প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
বিশ্বব্যাংকের সাবেক অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, দেশের অর্থনীতি সার্বিকভাবে চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে। বহিঃবাণিজ্য খাতে চাপ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম ডলারের চাহিদা জোগানের চেয়ে অনেক বেশি। আরেক বড় চাপ মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে। দেশের অর্থনীতিতে এ দুটো বিষয় সামষ্টিক অর্থনীতির জন্য একটি বড় ঝুঁকি। এ দুটোকে ম্যানেজ করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। যদিও দুটোর পেছনে কারণগুলো একই সূত্রে গাঁথা। এর অন্যতম একটি বড় কারণ, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি। যুদ্ধের আগে থেকেই এ প্রভাব শুরু হয়েছে। যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে বর্তমানে নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা কমছে। তবে তা স্থায়িত্ব পাবে- এমনটা বলা যাবে না।
তিনি বলেন, গত বুধবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে খাদ্যশস্য রপ্তানির বিষয়ে আলোচনা করতে রাশিয়া, তুরস্ক ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কৃষ্ণ সাগরের ওডেসা বন্দর দিয়ে ইউক্রেনীয় খাদ্যশস্য রপ্তানি পুনরায় শুরু করার বিষয়ে আলোচনা করতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এখানে কিছু আশার আলো দেখা যাচ্ছে। যার কারণে বিশ্ববাজারে গমের দাম একটু কমতির মধ্যে। তবে কখন আবার এসব আলাপ-আলোচনা ভেঙে যায় বলা যায় না। যদিও গত ছয় মাসে বিশ্ববাজারে যে পরিমাণ মূল্যস্ফীতি হয়েছে, তা হয়তো হবে না। তবে যা বেড়েছে সেই পরিমাণ দাম যদি না কমে তাহলে আমদানি ব্যয়ে কোনো স্বস্তি ফিরবে না।
ড. জাহিদ হোসেন আরো বলেন, কিছু ক্ষেত্রে সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে। তবে নিয়মিত ভর্তুকির কারণে এসব সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর লোকসান আরো বাড়বে। যদিও ঘাটতি মেটাতে বাজেটে প্রায় ৮৪ হাজার কোটি টাকার মতো বরাদ্দ রাখা হয়েছে- যা বাজেটের সবচেয়ে বড় আইটেম। আমরা যদি কোনোরকম মূল্যের সমন্বয় না করি, তবে এ ভর্তুকি দিয়েও ম্যানেজ করা যাবে না। সে হিসাবে সরকার এক্ষেত্রে উভয় সংকটে আছে। যেমন- বিদ্যুৎ, গ্যাস ও সারের দাম না বাড়ালে ভর্তুকির ওপর চাপ অনেক বাড়বে। অন্যদিকে, দাম বাড়ালে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাবে। সরকার কোন বিষয়টি বেছে নিবে তা দেখার বিষয়।
তিনি বলেন, ডলার ক্রাইসিস সমাধানের জন্য সরকারিভাবে কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এগুলোর কারণে হয়তো আমদানির ক্ষেত্রে চাহিদা কিছুটা কমবে। আমদানির চাহিদা কমলে ব্যয় কমবে, ডলারের চাহিদাও কমে আসবে। এখানেও আবার মূল্যস্ফীতি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ আমদানি কিছুটা কমে গেলে স্থানীয় সরবরাহকারীরা তখন সুযোগ কাজে লাগাবে। তারা দাম বাড়িয়ে দেবে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ডলার ক্রাইসিস সমাধানে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে সেগুলো মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ বাড়াচ্ছে। আবার ডলারের সমস্যারও সমাধান জরুরি। কারণ রিজার্ভ থেকে ডলার খরচ করে ফেললে সমস্যায় পড়তে হবে। ব্যয়ের কৃচ্ছতার ক্ষেত্রে সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা অবশ্যই অনেক ভালো উদ্যোগ, যদি এগুলোর কমপ্লায়েন্স থাকে।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।