ঐক্য পরিষদের বিবৃতি : ধর্ম মন্ত্রণালয়ে বাজেট বরাদ্দে ধর্মীয় বৈষম্য অবসান দাবি

আগের সংবাদ

নিছক দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা : সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডি

পরের সংবাদ

টাকার রেকর্ড পতন : একদিনেই কমল ১ টাকা ৬০ পয়সা

প্রকাশিত: জুন ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাজারের হাতে ডলারের দর নির্ধারণের দায়িত্ব ছেড়ে দেয়ার পর পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটেছে। টাকা আরো সস্তা হয়েছে; সর্বশেষ প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য দাঁড়িয়েছে ৯১ টাকা ৯৫ পয়সা। ডলারের দর বেঁধে দেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার পর এ নিয়ে তিন দফায় ডলারের দাম বাড়ল। আর মে মাসে চার দফা কমে টাকার মান।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুই দফায় আগের দিনের চেয়ে বেশি দরে ডলার বিক্রি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে ওই দিন দুবার টাকার মান কমে যায়। গত বৃহস্পতিবার প্রথম দফায় ব্যাংকগুলোর কাছে ৮৯ টাকা ৯০ পয়সা দরে বিক্রি করা হয় সাড়ে ১৩ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র জানান, ওইদিন দ্বিতীয় দফায় জরুরি চাহিদা মেটাতে আরো ৫০ লাখ ডলার বিক্রি করা হয় ৯১ টাকা ৫০ পয়সায়। এতে ডলারের দর বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়ার দিনই টাকার মান কমে যায় আড়াই টাকা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একদিনে টাকা কখনো এতটা দর হারায়নি। এর আগে সর্বোচ্চ দর কমেছিল একদিনে সর্বোচ্চ ১ টাকা ১০ পয়সা।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা মার্কিন ডলার নিয়ে উভয় সংকটে পড়েছে বাংলাদেশ। ডলার দিয়ে মেটাতে হয় সব ধরনের আমদানি দায়। আর ডলার আয় হয় মূলত রপ্তানি ও প্রবাসী আয় দিয়ে। তবে ডলার যে আয় হচ্ছে, তা দিয়ে ব্যয় মিটছে না। এতে বেড়ে গেছে ডলারের দাম, যার প্রভাব পড়েছে আমদানিসহ সব ধরনের পণ্যের দামে। আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ডলারের চাহিদা বাড়ছে গত কয়েক মাস ধরে। রপ্তানি ও রেমিটেন্স থেকে আমদানি খরচ মেটানোর মতো ডলার মিলছে না। ডলারের সরবরাহে টান পড়েছে, যা বৈদেশিক মুদ্রার বাজারকে চড়া করে তুলেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, নতুন নিয়ম অনুযায়ী এখন থেকে ডলারের বিনিময় হার বাজারের চাহিদা অনুযায়ী নির্ধারিত হবে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাজারের চাহিদা ও সরবরাহে ভারসাম্য রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছে। সোমবার এক কোটি ডলার বিক্রি করেছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু এরপর থেকে বড় ধরনের আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে গিয়ে ডলার সংকট শুরু হয়, যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে। ২০২১ সালের আগস্টের শুরুতেও আন্তঃব্যাংকে প্রতি ডলারের মূল্য একই ছিল। ৩ আগস্ট থেকে দুয়েক পয়সা করে বাড়তে বাড়তে গত বছরের ২২ আগস্ট প্রথমবারের মতো ৮৫ টাকা ছাড়ায়। চলতি বছরের ৯ জানুয়ারিতে এটি বেড়ে ৮৬ টাকায় পৌঁছে। এরপর ২২ মার্চ পর্যন্ত এ দরেই স্থির ছিল। পরে গত ২৩ মার্চ আন্তঃব্যাংকে আরো ২০ পয়সা বেড়ে ৮৬ টাকা ২০ পয়সায় দাঁড়ায়। ২৭ এপ্রিল আরো ২৫ পয়সা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা। ১০ মে ২৫ পয়সা, ১৬ মে ৮০ পয়সা ও ২৩ মে ৪০ পয়সা বাড়ে। ফলে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম গিয়ে ঠেকে ৮৭ টাকা ৯০ পয়সায়। এর পর গত ৩১ মে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলারে ৮৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এরপর ২ জুন ৮৯ টাকা ৯০ পয়সা আর সোমবার সবশেষ ডলারের দাম নির্ধারণ করা হয় ৯১ টাকা ৫০ পয়সা।
এদিকে, আমদানির চাপে ধারাবাহিকভাবে ডলার বিক্রি করায় বৈদেশিক মুদ্রার মজুতের (রিজার্ভ) ওপর চাপ বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ২৪ আগস্টের রিজার্ভ আগের সব রেকর্ড ভেঙে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে যা বর্তমানে নেমে এসেছে ৪২ বিলিয়ন ডলারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়