শিনজো আবের প্রতি বিএনপির শ্রদ্ধা

আগের সংবাদ

ভোট ঘিরে তৎপর কূটনীতিকরা

পরের সংবাদ

সেনা নিয়ন্ত্রণে শ্রীলঙ্কা গোটাবায়ার পদত্যাগ : মালদ্বীপ থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে সৌদিতে

প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : কলম্বোতে কারফিউ, পথে পথে টহল দিচ্ছে সৈন্যরা; শৃঙ্খলা রক্ষায় বলপ্রয়োগের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে তাদের। পুলিশের সঙ্গে দাঙ্গা আর বিক্ষোভে উত্তাল শ্রীলঙ্কার রাজধানী অনেকটাই শান্ত ছিল গতকাল। বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ ও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের ভেতরে ও বাইরে অবস্থান নিয়েছেন। কেউ আবার সড়কের পাশে তাঁবু গেড়ে আসন পেতেছেন। গত বুধবার কলম্বোতে যে টালমাটাল পরিস্থিতি বিশ্ববাসী দেখেছে, গতকালের চিত্র ছিল একেবারেই ভিন্ন। গোটাবায়ার ‘বহুপ্রতীক্ষিত’ পদত্যাগপত্র মেলে এদিন বিকালের দিকে। অন্যদিকে থমথমে পরিস্থিতিতে ফের কোনো সহিংসতা যেন না ঘটে, সেজন্য সতর্ক রয়েছে সেনাবাহিনী। তবে রয়টার্স জানিয়েছে, পরিস্থিতি আপাত শান্ত দেখালেও বিক্ষোভকারীরা এখন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের পদত্যাগের অপেক্ষা করছেন।
এর আগে, জনরোষ এড়াতে গত বুধবার কাকডাকা ভোরে কলম্বো ছেড়ে গোপনে পালিয়ে যান গণধিক্কৃত প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে। প্রথমে তিনি ভারত মহাসাগরের আরেকটি দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপে ঠাঁই নেন। সেখান থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরে হাজির হন। সেখান থেকে সৌদি আরবের বন্দর শহর জেদ্দা যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তার। এসবের মধ্যেই সিঙ্গাপুর থেকে গতকাল গোটাবায়া ইমেইল মাধ্যমে পার্লামেন্টের স্পিকারের কাছে তার পদত্যাগপত্র প্রেরণ করেন।
এর আগে গতকাল সকালে মালদ্বীপের সংবাদমাধ্যম জানায়, রাজধানী মালে থেকে সিঙ্গাপুরে উড়ে গেছেন গোটাবায়া। কিন্তু একই সময়ে শ্রীলঙ্কার সংবাদপত্র ডেইলি মিরর জানায়, তখনো মালদ্বীপের রাজধানী মালেতেই রয়েছেন তিনি। গত বুধবার মালে পৌঁছানোর পরে গোটাবায়া টেলিফোনে শ্রীলঙ্কা পার্লামেন্টের স্পিকার ওয়াই অবেবর্ধনেকে জানিয়েছিলেন, বুধবারই পদত্যাগ করবেন। এরপর দুপুরে অবেবর্ধনে সাংবাদিক বৈঠকে

সে কথা জানান। সেই সঙ্গে আগামী ২০ জুলাই নয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কথাও ঘোষণা করেন। কিন্তু গোটাবায়ার পদত্যাগপত্র যথাসময়ে না মেলায় উদ্বেগ তৈরি হয় ধেমটির শীর্ষমহলে। অবশেষে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল নাগাদ তিনি ‘পদত্যাগপত্র’ পাঠিয়েছেন বলে খবর মেলে।
গোটাবায়া ইস্তফা না দিলে শ্রীলঙ্কায় সাংবিধানিক সংকট তৈরির আশঙ্কা হচ্ছিল। যদিও গোটাবায়ার দল শ্রীলঙ্কা পড়ুজনা পেরমুনা (এসএলপিপি)-র সূত্র বলছিল, যে কোনো সময় পদত্যাগের কথা ঘোষণা করতে পারেন তিনি। এদিকে গোটাবায়া দেশ ছাড়ার পরে গত বুধবার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহে অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেও ইতোমধ্যেই বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন তিনিও। গোটাবায়াকে পলায়নে সহায়তা করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। তার সরকারি দপ্তর এবং বাসভবনে হামলা চালিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। গতকাল রনিলের দপ্তরের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে সেনাবাহিনী।
সংঘর্ষে মৃত্যু ১, আহত ৮৪ : শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে গত বুধবার বিক্ষোভ চলাকালে সহিংসতায় একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং আরো ৮৪ জন আহত হয়েছেন বলে হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। বিবিসির প্রতিবেদনে জানা গেছে, পুলিশ বিক্ষোভকারীদের দিকে কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ার পর ২৬ বছর বয়সি ওই ব্যক্তি শ্বাসজনিত সমস্যার শিকার হয়ে মারা যান। এদিকে সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র বিবিসিকে জানান, আহতদের মধ্যে একজন সৈন্য ও এক পুলিশ কর্মকর্তাও আছেন। সহিংসতার সময় গুলিভর্তি একটি অ্যাসাল্ট রাইফেল চুরি হয় এবং তা উদ্ধার করা যায়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে দেয়া এক বিবৃতিতে দেশটির সরকার নতুন করে কারফিউ জারির কথা জানায়। নতুন এ কারফিউ আজ শুক্রবার ভোর ৫টা পর্যন্ত বলবৎ থাকার কথা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়