উদ্ধার করা হয়েছে সুনামগঞ্জে আটকা পড়া ঢাবির ২১ শিক্ষার্থীকে

আগের সংবাদ

আশ্রয়-খাবার নেই, ত্রাণ নামমাত্র : সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যার ভয়ংকর নির্মমতা > দুই জেলায় তিনজনের মৃত্যু > সিলেটের সঙ্গে যোগাযোগ চালু

পরের সংবাদ

ঐক্য পরিষদের বিক্ষোভ : পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে বেড়েছে সাম্প্রদায়িক হামলা

প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দেশের বিভিন্নস্থানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং জায়গা-জমি দখলের চেষ্টার চিত্র তুলে ধরে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে হামলা ব্যাপক রূপ লাভ করেছে। বিশেষ করে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে সাম্প্রদায়িক হামলা বেড়ে যাওয়াকে নতুন ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেছেন তারা। এই হামলা ঠেকাতে রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা যেমন এগিয়ে আসেনি, তেমনি প্রশাসনও নেয়নি কঠোর পদক্ষেপ। এর ফলে সাম্প্রদায়িক শক্তি দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এ অবস্থা চলতে পারে না বলে মনে করছেন তারা। গতকাল শনিবার বিকালে রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন নেতারা।
সমাবেশে সংগঠনের নেতাকর্মীরা জানান, সম্প্রতি বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়নে রামেরকাঠী গ্রামে সা¤প্রদায়িক উসকানি সৃষ্টি করে মৌলবাদীদের হামলা এবং তা নিরসনের অজুহাতে শচীন বাড়ৈ নামে একজন সংখ্যালঘুকে পুলিশের গ্রেপ্তার, কক্সবাজারের বড় মহেশখালী ইউনিয়নে হিন্দুপাড়ায় হামলা চালিয়ে নয়ন শীলকে গুরুতর আহত, বাগেরহাটের চিতলমারীতে হিন্দুদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে ৬ জন পুরুষ ও ২ জন নারীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত এবং খুলনার দাকোপে স্কুল শিক্ষক মনোজ মাস্টারের ওপর নারকীয় কায়দায় হামলা করেছে মৌলবাদীরা।
সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ্মাবতী দেবী ও বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দিপালী চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ বলেন, এ ধরনের অত্যাচার, নির্যাতন চলতে থাকলে মানবতা কোথায় যাবে? ধর্মকে ঢাল করে দিনের পর দিন এমন অত্যাচারের পরও রাষ্ট্র কোথায় থাকে? প্রেসিডিয়াম সদস্য মিলন কান্তি দত্ত বলেন, পাকিস্তান স্বীকৃত মুসলিম দেশ হওয়া সত্ত্বেও মন্দিরে হামলার পর সেখানে বিচার হয়েছে। অথচ আমাদের দেশ অসাম্প্রদায়িক, তবু আমাদের ওপরে নির্যাতনের কোনো বিচার হয়নি। যুগ্ম সম্পাদক এডভোকেট তাপস পাল বলেন, আর কয়েকদিন পর পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। ওই ইস্যুতে ষড়যন্ত্র করতে না পেরে আমাদের হিন্দুদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে। আমরা মনে করি, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে কলঙ্কিত করতেই ওরা হিন্দুদের ওপর রাজনৈতিক সাম্প্রদায়িক হামলা করছে। তবে যে দলের লোকই এসব করুক না কেন, আমরা তাদের ওপর নজর রাখছি। এখন প্রতিবাদ করছি, কয়েকদিন পর থেকে প্রতিরোধ শুরু করব।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি জয়ন্ত

কুমার সেন দীপু বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে সবাই আনন্দিত হলেও আমরা খুব একটা আনন্দিত নই। কারণ সেতু উদ্বোধনের পর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে হিন্দুদের জমির ওপর দখলবাজদের নজর পড়বে। তারপর হামলা-নির্যাতন করে সেখানকার হিন্দুদের দামি জমি দখল করতে চাইবে। এতে সেখানকার হিন্দুরা আরেক দফা নির্যাতনের শিকার হবে। বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদের ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি অমিতাভ ঘোষাল বলেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে হিন্দুদের ওপর এমন নারকীয় হামলা নতুন এক ষড়যন্ত্রের লক্ষণ।
শিক্ষক ঐক্য পরিষদের সভাপতি মৃণাল কান্তি দাস প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের অন্তত একটি বিচার করুন। আইনজীবী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সুনীল বিশ্বাস বলেন, বিচারহীনতার কারণে নির্যাতন বাড়ছে। যদি একটি নির্যাতনেরও বিচার হতো তাহলে আমরা অন্তত শান্তিতে থাকতে পারতাম। বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদের সভাপতি সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য্য বলেন, যে ঘটনাগুলো ঘটছে তার অন্তত তদন্ত করে বিচার করুন। আমরা বাঙালি হিসেবে বাঁচতে চাই, আমরা চাই সহাবস্থান। সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিকের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন প্রেসিডিয়াম মেম্বার এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক নির্মল চ্যাটার্জি, কিশোর মন্ডল, ছাত্র ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব শিপন বাড়াইক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়