৪ বোন চুরি করেই পালাত অন্য জেলায়

আগের সংবাদ

সফরে প্রাপ্তির পাল্লাই ভারী

পরের সংবাদ

সিইসি : রাজনৈতিক সমঝোতা হলে সব ভোট ব্যালটে হবে

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমে ভোটগ্রহণের চেয়েও দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে আরো ‘বড় সংকট’ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, কাজেই বড় ধরনের সংকট ইভিএমে নয়, আপনারাও জানেন সেটা কী। ওই সংকট নিরসন হলে নির্বাচনটা সুন্দরভাবে ওঠে আসবে। এ সময় তিনি সুষ্ঠু ভোটের জন্য দলগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক সমঝোতার ওপর বিশেষ জোর দেন।
গতকাল বুধবার নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের জন্য যেটা প্রয়োজন, ইভিএমে ভোট করলাম কি করলাম না, সেটা নয়, নির্বাচনটা সঠিক, অবাধ, নির্বিঘœ হল কিনা- সেটা হওয়াটাই বড় কথা।
গত মঙ্গলবার রাজনৈতিক ‘ঐকমত্য ছাড়া’ জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্তকে ‘অযৌক্তিক’ আখ্যায়িত করে নির্বাচন কমিশনকে তা থেকে সরে আসার আহ্বান জানান দেশের ৩৯ নাগরিক। এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে ইভিএমের ফলাফল নিয়েও ‘কারসাজি’ করা যায়। এছাড়া মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত কারিগরি টিমও নির্বাচনী ফল ‘বদলে’ দিতে পারে। তারা মনে করেন, কমিশনের এ সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক। এটি রাজনৈতিক বিতর্ককে আরো উসকে দেবে এবং কমিশনের বর্তমান আস্থার সংকটকে আরো প্রকট করে তুলবে।
তবে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, ইভিএম নিয়ে কোনোভাবেই রাজনৈতিক সংকট প্রকট হবে না। ইভিএম নিয়ে যদি কোনো রাজনৈতিক সংকট হয়, সংকট মোকাবিলার ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা ইভিএম নিয়ে কোনো সংকট দেখছি না।
সিইসি বলেন, আমরা বরং রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে যে সংকটগুলো দেখছি, সেই সংকটটা ইভিএম নিয়ে নয়, আরো মোটা দাগের সংকট। আমরা আশা করি, দোয়া করি, এ সংকটগুলো কেটে যাক। সংকট কেটে গিয়ে যদি রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে ফায়সালা হয় সব ভোট ব্যালটে হবে, যদি শতভাগ সমঝোতায় হয়, অসুবিধা কি। তখন আমরা সিদ্ধান্ত নেব, সব দল যখন নির্বাচনে আসছে, তাহলে সেটা ভালো উদ্যোগ।
নির্বাচন কমিশন গত কয়েক বছরে ‘হাজার হাজার নির্বাচনে হাজার হাজার ইভিএম ব্যবহার করেছে’ মন্তব্য করে সিইসি বলেন, আমাদের যন্ত্রে ম্যালফাংশন করেছে- এমনটি ঘটেনি। তিনি বলেন, প্রায় সব দল ইভিএম দেখেছে। তবে বাজারে যে কথা চালু রয়েছে, ডিজিটাল জালিয়াতির পক্ষে আমরা কোনো প্রমাণ পাইনি।
ইভিএম নিয়ে আর্থিক সংকটের বিষয়টি মন্ত্রণালয় দেখবে বলে মন্তব্য করেন সিইসি। তিনি বলেন, একটা সুন্দর, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমার এটা লাগবে, সরকার যদি বলে পয়সা দিতে পারবে না, আমরা তো জোরাজুরি করব না দেশের মানুষকে আর্থিক সংকটে ফেলে। সিদ্ধান্ত হয়েছে ১৫০টি আসনে ইভিএমে করার, আর ১৫০টি আসনে ব্যালটে ভোট করার। কোনো পরিবর্তন করতে হলে আমাদের পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আলোচনা করতে হবে।
ইভিএমে আগামী নির্বাচন করলে কোনো ডিজিটাল কারচুপি হবে না দাবি করে তিনি বলেন, ইভিএমে ডিজিটাল জালিয়াতি নিরসনে প্রচুর সময় নেয়া হয়েছে, যাচাই-বাছাই করে দেখা হয়েছে।
সিইসি বলেন, ভিভিপিএটি দিয়ে কে কাকে ভোট দিল জানা যায়, যেটা ভারতের ইভিএমে আছে। ভারতের যত নির্বাচন হয়েছে, ওই পেপার ট্রেইল দিয়ে হেরে যাওয়ার পর কেউ এমপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন, এমন নজির নেই।
সিইসি আরো বলেন, ভারত কিন্তু বায়োমেট্রিক দিতে পারেনি আমাদের ইভিএমের মতো। ইউরোপের কথা বলা হচ্ছে। সেটা আমি জানি না কী জন্য তারা ইভিএম তুলে দিয়েছে। ওদের ওখানে সভ্যতা ও নিয়মতান্ত্রিকতা এমন একটা পর্যায়ে এসেছে যে ইভিএম হলেই কী আর ব্যালট হলেই কী।
তিনি বলেন, ইভিএমের পক্ষে যারা বলেছেন, তারা একেবারেই কম নয়। আমরা তাদের ভোটাভুটির জন্য ডাকিনি, মতামতের জন্য ডেকেছিলাম। আমরা সুবিধাগুলো তুলে ধরেছি। কারচুপি ও সহিংসতা নিঃসন্দেহে কমে যাবে। আমরা স্টাডি করেছি, ওখানে আমার ভোট আপনি, আপনার ভোট আমি দিতে পারবো না। ওখানে জোরাজুরি, সহিংসতা অনেকখানি কমে যাবে। ব্যালট ছিনতাই এর মতো ঘটনা ঘটবে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়