যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি

আগের সংবাদ

সংঘর্ষে চার জেলা রণক্ষেত্র : নারায়ণগঞ্জ মানিকগঞ্জ সিরাজগঞ্জ নেত্রকোনায় বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ : নিহত ১, আহত দুই শতাধিক

পরের সংবাদ

বিশ্বকাপে কঠিন গ্রুপে বাংলাদেশের মেয়েরা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ব্যাংককে ২০০৪ সালে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। প্রথম দুই ম্যাচেই জয়ের তৃপ্তি নিয়ে টাইগ্রেস বাহিনী সেবছরই এসিসি নারী টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে জিতে নেয় শিরোপা। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি সালমা খাতুনের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দলকে। তবে ২০১১ সালে কোচ মমতা মাবেনের অধীনে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অর্জন করে টাইগ্রেসরা। সেবার নিজেদের মাটিতে আয়োজিত নারী বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব ৫ম স্থানে থেকে শেষ করলেও যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ৯ উইকেটের জয়ের মধ্যদিয়ে নেদারল্যান্ডসকে হটিয়ে বাংলাদেশ দল প্রথমবারের মতো লাভ করে ওয়ানডে স্ট্যাটাস। ২০২২ সালে প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেয়েই পাকিস্তানকে হারিয়ে ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দেয় টাইগ্রেসরা।
২০১২ সালে ঘরের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২ রানে হারা সাকিব-তামিমরা পরের দুই ফাইনালে হারে ভারতের বিপক্ষে। তবে সেই ভারতের মেয়েদের হারিয়েই ২০১৮ সালে এশিয়ার ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে টাইগ্রেসরা। কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত মেয়েদের ওই টুর্নামেন্টের সপ্তম আসরে আরো প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে স্বাগতিক মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, শ্রীলংকা এবং থাইল্যান্ড। কোচ অঞ্জু জৈনের অধীনে বিধ্বংসী হয়ে ওঠা বাংলাদেশ সেমিফাইনালে স্বাগতিকদের ৭০ রানে হারিয়ে প্রথমবার ফাইনালে মুখোমুখি হয় আগের সবগুলো আসরের চ্যাম্পিয়ন ভারতের। গ্রুপ পর্বেও ভারতকে হারিয়ে আসার পর রুদ্ধশাস ফাইনালে তিন উইকেটের জয়ে ভারতের পর একমাত্র দল হিসেবে এশিয়া কাপ ঘরে তোলে সালমা-জাহানারারা।
এবার দুবাইয়ের শেখ জায়েদ স্টেডিয়াম ও পাশেই একাডেমি মাঠে ১৮ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর হবে নারীদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব। এবার নারীদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ কিছুটা কঠিন গ্রুপেই পড়েছে। গ্রুপ পর্বেই লড়াই করতে হবে আয়ারল্যান্ডের গ্রুপে।‘এ’ গ্রুপে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের সঙ্গী স্কটল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্র। ‘বি’ গ্রুপে খেলবে থাইল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে, পাপুয়া নিউগিনি ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। দুই গ্রুপ থেকে একটি করে দল খেলবে বাছাইপর্বের ফাইনাল, ওই দুই দলই ২০২৩ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নেবে। ২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অবস্থানের ভিত্তিতে এবার সরাসরি বাছাইপর্বে খেলছে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড। বাকিরা নিজেদের অঞ্চলের সেরা দল হিসেবে বাছাই খেলবে।
১৮ সেপ্টেম্বর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে বাংলাদেশের লড়াই। ১৯ সেপ্টেম্বর খেলা স্কটল্যান্ডের সঙ্গে, ২১ সেপ্টেম্বর প্রতিপক্ষ যুক্তরাষ্ট্র। টুর্নামেন্টের দুটি সেমি-ফাইনালই হবে ২৩ সেপ্টেম্বর ও ফাইনাল হবে ২৫ সেপ্টেম্বর। নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অষ্টম আসরের আয়োজক দক্ষিণ আফ্রিকা। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে ১০ দলের এই টুর্নামেন্ট। এখন অবধি তিনবার বাছাই পর্ব খেলে প্রতিবারই বাধা টপকে গেছে বাংলাদেশের মেয়েরা।
এ বছর নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রথম খেলতে গিয়ে ইতিহাস গড়েছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়েছে, বেশ কয়েকটি ম্যাচে দারুণ লড়াই করেছে ম্যাচের শেষ অবধি। ব্যাট হাতে উজ্জ্বল না হলেও নিগার সুলতানা জ্যোতির নেতৃত্বের বেশ বড় ভূমিকা ছিল এমন লড়াইয়ের পেছনে।
নিজের পারফরম্যান্সকে অবশ্য কাঠগড়ায় তুলেছেন নিজেই। টাইগ্রেস অধিনায়ক স্বপ্ন দেখিয়েছেন বাংলাদেশকে পরের বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলানোর। এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব পেরিয়ে মুল পর্বে ভাল করাতে মরিয়া টাইগ্রেসরা।
২০২৪ থেকে ২০২৭ পর্যন্ত নারীদের চারটি বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের আয়োজক চূড়ান্ত করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। ২০২৪ সালে নারীদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজক বাংলাদেশ। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ১০ দলের এই আসরে মোট ম্যাচ হবে ২৩টি।
২০১৪ সালের পর আবারও নারীদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব পেয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া ২০২৫ সালে নারীদের বিশ্বকাপ আয়োজন করবে ভারত।
২০২৬ সালে নারীদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হবে ইংল্যান্ডে এবং ২০২৭ সালে নারীদের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজক হয়েছে শ্রীলঙ্কা।
এবার লন্ডনে আইসিসির বোর্ড সভায় আয়োজকদের নাম চূড়ান্ত করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ক্লেয়ার কনর, সৌরভ গাঙ্গুলী এবং রিকি স্কারিটসহ মার্টিন স্নেডেনের সভাপতিত্বে একটি উপ-কমিটির তত্ত্বাবধানে একটি প্রতিযোগিতামূলক বিডিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আয়োজকদের নির্বাচন করা হয়েছে। আইসিসি বোর্ড কমিটির সুপারিশ গ্রহণ করে এই উপ-কমিটি প্রতিটি বিডের পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা পরিচালনা করে।
বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজন বলেছেন, ‘আইসিসি নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৪-এর আয়োজক স্বত্ব পাওয়া বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য দুর্দান্ত খবর। বিসিবির পক্ষ থেকে, আমি এই সুযোগটির জন্য আইসিসি বোর্ডকে ধন্যবাদ জানাই যখন নারীদের খেলার বিকাশ ও প্রসার ঘটছে এমন সময়ে বাংলাদেশকে নারীদের ইভেন্টটি উপহার দেওয়ার জন্য।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘বিশেষ করে, এটি বাংলাদেশের মহিলা ক্রিকেটের জন্য একটি বাঁক বদলের মুহূর্ত হবে। কারণ, এই ইভেন্টটি ছোট ছোট মেয়েদে এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষী নারী ক্রিকেটারদের বড় স্বপ্ন দেখাতে অনুপ্রাণিত করবে। আমাদের নারীরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ধীরে ধীরে উন্নতি করেছে এবং ঘরের মাঠে এই বিশ্ব ইভেন্টটি আমাদের দেখানোর একটি আদর্শ সুযোগ হবে যে আমরা সেরাদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করতে পারি। বাংলাদেশের হাই প্রোফাইল আইসিসি ইভেন্ট আয়োজনের একটি সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রয়েছে এবং আমার কোন সন্দেহ নেই যে আমরা ২০২৪ সালে একটি বিশ্বমানের টুর্নামেন্ট উপহার দেবো।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়