ডাকসু নির্বাচন ঘিরে পদাবনতি : স্বপদে ফিরছেন ঢাবি শিক্ষক শবনম

আগের সংবাদ

ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ১১ আরোহীর মৃত্যু, দায় কার : গেটম্যানের অনুপস্থিতি নাকি মাইক্রোবাস চালকের অবহেলা > গেটম্যান নাজিম আটক

পরের সংবাদ

সংলাপে সিইসি : স্থিতিশীলতার জন্য দলগুলোকে বসার পরামর্শ

প্রকাশিত: জুলাই ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে যদি সহনশীলতা না জন্মায়, তাহলে সংকট থেকে যাবে, নির্বাচনে সহিংসতা কমবে না। আর রাজনীতির মাধ্যমেই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এনে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব হলে ইসির পক্ষে নির্বাচন করা সহজ হবে বলে মন্তব্য করেন সিইসি। সেজন্য নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকে এক অপরের সঙ্গে বসার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপের দশম দিনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
এদিন গণফোরাম এবং ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা। নির্বাচনী সহিংসতার প্রসঙ্গ এ সময় গুরুত্ব পায় সিইসির বক্তব্যে। সিইসি বলেন, রাজনীতির মাধ্যমে যদি পলিটিক্যাল স্থিতিশীলতা এনে নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়, তাহলে ইসির পক্ষে নির্বাচন করাটা অনেক সহজ হয়। আপনাদের সহযোগিতা লাগবে। প্রতিশ্রæতি দিচ্ছি, আপনাদের প্রত্যাশা মতো একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাব। দোয়া করবেন।
তিনি বলেন, আমাদের মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা আছে, আমি ভোট করব এবং আমাকে জিততেই হবে। হারতে যে হতে পারে, এটা কিন্তু কেউ মেনে নিচ্ছে না। এ মনস্তাত্ত্বিক দৈন্য আমাদের মধ্যে আছে। তাই সহনশীলতা যদি জাগ্রত করা না যায়, তাহলে সংকট থেকে যাবে।
সিইসি বলেন, গত বুধবার একটা ঘটনা ঘটেছে (ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে)। নির্বাচন হাড্ডাহাড্ডি যখন হয়, তখন ভোটের শেষে মারামারিটা হয়। গত বুধবার একটি শিশু মারা গেছে। নির্বাচনটা শেষ হয়ে গিয়েছিল এবং মেম্বার প্রার্থী হামলা করে বসল।
সুষ্ঠু নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারছে কিনা- সেই প্রশ্ন তুলেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। রাজনৈতিক সিস্টেম পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে সিইসি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো পদ্ধতিটা উন্নত করতে পারলে ইসির তো কাজই করা লাগে না। তবে আপনারা (রাজনৈতিক দল) যথাযথ সরব ভূমিকা পালন করতে পারছেন কিনা সেটা নিয়ে আমার একটু সংশয় আছে। আমি চাই, আপনারা আরো সরব ভূমিকা পালন করেন। তাহলে আমার জন্য ফিল্ডটা মসৃণ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক এবং অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। আমাদের কাজ হবে নির্বাচনে যাতে ভোটাররা নির্বিঘেœ গিয়ে তাদের ভোটাধিকার স্বাধীনভাবে প্রয়োগ করতে হবে, এই ব্যাপারে আমরা চেষ্টা করব সর্বাত্মক।
এর আগে নির্বাচন ভবনে গণফোরামের সঙ্গে বৈঠকে বসে ইসি। বৈঠকে গণফোরামের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি প্রস্তাবনা উত্থাপন করা হয়। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য- অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা, ইভিএমে ভোট না করা, জাতীয় নির্বাচনের আগে-পরে সেনা মোতায়েন ইত্যাদি।
পরে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপের সঙ্গে সংলাপ করে ইসি। বৈঠকে দলটি সংসদে ভোটের আনুপাতিক হারে প্রতিনিধিত্ব, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা এবং ভোটের আগে ও পরে সেনা মোতায়েনের দাবি জানান।
এ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের প্রস্তাবটি অসম্ভব সুন্দর প্রস্তাব। প্রতিনিধিত্ব নিয়ে আরো কথা বলা দরকার। কমিশনের পক্ষে নয়, আমি ব্যক্তিগতভাবে এটা মনে করি। এটা পরামর্শ করে রাজনীতিবিদরাও দেখবেন, এটা আমাদের দেশের জন্য উপযোগী কিনা? মানুষের সেন্টিমেন্টের সঙ্গে উপযোগী কিনা? রাজনৈতিক দল হিসেবে আপনারা দেখবেন। এটা আপনাদের রাজনৈতিক দায়িত্ব। আপনারা রাজনৈতিক দায়িত্বটা আমাদের ওপর চাপিয়ে দেবেন না। আমাদের সমর্থন হয়তো থাকবে। নির্বাচনে পদ্ধতিগত পরিবর্তন আনতে পারলে শুধু আমরা নয়, ভবিষ্যৎ ইসিকেও পরিশ্রম করতে হবে না। আর গণফোরামের প্রস্তাবগুলোর ব্যাপারে ইসির কিছু করার থাকে না, এগুলো আইন সভার ও রাজনৈতিক বিষয় বলে মন্তব্য করেন সিইসি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়