মাদক দিয়ে ফাঁসানো পুলিশসহ তিনজন কারাগারে

আগের সংবাদ

বাণিজ্যিক জাগরণের সম্ভাবনা > উত্তর-পূর্বের দুয়ার খুলছে : কানেক্টিভিটিতে গুরুত্ব বাংলাদেশ ও ভারতের

পরের সংবাদ

মিয়ানমার ভূখণ্ডে গোলাগুলি : ফের বাংলাদেশে ঢুকছে রোহিঙ্গা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শামীম ইকবাল চৌধুরী, নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান) থেকে : মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গত মধ্য আগস্ট থেকে চলছে সংঘর্ষ গোলাগুলি। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তঘেঁষা মিয়ানমারের ভূখণ্ডেও চলছে প্রচণ্ড গোলাগুলি। সেখানে ছোড়া বেশ কিছু মর্টারশেল ও ভারী অস্ত্রের গুলি এসে পড়ছে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে। এ পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গারা আবারো বাংলাদেশে প্রবেশ করছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, মিয়ানমারের বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্ত সংলগ্ন এলাকা রাখাইন রাজ্যে সেখানকার বিদ্রোহী গ্রুপ আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে প্রায় এক মাস ধরে মিয়ানমারের সেনাদের তুমুল লড়াই চলছে। মাঝে মধ্যে ওখানকার ছোড়া গুলি আর ভারী মর্টারশেল এসে পড়ছে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে । অব্যাহতভাবে চলা এ সংঘর্ষের প্রভাব পড়ছে সীমান্ত এলাকায়। এ কারণে মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে আবারো বাংলাদেশে প্রবেশ করছেন রোহিঙ্গারা। গত দুদিনে ১০-১৫ জন রোহিঙ্গা ঘুমধুমের পার্শ্ববর্তী কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ও বালুখালী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন।
গতকাল সোমবার সকালে সরজমিন সীমান্তে গিয়ে স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে আরো হাজারো রোহিঙ্গা। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম, তুমব্রু, বাইশফাঁড়িসহ উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করছেন তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঘুমধুমের এক জনপ্রতিনিধি বলেন, কয়েক দিন ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যে সংঘর্ষ চলছে, মিয়ানমারের ভূখণ্ডে চালানো ভারী অস্ত্রের গুলি ও ছোড়া মর্টারশেল এসে পড়েছে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে। তবে এ দেশে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ওই দেশের সংঘর্ষের অজুহাতে রোহিঙ্গারা পালিয়ে আসছেন। সীমান্তে কড়া নজর না রাখলে ঠিক আগের মতো আরো হাজার হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে।
স¤প্রতি মিয়ানমারের আকিয়াব জেলার এশারা বেগম (২৭), সাদেক হোসেন (৪০), মো. তাহের (১৩), মো. শরীফ (৯), বিবি আয়েশা (৭) ও বিবি জান্নাত (৩) পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা জানান, রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও পুলিশ ফের অভিযান শুরু করলেও বর্তমান পরিস্থিতি আগের তুলনায় কিছুটা শান্ত। কিন্তু মালয়েশিয়া থেকে পাঠানো ত্রাণের কথা জেনে তারা বাংলাদেশে চলে আসছেন। কারণ রাখাইন রাজ্যে নির্যাতনের মাত্রা একটু কমলেও রোহিঙ্গাদের কোনো কাজে বের হতে দিচ্ছে না মিয়ানমারের পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অনাহারে-অর্ধাহারে থাকা রোহিঙ্গারা তাই বাংলাদেশে ছুটছেন।
ঘুমধুমের পার্শ্ববর্তী পালংখালী ইউনিয়নের থ্যাংখালী ক্যাম্প-১৯ এর ব্লক-১৬ এর মাঝি আবুল কাসেম (ছদ্মনাম) জানান, কয়েকজন রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসেছেন। বিষয়টি ক্যাম্প ইনচার্জ বরাবর জানানো হয়েছে। তাদের ট্রানজিট ক্যাম্পে নেয়া হচ্ছে।
ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান এম

কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ওই দেশের বিদ্রোহী গ্রুপ আরাকান আর্মির সঙ্গে প্রায় এক মাস ধরে পাল্টাপাল্টি গোলাগুলি শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। বেশ কিছু গুলি আর ভারী মর্টারশেল এসে আমাদের ভূখণ্ডে পড়েছে। তবে সেই ছুড়ে আসা অস্ত্রে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। সীমান্তের মানুষ নির্ঘুমে দিন কাটাচ্ছেন আতঙ্কে। মিয়ানমারের হেলিকপ্টার ও যুদ্ধ বিমান সীমান্ত ঘেঁষে আনাগোনা করতে দেখা যায়।
উখিয়ার পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান গফুর চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারের বলিবাজার ও সাপ বাজার থেকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ পালিয়ে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। তারা বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা ফেরদৌস বলেন, বিভিন্ন জনের ফেসবুক সূত্রে কক্সবাজার জেলার আওতাধীন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে কিছু রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করার খবর জানা গেছে। তবে অনুপ্রবেশ কতটুকু সত্য তা জানার চেষ্টা করছি। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্তের পয়েন্টগুলোতে কড়া নজরদারী করছে সীমান্তের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এখনো তেমন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়োজিত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরান হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত এ রকম কোনো তথ্য আমরা পাইনি। বিষয়টি দেখছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়