ঐক্য পরিষদের বিবৃতি : ধর্ম মন্ত্রণালয়ে বাজেট বরাদ্দে ধর্মীয় বৈষম্য অবসান দাবি

আগের সংবাদ

নিছক দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা : সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডি

পরের সংবাদ

ব্রাজিলের মান বাঁচালেন নেইমার

প্রকাশিত: জুন ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে গতকাল জাপানের জাতীয় স্টেডিয়ামে ১-০ গোলের জয় পেয়েছে ব্রাজিল। পেনাল্টি থেকে জাপানের বিপক্ষে একমাত্র গোলটি করেছেন নেইমার জুনিয়র।
আগের রাতে এস্তোনিয়ার বিপক্ষে একাই ৫ গোল করেছেন আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসি। অন্যদিকে উয়েফা নেশন লিগে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে জোড়া গোল করেছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ফুটবল বিশ্বে তিন জনপ্রিয় তারকাদের মধ্যে দুজনই ছিলেন সফল। বাকি ছিল নেইমার, জাপানের বিপক্ষে গতকাল পেনাল্টি থেকে গোল করে ব্রাজিল সমর্থকদের প্রত্যাশা পূরণ করেন তিনি।
খেলাটা জাপানের মাঠে হলেও ম্যাচজুড়ে আধিপত্য ছিল ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকা ব্রাজিলেরই। ৫৩ শতাংশ বল নিজেদের পায়ে রেখে সব মিলিয়ে ২১টি শট নেন নেইমাররা। তবে মাত্র ৫টি শট লক্ষ্যে রাখতে পারেন তারা। ব্রাজিলের খেলোয়াড়রা সুযোগ নষ্ট না করলে হয়তো আরো বড় ব্যবধানেই জয় পেতেন তারা। জাপানের রক্ষণভাগ ও গোলরক্ষকের দৃঢ়তায় ব্রাজিলের অনেক সহজ সুযোগ নষ্ট হয়। জাপানের বিপক্ষে এর আগে কখনো হারেনি ব্রাজিল। এখন পর্যন্ত দুই দলের ১২ সাক্ষাতে ব্রাজিল শেষ হাসি হেসেছে ১০ ম্যাচে, ড্র হয়েছে অন্য দুই ম্যাচ।
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্লে-অফের ফাইনালে ওয়েলসের বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হলো যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের। ইউক্রেনের অধিনায়ক আন্দ্রে ইয়ারমোলেঙ্কোর আত্মঘাতী গোলেই ৬৪ বছর পর বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পেল গ্যারেথ বেলরা। কাতার বিশ্বকাপে ‘বি’ গ্রুপে ইংল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, ইরানের সঙ্গে মূলপর্বে যুক্ত হলো ওয়েলস।
উয়েফা নেশন্স লিগে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর জোড়া গোলে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ৪-০ গোলে জয় পেয়েছে পর্তুগাল। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে এস্তোনিয়ার বিপক্ষে ৫-০ গোলের বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে আর্জেন্টিনা।
এর আগে একবারই ১৯৫৮ সালে বিশ্বকাপের মূল পর্বে অংশ নিয়ে কোয়ার্টারে-ফাইনালে ব্রাজিলের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিল ওয়েলস। এবার আরো একবার সুযোগ পেয়েই উল্লাসে মেতে ওঠে গ্যারেথ বেল, অ্যারন রামসিরা। কার্ডিফে ওয়েলসের উদযাপনের শুরুটা হয় বেলকে ঘিরেই। প্রথমে বেঞ্চেই তার পাশে থাকা সতীর্থরা এসে জড়িয়ে ধরার পর মাঠ থেকে ছুটে এসে তাদের উদযাপনের সঙ্গী হলেন বাকিরাও। গত মার্চে প্লে-অফ সেমি-ফাইনালে অস্ট্রিয়াকে ২-১ গোলে হারানো ম্যাচে দলের দুটি গোলই যে করেছিলেন বেল।
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ইউক্রেনের সামনেও ছিল দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ। ১৯৯১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর ২০০৬ সালের আসরে প্রথমবার সুযোগ পেয়েই কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠেছিল ইউক্রেন। এবারো আশাটা জাগিয়ে তুলেছিল ইয়ারমোলেঙ্কো-জিনচেঙ্কোরা। ২ জুন প্লে-অফের সেমিফাইনালে স্কটল্যান্ডকে ৩-১ গোলে হারিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন এবারো স্বপ্ন দেখছিল দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপের মূলপর্বে অংশ নেয়ার। এদিন যুদ্ধবিরোধী বার্তা নিয়েই মাঠে এসেছিলেন ইউক্রেন সমর্থকরা। তবে তাদের বিশ্বকাপের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে যায় অধিনায়ক ইয়ারমোলেঙ্কোর গোলে। তবে ম্যাচ শেষে হাততালি দিয়ে অভিনন্দন জানান আন্দি ওলেকসান্দর জিনচেঙ্কোরা।
কার্ডিফ সিটি স্টেডিয়ামে পুরো ম্যাচে একের পর এক আক্রমণ করে গেছে ইউক্রেন, তবে ওয়েলসকে বাঁচিয়ে দেন গোলরক্ষক ওয়েইন হেনেসি। ম্যাচে ৬৮ শতাংশ সময় বল নিয়ন্ত্রণে রেখে লক্ষ্য বরাবর ৯টি শট করেছিল ইউক্রেন, তবে হেনসিকে পরাস্ত করে গোল পায়নি একটিও। স্বাগতিকদের ১০ শটের তিনটি লক্ষ্যে ছিল।
কার্ডিফ সিটি স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধটা ইউক্রেনই দাপটের সঙ্গে খেলেও গোল করতে পারেনি, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে নিজেরাই গোল খেয়ে যায় ম্যাচের ৩৪ মিনিটে। বাঁ পাশে বক্সের কিছুটা বাইরে থেকে নেয়া গ্যারেথ বেলের ফ্রি-কিক বিপন্মুক্ত করতে হেড করেছিলেন ইউক্রেন অধিনায়ক আন্দ্রিই ইয়ারমোলেঙ্কো। বল তার মাথায় লেগে চলে যায় নিজেদের জালে। আর এই একটি গোলই ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণ করে দেয়। ম্যাচের ৪০ মিনিটের সময় অবশ্য আশা জেগেছিল ইউক্রেনের। ইয়ারমোলেঙ্কোকে ফাউল করেছিলেন জো অ্যালেন। সম্ভাব্য পেনাল্টির জন্য ভিএআর চেক করা হলেও বাঁশি বাজেনি ইউক্রেনের পক্ষে।
দ্বিতীয়ার্ধের ৫৬ মিনিটে ইউক্রেইনের ভিক্তর তিশিহানকোভের নিচু শট ঠেকিয়ে জাল অক্ষত রাখেন হেনেসি। ৭৬তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পায় ওয়েলস। বেলের প্রচেষ্টা রুখে দেন সফরকারী গোলরক্ষক। ৮৪ মিনিটে আরেকবার ওয়েলসের ত্রাতা হেনেসি। আর্তেমের হেড ছিল লক্ষ্যে। ঝাঁপিয়ে বলের গতপথ পরিবর্তন করে দেন তিনি। এরপর আর কোনো গোল না হলে ১-০ গোলের জয় নিয়েই বিশ্বকাপে ওঠার উল্লাসে মেতে ওঠে স্বাগতিক ওয়েলস।
অন্যদিকে উয়েফা নেশন্স লিগে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর জোড়া গোলে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ৪-০ গোলে জয় পেয়েছে পর্তুগাল। লিসবনের এস্টাডিও হোসে অ্যালভালাদের সুইসদের বিপক্ষে ম্যানইউ তারকার জোড়া গোল ছাড়াও পর্তুগালের বাকি দুটি গোল করেছেন উইলিয়াম কার্ভালহো এবং হোয়াও ক্যান্সেলো।
ম্যাচের ১৫তম মিনিটে উইলিয়াম কার্ভালহো গোলের সূচনা করেন। এরপর ৩৫ এবং ৩৯ মিনিটে জোড়া গোল করেন রোনালদো। এই দুই গোলের সুবাদে দলের হয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে পর্তুগালের হয়ে তার গোলসংখ্যা দাঁড়ালো ১১৭টিতে। প্রথমার্ধেই ৩-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের ৬৮ মিনিটে ব্যবধান ৪-০ করেন হোয়াও ক্যানসেলো। উয়েফা নেশন্স লিগে ‘গ্রুপ এ-২’ তে প্রথম দুই ম্যাচ থেকে পর্তুগালের পয়েন্ট ৪। চেক প্রজাতন্ত্র স্পেনের বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করাতে গোল ব্যবধানে চেয়ে এগিয়ে রয়েছে রোনালদোরা। আর টানা দুই ম্যাচে পরাজয়ের কারণে সুইসদের এখনও কোনো পয়েন্টই নামের পাশে যোগ হলো না। পর্তুগাল পরের ম্যাচ খেলবে চেক রিপাবলিকের বিপক্ষে। আর সুইজারল্যান্ড খেলবে স্পেনের বিপক্ষে।

আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে এস্তোনিয়ার বিপক্ষে ৫-০ গোলের বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে আর্জেন্টিনা। লিওনেল মেসির পা থেকেই এসেছে আর্জেন্টিনার ৫ গোল। এদিন ক্যারিয়ারের অষ্টম আন্তর্জাতিক হ্যাটট্রিকের দেখা পান মেসি। ম্যাচের ৭৬ মিনিটের মধ্যেই ৫টি গোল করেন এই আর্জেন্টাইন তারকা। ৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোলের সূচনা করেন। ৪৫তম মিনিটে দ্বিতীয়বার বল জালে পাঠান তিনি। বিরতি থেকে ফিরেই ৪৭ মিনিটের মধ্যে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন। পর ৭১ ও ৭৬ মিনিটে করেন আরো ২ গোল। জাতীয় দলের জার্সিতে এবারই প্রথম কোনো ম্যাচে তিনের বেশি গোল করেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক। এদিন এস্তোনিয়ার বিপক্ষে গোল করার মাধ্যমে জাতীয় দলের জার্সিতে ভিন্ন ৩০টি দেশের বিপক্ষে গোলের কীর্তি গড়েছেন মেসি। এর আগে বার্সেলোনার হয়ে ২০১২ উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে বায়ার লেভারকুসেনের বিপক্ষে ৫ গোল করেন মেসি। এস্তোনিয়ার বিপক্ষে ৫ গোল করার পর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে মেসির গোলসংখ্যা হলো ৮৬টি। আর তাতেই পেছনে ফেলে দিয়েছেন হাঙ্গেরির কিংবদন্তি ফুটবলার ফেরেঙ্ক পুসকাসকে (৮৪)। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বর্তমানে চতুর্থ সর্বাধিক গোলদাতা মেসি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়