকে দলের শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। জেলা পরিষদ নির্বাচনে কেউ বিদ্রোহী হলে নিয়মানুযায়ীই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর নতুন কোনো সিদ্ধান্ত হলে, সেটাও সবাই জানতে পারবে।
এদিকে জানা গেছে দেশের ২৬ জেলায় আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আছেন। এসব জেলা হলো- গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ, জয়পুরহাট, রাজশাহী, নরসিংদী, নড়াইল, ফরিদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, চাঁদপুর, বগুড়া, পাবনা, মাগুরা, সুনামগঞ্জ, নোয়াখালী, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, পিরোজপুর, রাজবাড়ী, দিনাজপুর, হবিগঞ্জ, খুলনা, শেরপুর, ঝিনাইদহ ও রংপুর।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়