মির্জা ফখরুল : খালেদার কিছু হলে দায় নিতে হবে সরকারকেই

আগের সংবাদ

কুমিল্লায় ইসির ‘এসিড টেস্ট’

পরের সংবাদ

জয় দিয়ে শেষ করতে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ জামালরা

প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : চোখের পলকে শেষ হতে যাচ্ছে এশিয়ান কাপ ২০২৩ এর বাছাইপর্ব। ‘ই’ গ্রুপের সর্বশেষ ম্যাচ খেলতে আজ সন্ধ্যা ৭টায় স্বাগতিক মালয়েশিয়ার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। মালয়েশিয়ার বুকিত জলির স্টেডিয়াম থেকে ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে টি-স্পোর্টস। এই ম্যাচের দীর্ঘ ভ্রমণ শেষে দেশে ফিরবে জামাল ভুঁঁইয়ারা। এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে পরপর প্রথম দুই ম্যাচেই হেরেছে ক্যাবরেরার শিষ্যরা। প্রথম ম্যাচে শক্তিশালী বাহারাইনের বিপক্ষে ২-০ গোলে ও দ্বিতীয় ম্যাচে লড়াই করেও ২-১ গোলে হেরেছে তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে। এবার জামাল-জিকোদের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক মালয়েশিয়া। মালয়েশিয়ার বিপক্ষে জটিল সমীকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশ জয় নিশ্চিত করতে পারলে এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে বাংলাদেশের উত্তীর্ণ হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। তবে তা খুবই ক্ষীণ। ‘ই’ গ্রুপে সর্বোচ্চ ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে বাহারাইন। মালয়েশিয়া ও তুর্কমেনিস্তানের ৩ পয়েন্ট আর বাংলাদেশের শূন্য। শেষ ম্যাচে স্বাগতিক মালয়েশিয়াকে বাংলাদেশ যদি জয় পায় তাহলে তিন দলের পয়েন্ট হবে ৩। অন্যদিকে তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে অনেকাংশেই জয়ের পথে এগিয়ে থাকবে বাহারাইন। তুর্কমেনিস্তান হারলে টুর্নামেন্টের বাইলজ অনুযায়ী হেড টু হেড বিবেচনায় তিন দল একে অন্যের সঙ্গে জয় ও পরাজয় রয়েছে। সেক্ষেত্রে হিসাব হবে গোল ব্যবধান। বাংলাদেশ ২ গোলের ব্যবধানে মালয়েশিয়াকে হারালে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার গোল ব্যবধান সমান ১ হবে। তখন বেশি গোল দেয়ার হিসাবে মালয়েশিয়া গ্রুপ রানারআপ হবে। বাংলাদেশকে ‘ই’ গ্রুপের রানার্স আপ হতে হলে স্বাগতিকদের ৩ গোলের ব্যবধানে হারাতে হবে এবং বাহরাইনকে জিততে হবে। বাহরাইন তুর্কমেনিস্তানকে হারাতে পারলেও বুকিত জলিলে মালয়েশিয়াকে হারানো অনেক কঠিন হবে বাংলাদেশের পক্ষে। গ্রুপে বাংলাদেশের দুই সমীকরণ মিলে গেলে তাকাতে হবে অন্য গ্রুপে। ‘এ’ গ্রুপ ছাড়া বাকি চার গ্রুপে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ৪ দলের পয়েন্ট ৪ এর অধিক। ফলে সেরা পাঁচ রানারআপ হতে বাংলাদেশের তাকিয়ে থাকতে হবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ নেপালের গ্রুপে দিকে। সেখানে জর্ডান কুয়েতকে ৪ গোলে ও ইন্দোনেশিয়াকে নেপাল ২ গোলে হারালে বাংলাদেশের সেরা পাঁচ রানারআপের একটি হওয়ার সুযোগ থাকবে। মালয়েশিয়ার বুকিত জলিলে স্বাগতিকরা বেশ শক্তিশালী। তাদের বিপক্ষে লড়াই করা বেশ কষ্টাসাধ্য। এই মালয়েশিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই ৩-১ গোলে হেরেছে তুর্কমেনিস্তান। যাদের সঙ্গে বাংলাদেশ হেরেছে। এই সমীকরণেই বাংলাদেশ থেকে এগিয়ে আছে মালয়েশিয়া। ফুটবলারদের শারীরিক গঠন ও বৈশিষ্ট্যের দিক থেকেও অনেকাংশে এগিয়ে আছে স্বাগতিকরা। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮৮তম স্থানে অন্যদিকে মালয়েশিয়ার অবস্থান ১৫৪তম স্থানে। পরিসংখ্যানেও বাংলাদেশ থেকে যোজন যোজন দূরে আছে মালয়েশিয়া। এ পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৯ বার মুখোমুখি হয়েছে দুদল। যেখানে ৬ বার জিতেছে মালয়েশিয়া ও মাত্র একবার জিতেছে বাংলাদেশ। বাকি দুই ম্যাচে ড্র করেছে দুদল। তবে জামাল ভুঁঁইয়াদের জন্য স্বস্তির বিষয় হচ্ছে মালয়েশিয়ার বিপক্ষে সর্বশেষ দুই দেখাতেই ড্র করেছে তারা। ২০১২ সালে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করেছে। এরপর ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচেই গোলশূন্য ড্র করেছে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া। মালয়েশিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ তাদের একমাত্র জয় পেয়েছে ১৯৮২ সালের এশিয়ান গেমসে। এছাড়া বাকি ৬ দেখাতেই জয় ছিনিয়ে নিয়েছে মালয়েশিয়া। ৬ বার জিতলেও বেশি গোল ব্যবধানে জিততে পারেনি তারা। একদম প্রথম ম্যাচে মালয়েশিয়ার ঘরের মাঠে ৩-০ ও দ্বিতীয় ম্যাচে ৬-০ হেরেছে বাংলাদেশ। ম্যাচ দুটি অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৯৭৫-৭৬ সালে। এরপর অনুষ্ঠিত হওয়া বাকি ম্যাচগুলোতে একবার ২ গোল ব্যবধানে জিতেছে আর বাকিগুলোতে এক গোল ব্যবধানেই জিতেছে মালয়েশিয়া। তবে বিংশ শতাব্দীর বাংলাদেশ ফুটবল দল থেকে আজকের ফুটবল দল অনেক পরিণত।
নতুন স্প্যানিশ কোচের অধীনে তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে দারুণ ফুটবল উপহার দিয়েছে জামাল ভুঁইয়ারা। জয়ের তীরে গিয়ে ফিরে আসলেও অসাধারণ পাস, প্লেসিং ও আক্রমণে ওঠার মাধ্যমে ফুটবল সমর্থকদের অন্যান্য আক্ষেপগুলো মিটিয়েছেন। বেশ কয়েকবার কাক্সিক্ষত গোলের নিকটে গিয়েও গোল করতে ব্যর্থ হয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ইয়াসিন আরাফাত ও বাদশার প্রাপ্ত দুই সুযোগকে কাজে লাগাতে পারলেই কাক্সিক্ষত জয়ের দেখা পেত বাংলাদেশ। আগের ম্যাচে অসাধারণ ফুটবল উপহার দিয়ে মালয়েশিয়ার বিপক্ষে জয়ের জন্য বেশ উজ্জীবিত আছে ক্যাবরেরার শিষ্যরা। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) মাধ্যমে পাঠানো ভিডিও বার্তায় আত্মবিশ্বাসের সুরে আগের ম্যাচের গোলদাতা মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেছেন, মালয়েশিয়া অবশ্যই ভালো দল। কিন্তু আমরাও ওদের সহজে ছেড়ে দিব না। বাহরাইনের বিপক্ষে ওরা দুটো গোল সেট-পিসে দিয়েছে, বাহরাইন আমাদের চেয়ে অনেক শক্তিশালী দল, কিন্তু ওরাও আমাদের এত সহজে গোল দিতে পারেনি। ইনশাআল্লাহ আমরা মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ভালো লড়াই করব। আমরা যখন অনেক দর্শকের সামনে খেলি, তখন আমাদেরও ভালো লড়াই করার মনোভাব কাজ করে। এই টুর্নামেন্টে ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়, সেট-পিসে আরো মনোযোগী হতে হবে। কারণ চার গোলের মধ্যে ৩টিই সেট-পিসে খেয়েছি। শুধু ডিফেন্সের ভুল নয়, সেট-পিসের বিষয়টা পুরো টিম ওয়ার্কের বিষয়, সবাই এটা নিয়ে কাজ করতে হবে। সবাই দেখেছে আমরা অনেক ভালো ফুটবল খেলেছি। শেষ পর্যন্ত ভাগ্যের সহায়তা পায়নি বলে পয়েন্ট পাইনি। আমরা অন্তত একটা পয়েন্ট পেতে পারতাম। আমরা অনেকগুলো ম্যাচ এ রকম জিততে জিততে কিংবা ড্র করতে করতে শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে হেরে যায়, গতকালের ম্যাচও ওরকম ছিল। একটা সময় আমাদের মনে হয়েছিল আমরা জিতব বা পয়েন্ট পাব, কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়