শিনজো আবের প্রতি বিএনপির শ্রদ্ধা

আগের সংবাদ

ভোট ঘিরে তৎপর কূটনীতিকরা

পরের সংবাদ

ভোগান্তি ছাড়াই ঢাকায় ফিরছে মানুষ

প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ঈদ শেষে যানজট ও ভোগান্তি ছাড়াই ঢাকায় ফিরছে মানুষ। সকাল থেকেই রাজধানীর গাবতলী, মহাখালী, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, কমলাপুর রেলস্টেশন ও সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে। সড়কপথে কোথাও কোনো যানজট নেই। নৌপথে নেই কোনো যাত্রীর চাপ। ট্রেনের যাত্রীরা স্বস্তি নিয়েই ঢাকায় ফিরছেন। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাট প্রায় যানবাহন শূন্য। যাত্রী সংকটের কারণে লঞ্চগুলো দেরিতে ছাড়ছে। এদিকে ফাঁকা ঢাকা শহর আবার স্বরূপে ফিরতে শুরু করেছে। শপিংমল, মার্কেট ও দোকানপাট না খুললেও গত তিন দিনে রাস্তায় মানুষ ও যানবাহনের চাপ কিছুটা বেড়েছে।
সড়কপথে পূর্ণ আসনে যাত্রী নিয়ে সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে যাত্রীবাহী বাসগুলো গাবতলী, মহাখালী ও সায়দাবাদ বাস টার্মিনালে এসে থামছে। ফিরতিপথে মহাসড়কের কোথাও যানজট ও ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি বলে জানিয়েছেন যাত্রী ও বাসচালকরা। বরিশাল থেকে ঢাকায় ফেরা যাত্রী লোকমান হোসেন জানান, সকাল ৮টায় বরিশাল থেকে রওনা হয়ে সাড়ে তিন ঘণ্টায় ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন তিনি। সড়কের কোথাও কোনো ধরনের যানজট ও ভোগান্তি পোহাতে হয়নি। পদ্মা সেতুর জাজিরা টোলপ্লাজা গাড়ির কিছুটা চাপ থাকলেও অল্প সময়ের মধ্যেই গাড়িগুলো একের পর এক সেতু পার হয়েছে। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে বাসগুলো ঝামেলা ছাড়াই সায়দাবাদ টার্মিনালে পৌঁছে যাচ্ছে। পোস্তগোলা থেকে সায়দাবাদ সড়কের যানবাহন কম থাকায় দূরপাল্লার বাসগুলো খুব তাড়াতাড়ি টার্মিনালে পৌঁছে যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে যাত্রীবাহী বাসগুলো সহজেই ঢাকায় ফিরছে। এই দুই গুরুত্বপূর্ণ রুটের সড়কের কোথাও যানজট পোহাতে হচ্ছে না। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মদনপুর এলাকায় স্বাভাবিক সময়ে যানজট হয়। কিন্তু পুলিশের বিশেষ নজরদারির ফলে মদনপুর এলাকায় গতকাল পর্যন্ত কোনো যানজট হয়নি। তাই সহজেই যাত্রীরা ঢাকায় ফিরতে পারছেন।
দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে যাত্রীবাহী বাসগুলো ভোগান্তি ও যানজট ছাড়াই মহাখালী বাস টার্মিনালে এসে পৌঁছেছে। ঈদের আগে ঢাকা-গাজীপুর ও গাজীপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজটের কারণে যাত্রী ও চালকদের কিছুটা ভোগান্তি হলেও ফিরতিপথে কোনো ভোগান্তি নেই বলে জানিয়েছেন এনা পরিবহনের বাসচালক শওকত।
এদিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক একেবারেই ফাঁকা থাকায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের যাত্রীবাহী বাসগুলো সহজেই গাবতলী পৌঁছতে পারছে। পদ্মা সেতু পার হয়েও দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিম অঞ্চলের বেশির ভাগ যানবাহন সহজেই ঢাকায় প্রবেশ করছে। এ রুটের যাত্রীরা জানিয়েছেন, কোথাও কোনো ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি, মহাসড়ক একদমই ফাঁকা।
এদিকে এক সময় ব্যস্ততম দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাট এখন প্রায় যানবাহন শূন্য। ঈদ শেষে ফিরতি পথের যাত্রীদের ভিড়ে ব্যস্ত থাকলেও এখন দৃশ্যপট একেবারেই পাল্টে গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই দৌলতদিয়া ঘাট এলাকা ফাঁকা ছিল। ছিল না যানবাহন ও যাত্রীর চাপ। এছাড়া ঘাট এলাকায় ঢাকামুখী যানবাহনের কোনো সিরিয়াল নেই। অনেকক্ষণ পরপর কয়েকটি যানবাহন এলেও তারা সরাসরি ফেরিতেই উঠে যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা যাত্রী ও যানবাহনগুলো ভোগান্তি ছাড়াই সরাসরি ফেরি পার হয়ে পাটুরিয়া চলে আসছে।
ঘাটে যানবাহন ও যাত্রী না থাকায় ফেরিগুলো অলস সময় পার করছে। ফেরিগুলোর ঘাট ছেড়ে যেতে আসতে সময় বেশি লাগছে। এতে সাধারণ যাত্রীদের কিছুটা সময় নষ্ট করতে হচ্ছে। তবে সংকটে পড়েছে যাত্রীবাহী লঞ্চগুলো। আগে এই লঞ্চগুলো ১০-১৫ মিনিট পরপরই ঘাট ছেড়ে যেত। এখন ৪০-৫০ মিনিট পর লঞ্চগুলো ছেড়ে যাচ্ছে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে।
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালেও যাত্রীর চাপ বেড়েছে। ভোর ৪টা থেকে বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, হুলারহাটসহ বিভিন্ন জেলা থেকে যাত্রী নিয়ে লঞ্চগুলো সদরঘাটে পৌঁছে। লঞ্চগুলোতে আগের মতো ভিড় না থাকায় স্বস্তি নিয়েই যাত্রীরা ফিরেছেন বলে জানিয়েছেন।
ট্রেনেও স্বস্তি নিয়েই মানুষ ঘরে ফিরছে। গতকাল রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছাড়া অন্য সব ট্রেনগুলো যথাসময়ে কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছেছে। সবগুলো ট্রেন যাত্রী পূর্ণ ছিল।
এদিকে ঈদের ছুটি শেষে ফাঁকা ঢাকা আবার স্বরূপে ফিরতে শুরু করেছে। গতকাল মোহাম্মদপুর, ফার্মগেট, মহাখালী, গুলশান, মালিবাগ, গুলিস্তান ও সায়েদাবাদ এলাকায় অফিসগামী মানুষ ও বাস, সিএনজি, রিকশা, মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কারের সংখ্যা বেড়েছে। আজ শুক্রবার ও আগামীকাল শনিবারের মধ্যে ঢাকায় ফেরা মানুষের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়