ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি : রিমান্ড শেষে বিকাশ পরিবহনের চালক কারাগারে

আগের সংবাদ

বহুমাত্রিক হুমকিতে জনস্বাস্থ্য

পরের সংবাদ

ভোলায় বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ, গুলিতে নিহত ১ : থমথমে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন

প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১, ২০২২ , ১:১৯ পূর্বাহ্ণ

এইচ এম নাহিদ, ভোলা থেকে : ভোলায় বিএনপি পুলিশের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৫ পুলিশ সদস্যসহ আহত অর্ধশতাধিক। এ ঘটনায় শহরজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তেল, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি এবং লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল রবিবার ভোলা জেলা বিএনপি বিক্ষোভ সমাবেশ করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আব্দুর রহিম (৪০) গুলিতে নিহত হন। নিহত আব্দুর রহিমের বাড়ি দক্ষিণ দীঘলদীর কোড়ালিয়া গ্রামে। এ ঘটনায় ৫ পুলিশসহ আহত হয় অর্ধশতাধিক।
গতকাল বেলা ১১টার দিকে ভোলা জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ সমাবেশ করাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়। সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ বাঁধা দিলে বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর অতর্কিতে হামলা করে ও ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পুলিশও টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে ৫ পুলিশসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ ৭ জনকে আটক করেছে।
সংঘর্ষের সময় গুলিবর্ষণের ঘটনাও ঘটে। যাতে আবদুর রহিমসহ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। তবে পুলিশ

জানিয়েছে, তারা গুলি ছুড়েনি। তাদের অভিযোগ, বিএনপির দিকে। ভোলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নিরুপমা দে জানিয়েছেন, আবদুর রহিমের শরীরে গুলির চিহ্ন রয়েছে।
ঘটনার পর দুপুর ২টার দিকে জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম নবী আলমগীর তার বাসায় সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশ উসকানিমূলক হামলা ও গুলি করে স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীকে হত্যা করেছে। দেশে এমন কী ঘটনা ঘটেছে যে ভোলার মতো একটি শান্তিপূর্ণ জেলায় বিএনপির রুটিন মাফিক কর্মসূচিতে পুলিশ গুলি করে মানুষ মারতে হবে। এ ঘটনায় জেলা বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন যাদের মধ্যে ১৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতা মোশারেফ হোসেন বলেন, এই সরকার পতনের একেবারে শেষপর্যায়ে। তারা এখন বেঁচে থাকার জন্য ভোলায় বিএনপির কর্মীকে গুলি করে হত্যা করে সারাদেশে আমাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। বিএনপি এত সহজে দমে যাওয়ার দল নয় যে, তারা এ ঘটনায় ভয় পাবে। আমি এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় কেন্দ্রীয় বিএনপির পক্ষ থেকে নিন্দা জানাই। পাশাপাশি অতি উৎসাহী পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
এদিকে ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফরহাদ সরদার সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপির সমাবেশস্থল থেকে কোনো কারণ ছাড়াই পুলিশের ওপর হামলা করে। দোকানপাট লুট করার সময় পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে।
পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বলেন, বিএনপি সমাবেশ থেকে অস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করেছে। তারা কয়েক রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, নিহত আব্দুর রহিম তাদের গুলিতেই নিহত হয়েছেন। আমরা ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত ঘটনা জানাতে পারব। আমরা এ ঘটনায় দোষীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করব। যাতে আন্দোলনের নামে কোনো দল বা গোষ্ঠী জেলার আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে না পারে আমরা সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়