আবহাওয়ার পূর্বাভাস : অপরিবর্তিত থাকতে পারে দিন-রাতের তাপমাত্রা

আগের সংবাদ

কুমিল্লায় ভালো ভোটের পর ফলাফল নিয়ে উত্তেজনা : রিফাতকে জয়ী ঘোষণা > অজ্ঞাত ফোনের পর হামলা > মনগড়া ফল : অভিযোগ সাক্কুর

পরের সংবাদ

থেমে থেমে বৃষ্টি বাড়াচ্ছে শঙ্কা : ঢাকায় বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী

প্রকাশিত: জুন ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : প্রতি বছর বর্ষাকালে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ¦রের প্রকোপ দেখা যায়। এ বছরও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। দেশে ক্রমেই বাড়ছে ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। তবে সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে রাজধানী ঢাকায়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৮ জন। এর মধ্যে ১৭ জনই ঢাকার বাসিন্দা। নতুন ১৮ জনসহ বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি থাকা ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৭৫ জন। এর মধ্যে ঢাকার ৪৭টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৭২ জন এবং ঢাকার বাইরে হাসপাতালে ৩ জন ভর্তি আছেন। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত হাসপাতালে মোট রোগী ভর্তি হয়েছেন ৬০৭ জন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৫৩২ জন। এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে কোনো মৃত্যু হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুর মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। তবে জুন থেকে সেপ্টেম্বর এই ৪ মাস মূল মৌসুম। প্রতি বছর তিন বার (প্রাক- মৌসুম, মৌসুম ও মৌসুমপরবর্তী) এডিস মশার ঘনত্বের জরিপ করা হয়। ঘনত্বের মাত্রা থেকে অনুমান করা যায় এডিস মশাবাহিত রোগ, বিশেষ করে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া কেমন হতে পারে। এ বছর প্রাক-মৌসুম জরিপে ঢাকা শহরের ৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ বাড়িতে এডিস মশার ঘনত্ব পাওয়া গেছে। যা গত বছর প্রাক-মৌসুম এডিস মশার ঘনত্বের তুলনায় বেশি। তাই এ বছর ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা করছেন তারা। তাছাড়া এরই মধ্যে থেমে থেমে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে এডিস মশা বংশবিস্তার করে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল। ওই বছর এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। যাদের মধ্যে মারা গেছেন ১৪৮ জন। করোনা মহামারির মধ্যে গত ২০২০ সালে ডেঙ্গু তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। তবে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে ডেঙ্গু উদ্বেগজনক পরিস্থিতির তৈরি করে।
‘প্রাক মৌসুম এডিস সার্ভে-২০২২’ শীর্ষক জরিপের তথ্য বলছে, পরিত্যক্ত কন্টেইনার ও জলমগ্ন মেঝে ও প্লাস্টিকের কন্টেইনারে বেশি মাত্রায় এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। ২০১৯ সালে প্লাস্টিকের ড্রামে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায় ১১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ২০২২ সালে মৌসুমপূর্ব জরিপে লার্ভার পরিমাণ দ্বিগুণের বেশি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ। ২০১৯ সালে জলমগ্ন ফ্লোরে লার্ভা ছিল ২০ শতাংশ, যা চলতি বছরের জরিপে বেড়ে ২৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ। প্লাস্টিকের বালতিতে এডিস মশার লার্ভা ছিল ১১ দশমিক ৪৩ শতাংশ, চলতি বছর তা বেড়ে ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ। পানির ট্যাংকে ছিল ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ, এ বছর ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
ওই জরিপের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৩৮, ৪০ ও ৪৫ নং ওয়ার্ড এবং দক্ষিণ সিটির (ডিএসসিসি) ২০ ও ৩২ নং ওয়ার্ডকে ডেঙ্গুর উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে ডেঙ্গু রোগীর প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে রোগী যাতে না বাড়ে সেই দিকেই বেশি মনোযোগ দেয়ার পক্ষে স্বাস্থ্য বিভাগ। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেছেন, ডেঙ্গু রোগ বৃদ্ধির বেশির ভাগ কারণ হলো মানুষের তৈরি। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমরা জনসচেতনতা বাড়াতে কাজ করছি। সচেতনতা আমাদের এক্ষেত্রে অনেকাংশেই মুক্তি দিতে পারে।
এ প্রসঙ্গে জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল এবং এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সাবেক ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. এম এম আক্তারুজ্জামান বলেন, মৌসুমের আগেই বহু স্থানে এডিস মশা জন্ম নিচ্ছে। যে মাত্রায় এটা বাড়ছে, সেটা অস্বাভাবিক। পানি যাতে জমে না থাকে; বিশেষ করে পড়ে থাকা ডাবের খোসা, পরিত্যক্ত টায়ার, পানির বোতল, ফুলের টব, মাটির পাত্র এগুলোতে পানি জমতে দেয়া যাবে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়