পল্টনে তৃতীয় লিঙ্গের সদস্য-হকার সংঘর্ষে আহত ৬

আগের সংবাদ

জোয়ারের পানিতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি : কলাপাড়ার ৬০ কিলোমিটার সড়কের অধিকাংশই কাঁচা

পরের সংবাদ

মর্টার শেল নিক্ষেপ,: রোহিঙ্গা নিহত, আহত ছয়জন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান) প্রতিনিধি : বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ছোড়া চারটি মর্টার শেল এসেছে পড়েছে। মর্টার শেল বিস্ফোরণে সেখানে বসবাসরত মো. ইকবাল (১৭) নামে এক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় এক বাংলাদেশি ও এক রোহিঙ্গা শিশুসহ অন্তত ছয়জন আহত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত ৮টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড কোনারপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতদের উদ্ধার করে কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
গত কয়েকদিন ধরে মর্টার শেল ও গুলির শব্দে আতঙ্কে থাকা সীমান্তবর্তী স্থানীয় বাসিন্দা ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পটিতে নতুন করে আবারো আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও এসব ঘটনা কূটনৈতিকভাবে সমাধান করার কথা জানিয়ে আসছে সরকার। ইতোমধ্যে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে দুইবার ডেকে কড়া
প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা।
তমব্রু রোহিঙ্গা ক্যাম্প কমিটির চেয়ারম্যান দিল মোহাম্মদ জানান, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে মিয়ানমার থেকে ৪টি মর্টার শেল এসে পড়ে। এর মধ্যে তিনটি শূন্যরেখায় থাকা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ও আরেকটি বাংলাদেশের সীমানার ভেতর পড়েছে। এতে এক রোহিঙ্গা শিশুসহ ছয়জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে নেয়া হয়। এর মধ্যে মোহাম্মদ ইকবাল নামে আহত রোহিঙ্গা যুবক মারা যান।
আহতরা হলেন- সাদিয়া জান্নাত (১০), তার মা সাবেকুন নাহার, নবী হোসেন, মো. ভুলু ও মো. আনাছ। এর মধ্যে আনাছ বাংলাদেশি। তাৎক্ষণিকভাবে আরেকজনের নাম জানাতে পারেননি তিনি। তবে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দাদের কাছ থেকে পাওয়া একটি ভিডিওতে এক যুবককে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি অটোরিকশায় তুলতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার এসআই মিঠুন সিংহ জানান, মর্টারশেলটি সীমান্তে বিস্ফোরিত হওয়ার সংবাদ শুনেছি। তবে এ ঘটনায় আহত বা নিহতের সংখ্যা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। বিস্তারিত পরে জানানো যাবে। ঘুমধুম পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই সোহাগ রানা বলেন, আমরা সীমান্তে যেতে পারি না। সীমান্ত বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলতেও পারি না। এ ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে বিজিবি বা উপজেলা প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, প্রায় এক মাস ধরে সীমান্তে উত্তেজনা চলছে। সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার থেকে মর্টার শেলসহ নানা ভারী অস্ত্রের আওয়াজে এপারের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তমব্রু ও বাইশপারী এলাকার মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। শূন্য রেখায় মর্টার শেল বিস্ফোরণের আগে গতকাল দুপুরেই সীমান্তে মিয়ানমারের পুতে রাখা মাইন বিস্ফোরিত হয়ে এক যুবকের বাম পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এছাড়া গত ৯ সেপ্টেম্বর বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তের বাংলাদেশ অভ্যন্তরে মিয়ানমার থেকে ছোড়া একটি মর্টার শেল এসে পড়ে। গত ১ সেপ্টেম্বর ওই সীমান্ত এলাকা ভারী অস্ত্র ব্যবহারের বিকট শব্দ শোনা যায়। ৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি গোলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকায় পড়ে।
তার আগে ২৮ আগস্ট বিকাল ৩টার দিকে মিয়ানমার থেকে নিক্ষেপ করা একটি মর্টার শেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় ঘুমধুমের তুমব্রু উত্তর মসজিদের কাছে পড়ে। সেদিনই সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান চক্কর দিতে দেখা যায়।
মর্টাল শেল নিক্ষেপ ও গোলাগুলির বিষয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মিয়ানমার সীমান্তে (রাখাইন রাজ্যের তমব্রু এলাকায়) সশস্ত্র বিদ্রোহী আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ চলছে। সংঘর্ষে গুলি ছাড়াও মর্টার শেলের মতো ভারী অস্ত্রও ব্যবহৃত হচ্ছে। যা কিছু ঘটছে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে। এই সমস্যা কূটনৈতিকভাবে সমাধান করা হবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সম্প্রতি বলেছেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা সমাধান করব। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনও সম্প্রতি বলেছেন, এটা উসকানিমূলক না। এটা স্ট্রে (আকস্মিক চলে এসেছে)।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়