ঢাবি সাংস্কৃতিক : সংসদের আয়োজন চিঠি লেখা যাবে ‘প্রিয় বঙ্গবন্ধু’কে

আগের সংবাদ

নান্দনিক বঙ্গবন্ধু

পরের সংবাদ

এশিয়া কাপে তুরুপের তাস সাব্বির-সাইফ

প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : যাহা রটে তাহা কিছু হলেও ঘটে। টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব ফিরে পাওয়ার গুঞ্জন উঠার পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ শোরগোল উঠেছে যে, অধিনায়কত্ব গ্রহণ করলে আসন্ন এশিয়া কাপে সাব্বির ও সাইফউদ্দিনকে নিয়ে খেলবেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ঘটেছে তা-ই। কেননা এশিয়া কাপে সাকিব আল হাসানের তুরুপের তাস সাব্বির রহমান ও সাইফউদ্দিন আহমেদ। ব্যক্তিগতভাবে সাইফউদ্দিনকে ফোনও করেছিলেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। যার কারণে এলাকা ছেড়ে সাইফ আবারো মন দিয়েছে ক্রিকেট নেটে। বেটউইনারের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতির সঙ্গে গতকাল আলোচনা করেন সাকিব আল হাসান। আলোচনা শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে সাকিব আল হাসান কোনো কথা না বললেও পরবর্তীতে কথা বলেছেন বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস। এরপর আসন্ন এশিয়া কাপের জন্য ১৭ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে বিসিবি। যেখানে দীর্ঘদিন পর খেলার সুযোগ পেয়েছেন সাব্বির রহমান ও সাইফউদ্দিন আহমেদ। এই দুই নামই এতদিনের গুঞ্জনকে বাস্তব রূপ দিয়েছে। একইসঙ্গে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব ফিরে পেয়েছেন সাকিব আল হাসান। আসন্ন এশিয়া কাপ, ত্রিদেশীয় সিরিজ ও অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের নেতৃত্ব দেবেন সাকিব। চলতি মাসের ২৭ তারিখ থেকে আবুধাবিতে মাঠে গড়াবে এশিয়া কাপের ১৫তম আসর। এশিয়া কাপ এবার ৫০ ওভারের পরিবর্তে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত হবে। আর এদিকে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের শক্তি অনেকটাই কম। এই কয়েকমাসের মধ্যে পরপর দুইটি সিরিজ হেরেছে টাইগাররা। যেখানে প্রতিপক্ষের বিপক্ষে প্রতিদ্ব›িদ্বতা তৈরি করতেই বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। এরপরও আশানুরূপ সাফল্য এনে দিতে পারেনি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা। যার কারণে আলোচনা-সমালোচনার পর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই সমালোচনার সূত্র ধরেই এখন নেতৃত্বের ভার পেলেন সাকিব। এশিয়া কাপে সাকিব তার দুইটি প্রধান অস্ত্র ব্যবহার করবেন। টাইগার শিবিরে হার্ড হিটারের অভাব। সেখানে সাব্বির রহমান তার ক্যারিয়ারের প্রথমদিকে কিছুটা আশা জাগালেও নানা কারনে ঝড়ে গেছেন অচিরেই। তবের জাতীয় দলের জার্সিতে খেলেছেন ৪৪টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ। যেখানে ২৪.৮৯ গড়ে করেছেন ৯৪৬ রান। কোনো শতক হাঁকাতে না পারলেও নামের পাশে রয়েছে ৪টি হাফসেঞ্চুরি। টি-টোয়েন্টি আহামরি সাফল্য না পেলেও সাব্বিরকে দলে ফেরানোর প্রধান কারন তিনি দ্রুত রান তুলতে পারেন। যা এই সময়ে টাইগারদের জন্য অতীব জরুরি। এছাড়া সম্প্রতি ফর্মে ফিরেছেন এই হর্ড হিটার ব্যাটার। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের সর্বশেষ আসরে লিজেন্ড অব রূপগঞ্জের হয়ে বেশ দ্যুতি ছড়িয়েছেন। ১৪ ইনিংসে ৩৬.৯১ গড়ে মোট ৫১৫ রান করেন। যেখানে ১২৫ রানের ইনিংসের পাশাপাশি একটি হাফসেঞ্চুরিও রয়েছে। জাতীয় দলের জার্সিতে টি-টোয়েন্টিতে সাব্বির রহমান সর্বশেষ মাঠে নেমেছে ২০১৯ সালে সেপ্টেম্বরে। জিম্বাবুয়ে ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মত্র ১৫ রান করেছেন। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৮৮.৮৯ স্ট্রাইকরেটে করেন ২৪ রান। এরপর শেষ সিরিজের শেষ ম্যাচে মাত্র ১ রান করেই ফিরেছেন সাজঘরে। এই সিরিজে সাব্বির রহমান তার সামর্থ্যরে প্রমান দিতে ব্যর্থ হলেও উজ্জ¦ল ছিল মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। রশিদ খান-মুজিব উর রহমানদের পেছনে ফেলে সর্বোচ্চ উইকেট পেয়েছেন তিনি। চার ম্যাচে পেয়েছেন ৭ উইকেট। যেখানে চার উইকেট পেয়েছেন এক ম্যাচেই। ২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অভিষেক হয়েছিল মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের। এরপর লাল-সবুজের জার্সিতে মাত্র ২৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছে। যেখানে ব্যাট ও বল হাতে অনবদ্য ভূমিকা পালন করেছেন। ১৭ ইনিংসে ১১৫.২৯ স্ট্রাইকরেটে করেছেন ১৯৬ রান। অপরদিকে বল হাতে মাত্র ৮.২৬ ইকনোমিতে ২৯ ম্যাচে নিয়েছে ৩১ উইকেট। টাইগারদের একমাত্র এই পেস অলরাউন্ডার দীর্ঘদিন থেকে জাতীয় দলের বাইরে। একাধিকবার দলে ডাক পেলেও খেলার সৌভাগ্য হয়নি তার। অনুশীলন কিংবা প্রস্তুতি ম্যাচ যেকোনো মুহূর্তেই ইনজুরিরে পড়ে ছিটকে গেছেন সাইফউদ্দিন। জাতীয় দলের জার্সিতে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেছেন প্রায় ১০ মাস আগে। তাও সেটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে ইনজুরিতে পড়েন তিনি। এরপর আর সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে পারেননি। পিঠের ইনজুরির কারণে ক্রিকেটের বাইরে ছিলেন। পুনর্বাসনের পর গত ঢাকা লিগ খেলেছেন। ১৪ ম্যাচে পেয়েছেন ২২ উইকেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজ খেলতে যাওয়ার কথা ছিল তার। সবকিছুই প্রস্তুত ছিল। কিন্তু দেশত্যাগের আগে আবারো কাধের ইনজুরিতে পড়েন তিনি। এর ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ে সফরে খেলতে পারেননি। এই সময়ে ইনজুরির চিকিৎসা নিয়েছেন ভারতের দিল্লিতে। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের এটি প্রথম এশিয়া কাপ। স্বাভাবিকভাবেই প্রথম এশিয়া কাপ নিয়ে বেশ উজ্জীবীত তিনি। এই সম্পর্কে কিছুদিন আগে তিনি বলেছেন, ‘প্রত্যেক খেলোয়াড়েরই লক্ষ্য থাকে এশিয়া কাপ খেলা। আমি অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়েও এশিয়া কাপ খেলিনি। দুটি আইসিসি ইভেন্ট খেললেও এশিয়া কাপে খেলা হয়নি। এটা নিয়ে বাড়তি একটা রোমাঞ্চ কাজ করে। যদি সুযোগ পাই অবশ্যই আনন্দিত হব।’ এবার সেই সুযোগ পেয়েছেন তিনি। অপেক্ষা শুধু নিজেকে প্রমাণ করার। সাব্বির-সাইফউদ্দিনের মতো ফেরার সম্ভাবনা ছিল সৌম্য সরকারের। তাকে টি-টোয়েন্টি দলে ফেরানো নিয়েও অনেকদিন ধরে আলোচনা হচ্ছিল। তবে এবার সুযোগ মেলেনি বাঁহাতি এই ওপেনারের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দল থেকে চোটের কারণে ছিটকে পড়েছেন নুরুল হাসান সোহান, লিটন দাস আর শরিফুল ইসলাম। বাদ পড়েছেন মুনিম শাহরিয়ার আর নাজমুল হোসেন শান্ত। বিশ্রাম শেষে টি-টোয়েন্টি দলে ফিরেছেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর মুশফিকুর রহিম।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়