শিনজো আবের প্রতি বিএনপির শ্রদ্ধা

আগের সংবাদ

ভোট ঘিরে তৎপর কূটনীতিকরা

পরের সংবাদ

ব্রিটেনে প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড়ে এগিয়ে ঋষি সুনাক : দ্বিতীয় রাউন্ডেও শীর্ষে

প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ১৫, ২০২২ , ৬:০৪ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : যুক্তরাজ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের দৌড় শুরু হয়েছে। ক্ষমতাসীন টোরি দলের নেতা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্ধারিত হবে সেই প্রধানমন্ত্রী। এ মুহূর্তে সেদিকেই নিবদ্ধ রয়েছে গোটা বিশ্বের নজর। আর নেতা নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রথম দিনের ভোটাভুটিতেই চমক দেখিয়ে প্রথম স্থান দখল করেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক; ভারতের বিশ্বখ্যাত টেকজায়ান্ট ইনফোসিসের সহপ্রতিষ্ঠাতা নারায়ণমূর্তির জামাতা। এরপর গতকাল দ্বিতীয় দফার ভোটে ফের শীর্ষ স্থান দখল করেন তিনি। এদিন তিনি পান ১০১ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী পেনি মর্ডান্ট পান ৮৩ ভোট এবং আর লিজ ট্রাস পান ৬৪ ভোট। মাত্র ২৭ ভোট নিয়ে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়েন সুয়েলা ব্রেভারম্যান। জোর জল্পনা, দলের প্রধান হিসেবে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর তাকেই যেতে হবে ১০নং ডাউনিং স্ট্রিটে। আর তেমনটি হলে সেটি হবে এক ঐতিহাসিক ঘটনা। কেননা, সেক্ষেত্রে ঋষি হবেন ব্রিটেনের ইতিহাসে প্রথম অশ্বেতাঙ্গ প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে বরিস জনসনের পদত্যাগের পরপরই দেশটির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে নিজের প্রচারাভিযান শুরু করেন ঋষি। আনন্দবাজার সূত্রে, ১৯৮০ সালের ১২ মে ব্রিটেনের বন্দর সাউদাম্পটনে ঋষির জন্ম। বাবা চিকিৎসক; আর ওষুধের দোকান ছিল তার ফার্মাসিস্ট মায়ের। তবে অক্সফোর্ড এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ঋষি বাবা-মায়ের পদাঙ্ক অনুসরণে চিকিৎসাবিদ্যা কিংবা ওষুধ বাণিজ্যের ধারে কাছেও যাননি। রাজনীতিতে নামার আগেই তিনি হয়ে ওঠেন একজন পুরোদস্তুর বিনিয়োগ ব্যবসায়ী। ব্রিটেনের অন্যতম বৃহৎ বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের সহপ্রতিষ্ঠাতা। ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন ভ্যালি থেকে ব্যাঙ্গালুরু তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা, সবকিছুতেই আছে তার বিনিয়োগ। পাশাপাশি তিনি ভারতীয় বহুজাতিক সংস্থা ইনফোসিসের সহপ্রতিষ্ঠাতা নারায়ণমূর্তির জামাই। ২০০৯ সালে ক্যালিফোর্নিয়ায় ভাবী স্ত্রী অক্ষতা নারায়ণমূর্তির সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে। সে বছরই বিয়ে। বিশ্বে অন্যতম ধনী এই দম্পতির মিলিত সম্পত্তির পরিমাণ ৭৩ হাজার লাখ পাউন্ড। দুই মেয়ে তাদের, অনুষ্কা ও কৃষ্ণা।
২০১৫ সালে কনজারভেটিভের হয়ে ভোট দাঁড়িয়ে রিচমন্ড ইয়র্কশায়ার থেকে জিতে সাংসদ হন ঋষি। তারপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বরিসের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার আগে যদিও তার একনিষ্ঠ সমর্থক ছিলেন তিনি। মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বটিও পান। তরুণ তুর্কি হিসেবেও কনজারভেটিভ পার্টিতে তিনি জনপ্রিয় মুখ। সরকারি মুখপাত্র হিসেবে তাকেই টিভি-

রেডিওর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পাঠাতেন বরিস। করোনা মহামারির সময় ব্যবসায়ী এবং কর্মচারীদের জন্য বিপুল অর্থমূল্যের আর্থিক প্যাকেজ তৈরি করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। সেই সময় দলের ওয়েবসাইটে তাকে ‘পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তবে রাজনীতিতে এসে একাধিকার বার বিতর্কেও জড়িয়েছেন ঋষি।
প্রথমটি, ব্রিটেনের সংসদের নি¤œ কক্ষ ‘হাউস অব কমন্সে’ তিনি শপথ নেন গীতা হাতে নিয়ে। এরপর সম্প্রতি আরো দুটি বিতর্কে জড়িয়েছেন। একটি হচ্ছে, বরিসের সঙ্গী হিসেবে ‘পার্টিগেট’ বিতর্কে নাম ওঠা। কোভিড বিধি না মেনে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে একটি পার্টির ডাক দিয়েছিলেন বরিস। সেখানে অংশ নেন ঋষিও। এছাড়া ইনফোসিসে তার স্ত্রী অক্ষতা মূর্তির অংশীদারত্ব এবং সেখান থেকে প্রাপ্ত আয় বাবদ অর্থের ওপর কর না দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তবে বরিসের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ফের তার জনপ্রিয়তা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তার ইস্তফার ২৪ ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী বরিস। আবার তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নিজেকে কনজারভেটিভ পার্টির নেতা হিসেবে প্রচার শুরু করেন ঋষি। নিজের এই প্রচার কর্মসূচির নাম তিনি রেখেছেন ‘রেডি ফর ঋষি’। সেখানে এক ভিডিওতে তিনি দেশের জন্য কী করতে চান, তার পাশাপাশি রয়েছে মা-বাবার কথা। তাদের লড়াইয়ের কথা। ঋষির বড় হয়ে ওঠার কথা। দেশ গড়ার বার্তা দিয়ে ওই ভিডিওতে ঋষি আরো বলেন, এই সময়ের লাগাম ধরার জন্য কাউকে না কাউকে তো এগিয়ে আসতেই হবে। তিনি এগিয়ে এসেছেন। এখন কাক্সিক্ষত সেই লাগাম কখন তার হাতের নাগালে পৌঁছায়, সেটাই দেখার অপেক্ষা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়