৪ বোন চুরি করেই পালাত অন্য জেলায়

আগের সংবাদ

সফরে প্রাপ্তির পাল্লাই ভারী

পরের সংবাদ

ভারতীয় ব্যবসায়ীদের পাশে পেল বাংলাদেশ > মুক্তিযুদ্ধে ভারতবাসীর আত্মত্যাগের কথা ভুলবে না বাংলাদেশ : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আর্থিকভাবে আরো শক্তিশালী হওয়ার জন্য ভারত সরকার এবং ভারতীয় ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের পাশে পেল বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের প্রথমদিনই পৃথিবীর তৃতীয় শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির সঙ্গে বৈঠকের পর গতকাল বুধবার ভারতীয় অন্যান্য ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠকে তারাও বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করায় বাংলাদেশের পুরো অর্থনৈতিক চিত্র পাল্টে যাওয়ার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। প্রসঙ্গত, এরইমধ্যে ভারত পৃথিবীর পঞ্চম অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটি তৃতীয় অর্থনৈতিক শক্তি হতে চায়। এ কারণে ভারতের জন্য বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের বাজার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের তৃতীয় দিন গতকাল বুধবার উচ্চপর্যায়ের ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একটি বৈঠকের পর এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। দিল্লির একটি হোটেলে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (সিআইআই) যৌথভাবে এই বৈঠকের আয়োজন করে।
এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতীয় ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের অবকাঠামো, প্রকল্প, শিল্পকারখানা, জ্বালানি এবং পরিবহন খাতে বাংলাদেশে সম্ভাব্য বিনিয়োগ বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করব। ভারতীয় বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান কম সময়ে, সাশ্রয়ী ব্যয় এবং স্বল্পসম্পদে উৎপাদিত পণ্যের বিক্রয়ের নিশ্চয়তাসহ বাই-ব্যাক

ব্যবস্থার মাধ্যমে বাংলাদেশে শিল্প স্থাপন করতে পারেন। তবে বাংলাদেশে বিনিয়োগের বিষয়ে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে কয়েকটি প্রতিবন্ধকতার কথা জানান। তারা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, লাল ফিতার দৌরাত্ম্য, অবকাঠামো ও কানেকটিভিটির দুর্বলতা, বন্দর দুর্বলতা দূর করার আহ্বান জানান।
বৈঠকের বিষয়ে এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যবসা স¤প্রসারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার তাগিদ দিয়েছেন দুই দেশের ব্যবসায়ীরা। ভারতের ব্যবসায়ীরা সোলার এনার্জি, বায়ু বিদ্যুৎ এবং প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছেন। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরাও ভারতে বিনিয়োগ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের প্রতিনিধি দলে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমানও। সফরের ফাঁকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডেকে দেয়াকে সাক্ষাৎকারে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিশেষ সম্পর্কের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এটি কেবল শুরু। আমাদের মধ্যকার ঘনিষ্ঠ এবং ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক দেখে আমি খুব আত্মবিশ্বাসী। এখানে (বিনিয়োগের) বিশাল সুযোগ রয়েছে। ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা যখন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে, তখন শুধু বাংলাদেশের বাজারের দিকে তাকানো উচিত নয়। তাদের উচিত এটিকে ভারতের উত্তর-পূর্বের সঙ্গে একত্রিত করা। এর কারণ হলো- আমরা এখন যোগাযোগের পাশাপাশি সড়ক, রেল ও নৌপথে কানেক্টিভিটির বিষয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করছি। বাংলাদেশ ভারতীয় কোম্পানিগুলোর জন্য একটা বিশাল বাজার হয়ে উঠবে।
বিশ্লেষকদের মতে, সাদা চোখে হয়ত দেখা যাবে চার দিনের সফর শেষে আজ বৃহস্পতিবার বিকালে দিল্লি থেকে খালি হাতে ঢাকা ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিরোধীদের যুক্তি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে কুশিয়ারা নদীর পানি ভাগাভাগি কিংবা ভারত থেকে বাংলাদেশের জ্বালানি তেল কেনার ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হলেও তিস্তা কিংবা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের মতো ইস্যুতে রফা হয়নি। তবে তার থেকেও বাংলাদেশের জন্য এই মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ ‘অর্থ’। কারণ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কেবল গার্মেন্ট শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। এক্ষেত্রে আরো বিকল্প অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের প্রয়োজন। বাংলাদেশের শিল্পপতিরা সুযোগ পেয়েও সরকারকে সঙ্গে নিয়ে ব্যবসার ক্ষেত্র চাঙ্গা করতে ব্যর্থ হয়েছে। যার ফল ভুগছে বাংলাদেশের মানুষ। করোনাকালে দেখো গেছে, শিল্পে ধসের জন্য বহু মানুষ কর্মহারা হয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে ভারতীয় শিল্পপতিরা বাংলাদেশে যদি ব্যবসার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ করতে পারে, বিনিয়োগ করতে পারে, তাহলে ভারতের মতো বাংলাদেশেও অর্থনীতির একাধিক ক্ষেত্র তৈরি হবে। এও দেখা গেছে, বাংলাদেশে দুর্নীতির যে বাড়বাড়ন্ত তার সঙ্গে জড়িয়েছে ভারতও। প্রতিবেশি দেশ হওয়ার সুবাদে দুর্নীতিবাজরা দুই দেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে দুর্নীতির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিকভাবে যার ক্ষতির শিকার ভারত ও বাংলাদেশ। এ অবস্থায় দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে সম্মত হয়েছে ভারত ও বাংলাদেশ। দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ‘পাচার দুর্নীতি’ নিয়ে আগে থেকেই ‘কথা’ চলছিল। শেখ হাসিনার এই সফরে তা আরো মজবুত হল। পাশাপাশি দুই দেশের ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরা দুর্নীতিকে দূরে রেখে বড় শিল্পক্ষেত্র গড়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। গতকালের বিজনেস সামিটে সেই শিল্পক্ষেত্র কোন প্রক্রিয়ায় এবং কিভাবে গড়া হবে তার প্রাথমিক খসড়া তৈরির বিষয়টি আলোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে। বিশেষ করে আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে যেসব জটিলতা আছে তা সরলীকরণেরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে গতকালের বিজনেস সামিটে।
এদিকে, ভারতের বাজারে বাংলাদেশ ১২টি নতুন পণ্যের প্রবেশাধিকার চায় বলে জানিয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন। গতকালের বৈঠকে জসিম জানান, ১২টি নতুন পণ্য ভারতের বাজারে দিতে চান বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে বাংলাদেশের সিরামিকস, পাটসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে আগ্রহ দেখিয়েছেন ভারতের ব্যবসায়ীরা। তিনি জানান, বাংলাদেশে বিনিয়োগের বিষয়ে ভারতের ব্যবসায়ীরা আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, কিন্তু তারা কয়েকটি প্রতিবন্ধকতার কথা বলেছেন। এফবিসিসিআই সভাপতি আরো জানান, বিনিয়োগ সহজ করতে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা ভিসা জটিলতা দূর করার কথা বলেছেন। অন্যদিকে ভারতের বাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নীতি সংশোধন চেয়েছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা।
হাজার হাজার ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে কাজ করছে : দুই দেশের বন্ধুত্বকে কাজে লাগিয়ে বৃহত্তর লাভের জন্য ভারতের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, হাজার হাজার ভারতীয় নাগরিক এখন বাংলাদেশে কাজ করছেন। তারা উভয় দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। এফবিসিসিআই ও সিআইআই আয়োজিত ব্যবসায়িক বৈঠকে তিনি আরো বলেন, আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ ও ভারতের বিদ্যমান বন্ধুত্বের গভীর বন্ধন ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে এবং বিকশিত হবে। সেজন্য দুই দেশের ব্যবসায়ী স¤প্রদায়ের উচিত আরো কাছাকাছি আসা এবং আমাদের জনগণের পারস্পরিক সমৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে যথাযথ ভূমিকা পালন করা। এর মধ্য দিয়ে আমরা এ অঞ্চলে সমৃদ্ধি ও শান্তি আনতে সক্ষম হব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন এবং বাণিজ্য অংশীদার। গত দশ বছরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সন্তোষজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই বাণিজ্য ভারসাম্য ভারতের দিকেই অনেকটা ঝুঁকে আছে। বাংলাদেশ এখন উন্নত উৎপাদন সক্ষমতা নিয়ে প্রতিযোগিতামূলক দামে মানসম্পন্ন পণ্য ভারতের বাজারে সরবরাহ করতে প্রস্তুত। তাই আমরা ভারতীয় আমদানিকারকদের আমন্ত্রণ জানাতে চাই, বহু দূরের দেশ থেকে বেশি দামে আমদানির বদলে বাংলাদেশি পণ্যের দিকে আপনারা নজর দিতে পারেন।
শেখ হাসিনা বলেন, এ অঞ্চলের সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ সুবিধা বাংলাদেশই দিচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের জন্য আছে আকর্ষণীয় প্রণোদনা নীতি। এ খাতের উন্নয়নে ধারাবাহিক সংস্কার চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। শিল্প, কর্মসংস্থান, উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধি এবং পণ্যের বহুমুখীকরণের মাধ্যমে বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে সারাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ২৮টি হাইটেক পার্ক স্থাপন করার কথাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য মোংলা এবং মিরসরাইয়ে দুটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করা হচ্ছে। আমি আজ এখানে উপস্থিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেখানে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানাব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশের সুবিধাজনক অবস্থানের কারণে ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা তাদের পণ্য কেবল ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোতে নয়, নেপাল, ভুটান এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতেও রপ্তানি করতে পারবেন। শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতির চলমান সংকটের কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই সংকট পণ্য পরিবহন ব্যবস্থাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছে। এতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোসহ অনেক দেশই তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে। তবে এটা আনন্দের বিষয় যে চলমান চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও ভারত বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির অন্যতম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে বাংলাদেশও একটি সার্বভৌম, স্বাধীন দেশ হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ বাস্তবায়নে ‘অনেক দূর’ এগিয়েছে। দুর্ভিক্ষ ও খাদ্য-সহায়তার ওপর নির্ভরতা কাটিয়ে বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বাংলাদেশ এখন চাল, শাকসবজি, শস্য ও মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে বিশ্বের বড় উৎপাদক দেশগুলোর অন্যতম। অতীতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার বাংলাদেশ এখন দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং ব্যবস্থাপনায় বিশ্বব্যাপী ‘উদাহরণ’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এখনই সবচেয়ে ‘ভালো’ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ সম্পর্ক এখন প্রতিবেশীদের কূটনীতির ‘রোল মডেল’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সেপা চুক্তি হতে সময় লাগবে : বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি বলেছেন, ‘ক¤িপ্রহেনসিভ ইকনোমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট’ বা ‘সেপা’ অবশ্যই হবে ভারতের সঙ্গে, তবে কিছুটা সময় লাগবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটি করতে চায় বাংলাদেশ। গতকাল বুধবার দিল্লিতে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সাংবাদিকদের এসব কথা জানিয়েছেন। বাণিজ্যমন্ত্রী আরো জানান, ইলেকট্রিক গাড়ি বা হাইব্রিড অটোমোবাইলে বিনিয়োগ করতে চায় অশোক লেল্যান্ডের মতো বড় ভারতীয় প্রতিষ্ঠান।
মুক্তিযুদ্ধে ভারতবাসীর আত্মত্যাগের কথা বাংলাদেশ কখনো ভুলবে না : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধে ভারতবাসী ও দেশটির স্বশস্ত্র বাহিনীর আত্মত্যাগের কথা বাংলাদেশ কখনো ভুলে যাবে না। গতকাল বুধবার দিল্লিতে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বা গুরুতর আহত ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর অফিসারদের বংশধরদের ‘মুজিব বৃত্তি’ দেয়ার অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশিদের মতো ভারতীয়রাও জীবন দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধে, এই অবদান যাতে কেউ ভুলে না যান, সেই আহ্বান সবার প্রতি। বন্ধুপ্রতিম দেশের এমন আত্মত্যাগের কথা স্মরণ রাখলেই দু’দেশের সুসম্পর্ক অটুট থাকবে। গেল ৫০ বছরে দুদেশের সম্পর্ক মজবুত হয়েছে। প্রতিবেশী দেশের কূটনীতিতে বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক বিশ্বে সৌহার্দ্যরে নতুন নজির তৈরি করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, এই বন্ধুত্ব যেন চিরদিন অটুট থাকে, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা। দুই দেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন বজায় থাকুক এটাই চাওয়া। এ সময় যুব স¤প্রদায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন, দু’দেশের যুব স¤প্রদায়ের উচিত অতীত থেকে শিক্ষা নেয়া। ইতিহাস জানতে হবে। কেননা, তারাই হবে নতুন নেতৃত্ব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যেকার সম্পর্ক কৌশলগত অংশীদারিত্বের ঊর্ধ্বে এবং গত এক দশকে তা আরো জোরদার হয়েছে। তিনি বলেন, গত ৫০ বছরে একটি শক্তিশালী অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার পর, উভয় দেশই ক্রমবর্ধমান বিস্তৃত সেক্টরাল সহযোগিতায় কাজ করছে। সামুদ্রিক ও স্থল সীমানা নির্ধারণের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যার সমাধান সেই প্রভাবের সাক্ষ্য বহন করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সম্পর্কটি বিশ্বব্যাপী প্রতিবেশী কূটনীতির জন্য ‘রোল মডেল’ হিসেবে পরিচিত।
তিনি বলেন, ২০০টি মুজিব স্কলারশিপ, দশম শ্রেণিতে ১০০টি এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে ১০০টি; যুদ্ধের ভারতীয় প্রবীণ সৈনিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তাদের বংশধরদের জন্য আমাদের এই শুভেচ্ছা উপহার, যারা আমাদের জন্য ১৯৭১ সালে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ভারতীয় ভাইদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে তাদের অমূল্য জীবন উৎসর্গ করেছেন এবং রক্ত দিয়েছেন। যারা তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের স্মরণ করা আমাদের জন্য সর্বদা গর্বের বিষয়। আপনাদের আমার অভিবাদন, হে সাহসী হৃদয়, আমাদের বীরদের!

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়