ঢাবি প্রতিনিধি : ২০১৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সর্বশেষ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে ব্যালট পেপার ক্যালেঙ্কারির ঘটনায় পদাবনতি পাওয়া তৎকালীন হল প্রাধ্যক্ষ শবনম জাহানকে স্বপদে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গত মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড মো. হারুনুর রশীদ খান।
জানা যায়, ২০১৯ সালের ১১ মার্চ ডাকসু নির্বাচনের সময় কুয়েত মৈত্রী হলে সিল দেয়া বস্তাভর্তি ব্যালট পাওয়ার অভিযোগ ওঠে।
এসব ব্যালটে ছাত্রলীগের হল সংসদের প্রার্থীদের পক্ষে ভোট দেয়া ছিল। এরপর হলের ভোটগ্রহণ সাময়িক স্থগিত করা হয় এবং ওই ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তাৎক্ষণিকভাবে শবনম জাহানকে ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে অধ্যাপক মাহবুবা নাসরিনকে হল প্রাধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়া হয়।
পরে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ শবনম জাহানকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।
পরে একই ঘটনার সার্বিক তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হককে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের আরেকটি তদন্ত কমিটি করা হয়। এক বছর পরে ওই কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ২০২০ সালে শবনম জাহানকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত না করে পদাবনতি করা হয়। সেসময় তাকে ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে অবনমিত করা হয়।
তবে পরবর্তী সময়ে সিন্ডিকেটের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন শবনম জাহান। সেই রিটের রায়ে তাকে ‘প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধাসহ’ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পদে পুনর্বহাল করার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। রায়ের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সিন্ডিকেট এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান অধ্যাপক হারুনর রশীদ। তিনি বলেন, হাইকোর্টের রায় বিচার বিশ্লেষণ করে সিন্ডিকেটের সব সদস্য একমত হয়ে তাকে স্বপদে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।