এশিয়া কাপ : হংকংকে লজ্জায় ডুবিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

আগের সংবাদ

বন্ধুত্ব সুসংহত করার প্রত্যয় : বাংলাদেশে চীনা বলয় ঠেকাতে চায় দিল্লি > পানিসহ সীমান্ত সুরক্ষায় সমাধান চায় ঢাকা

পরের সংবাদ

গ্রেপ্তারের পূর্বানুমতি থাকলে মামলার তদন্ত শেষ হবে না : হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ফৌজদারি অপরাধ করলেও সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারের আগে অনুমতির নেয়ার বিধান বহাল থাকলে তাদের বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত কার্যক্রম কোনো দিন শেষ হবে না। হাইকোর্টের প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ রায়ে এমন পর্যবেক্ষণ দেয়া হয়েছে।
গতকাল শনিবার হাইকোর্টের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত অনুলিপি প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, গত ২৫ আগস্ট সরকারি চাকরি আইনের ৪১ (১) ধারা বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্টের বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চ। আইনটির ৪১ (১) ধারা মতে, কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সম্পর্কিত অভিযোগে করা ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ার আগে তাকে গ্রেপ্তার করতে হলে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করতে হবে। এই ধারা বাতিল করে দুই বিচারপতির সইয়ের পর ওই রায়ের ১৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
রায়ে বলা হয়, সংবিধানের আর্টিকেল ২৬, ২৭ ও ৩১ এ নির্দেশনা রয়েছে সব ক্ষেত্রেই আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে। আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান। কিন্তু ৪১ (১) ধারায় নির্দিষ্ট একটি সেকশনকে সুরক্ষা দেয়া হয়। এমন আইন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সংবিধানে বলা আছে, মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি যে কোনো আইন বাতিলযোগ্য হবে। উচ্চ আদালত আরো বলেন, দুদক আইনে

৩২ক ধারায় এমন সুরক্ষা দেয়া হলেও আদালত তা বাতিল করে এবং সরকার পক্ষ সেই রায়ের বিরুদ্ধে কোনো আপিল করেনি।
রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট আরো বলেন, আমাদের দেশে প্রচলিত রীতি (কমন প্র্যাকটিস) হচ্ছে কোনো ফৌজদারি মামলার তদন্ত শেষ হতে দীর্ঘ সময়, এমনকি বছরের পর বছর লেগে যায়। এক্ষেত্রে যদি আইনের এই বিধান (পূর্বানুমতি) বহাল থাকে, তাহলে সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে করা ফৌজদারি মামলার তদন্ত কোনো দিন শেষ হবে না।
গত ১ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারের আগে অনুমতির নেয়ার বিধান বাতিল করে হাইকোর্টের দেয়া রায় ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত আপিল বিভাগে স্থগিত করা হয়। এই সময়ের মধ্যে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করার নির্দেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত।
২০১৮ সালের নভেম্বরে সরকারি চাকরি আইন প্রণয়ন করা হয়। ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে একই বছরের ১ অক্টোবর থেকে আইনটি কার্যকর হয়। এ অবস্থায় সরকারি কর্মচারীদের বিশেষ সুবিধাসংক্রান্ত আইনের ৪১ (১) ধারাটি সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদ পরিপন্থি উল্লেখ করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর হাইকোর্টে একটি রিট করা হয় রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ২১ অক্টোবরে হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে সরকারি চাকরি আইনের ৪১ (১) ধারাটি কেন সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদ পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। এই রিট মামলায় এইচআরপিবির পক্ষে রিট পিটিশনার ছিলেন এডভোকেট ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, এডভোকেট একলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া এবং এডভোকেট মাহবুবুল ইসলাম। বিবাদীরা ছিলেন ক্যাবিনেট সচিব, রাষ্ট্রপতির সচিব, প্রধানমন্ত্রীর অফিসের সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, আইন সচিব, জাতীয় সংসদ সচিবালয় সচিব, জাতীয় সংসদের স্পিকার এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান। বাদী পক্ষে শুনানি করেন এডভোকেট মনজিল মোরসেদ। দুদকের পক্ষে ছিলেন এডভোকেট খোরশেদ আলম খান আর সরকারের পক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়