বিশেষ অধিকার ক্ষুণ্ন : এমপি হারুনের নোটিস নাকচ করলেন স্পিকার

আগের সংবাদ

ঢাকার তৃণমূলে আ.লীগের পদ পেলেন ৫৪ হাজার কর্মী : থানা-ওয়ার্ডে পদ পাচ্ছেন আরো সাড়ে ১২ হাজার > সংগঠন গোছাতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন নগর নেতারা

পরের সংবাদ

পানি কমলেও বেড়েছে ভোগান্তি

প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শংকর দত্ত, ছাতক (সুনামগঞ্জ) থেকে : ‘ঘরের সব কাপড়, লেপ-তোশক বন্যার পানিতে ভাইস্যা গেছে। এক হপ্তায় রান্না করা কোনোখানি খাইতাম পারছি না। একদিন সেনাবাহিনী খিচুড়ি দিয়া গেছিল। আর কোনো সরকারি সাহায্য পাইছি না। মেম্বার-চেয়ারম্যানও কোনো খবর লইছে না।’ এভাবেই কষ্টের কথা বলছিলেন সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে বসবাসকারী ছাতক উপজেলার দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নের জাতুয়া গ্রামের বাসিন্দা কৃষক আব্দুর রহিম। গবাদি পশু নিয়ে রাস্তায় পাশে দুর্বিষহ রাত কাটাচ্ছেন তিনি। একই এলাকায় ১২টি পরিবার ছিল। তাদের অবস্থাও করুণ। এ সময় তকিরাই সেতু সংলগ্ন সড়কে কথা হয় উপজেলার উত্তর খুরমা ইউনিয়নের তকিরাই গ্রামের সামছু উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঘরবাড়ি বন্যার পানিতে ডুবাইলাইছে।
গত সাত দিন ধরি সড়কের উফরে ১০টি গরু লইয়া বড় কষ্টে আছি। এলাকার লোকজন আমাদের মাঝে মধ্যে চিড়া-মুড়ি ও খিচুড়ি খাবাইছইন।
গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টায় সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কে গিয়ে দেখা গেছে, অসংখ্য মানুষের ভিড়। এক সপ্তাহ ধরে এসব পরিবার অর্ধাহারে-অনাহারে জীবনযাপন করছেন। সড়কের ওপর বাঁশ ও প্লাস্টিকের বস্তা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ঝুপড়ি ঘর। সে ঘরেই এক পাশে মানুষ, অন্য পাশে গরু-ছাগল বেঁধে রাখা হয়েছে।
ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে উপজেলায় দ্বিতীয় দফায় বন্যার পানিতে এখনো ঘরবন্দি রয়েছেন প্রায় লাখো মানুষ। বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন প্রায় ১০ হাজার নারী-পুরুষ। মাত্র এক মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফা ভয়াবহ এই বন্যায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এই অঞ্চলের মানুষ।
বন্যার পানিতে ছাতক-সিলেট সড়কের কিছু অংশে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সরকারিভাবে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ত্রাণ বরাদ্দ দেয়া হলেও বানভাসি অনেক মানুষ বঞ্চিত হয়েছেন বলে জানা গেছে। বন্যাকবলিত এলাকাগুলোয় দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। বন্যায় গ্রামাঞ্চলের শত শত কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ফলে এসব বাড়ির লোকজন বাড়ি ফিরতে পারছে না। শহরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বন্যার পানি নামলেও তারা চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। উজানের পাহাড়ি ঢলের কারণে সাত দিন ধরে চুনশিল্প কারখানা ও ক্রাশার মিলগুলো এখনো বন্ধ রয়েছে। সুরমা নদীতে কার্গো নৌকা দিয়ে পণ্য আনা-নেয়া বন্ধ রয়েছে। যে কারণে সেখানকার খেটে খাওয়া দিনমজুর এখন বেকার। বন্যাকবলিত এলাকায় বেশ কিছু এলাকায় ত্রাণের জন্য হাহাকার চলছে। লোকজন নৌকা দেখলেই ভিড় করছেন ত্রাণের জন্য।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিনই সরকারি ত্রাণ বিতরণে রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলার প্রতিষ্ঠান, এনজিও, ব্যাংক ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিচ্ছিন্নভাবে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। এখনো আশ্রয় কেন্দ্রগুলোয় লোকজন রয়েছেন। অনেকেরই কাঁচা ঘর শুকায়নি। সেজন্য রয়েছেন আশ্রয় কেন্দ্রে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুনুর রহমান বলেন, বন্যাদুর্গত এলাকায় সরকারি ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়