জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় : ১০ বছরেও ক্লাসরুম আইন অনুষদ

আগের সংবাদ

প্রতিযোগিতার বাজারে ডলার : দাম নিয়ন্ত্রণ থেকে পিছু হটল কেন্দ্রীয় ব্যাংক > টাকার মান কমল ৯০ পয়সা

পরের সংবাদ

নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট শুনবে কে?

প্রকাশিত: জুন ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বর্তমানে নিম্নবিত্ত পরিবারের অবস্থা যে শুধু শোচনীয় তা নয়, পাশাপাশি মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষের অবস্থাও শোচনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মধ্যবিত্তের মানুষও দিশাহারা অবস্থায় পতিত হয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারণে আগে থেকেই দ্রব্যমূল্য অধিকাংশ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গিয়েছিল। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ মূল্য পরিস্থিতি রীতিমতো ভয়াবহ করে তুলেছে। যাদের আয় ৫-১৫ হাজার টাকার মধ্যে তাদের পক্ষে বাসা ভাড়াসহ প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য কেনাও অসম্ভব হয়ে উঠেছে। এর ওপর আছে সংসারের অন্যান্য খরচ। করোনা ও অন্যান্য কারণে অনেকের চাকরি চলে গেছে, আবার অনেকের আয়-রোজগার আগের চেয়ে কমেছে। তাদের কীভাবে দিন কাটছে কল্পনাও করা যায় না। বর্তমানে আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা ভোজ্যতেল নিয়ে যা করছেন তা শুধু দুঃখজনকই নয়, বরং লজ্জাকরও বটে। তারা লাখ লাখ টন ভোজ্যতেল গুদামে লুকিয়ে রেখে বাজারে তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে তেল বিক্রি করছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে ব্যবসায়ীদের গুদাম থেকে লুকিয়ে রাখা তেল বের করে আনছে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের জরিমানা করছে। এসব ব্যবসায়ীর মধ্যে যদি নৈতিকতাবোধ অথবা মনুষ্যত্ব থাকত, তাহলে তারা মুনাফার জন্য এহেন জঘন্য কাজ করতে পারতেন না। এক কথায়, ব্যবসায়ীরা ব্যবসার নামে জনগণকে শোষণ করছে। পণ্যদ্রব্যের বাজারের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। বাজারের নিয়ন্ত্রণ বরাবরই ব্যবসায়ীদের হাতে। সরকার পণ্যদ্রব্যের মূল্য নির্ধারণ করে দিলেও কিছু কিছু অসাধু ও বিকৃত মানসিকতা সম্পন্ন ব্যবসায়ী এসব বাজারের ওপর আধিপত্য বিস্তার করছে। চাল, ডাল, তেল, চিনি, আটা থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় এমন কোনো পণ্যদ্রব্য নেই যার মূল্য বাড়েনি।
সম্প্রতি সিলেটসহ অন্যান্য জেলা, উপজেলাগুলো বন্যার নির্মমতার শিকার হয়। এতে ওইসব অঞ্চলে ফসলি জমি, ঘরবাড়ি সব বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। যেখানে এসব এলাকাতে বন্যাদুর্গত মানুষের বসতি, ঘরবাড়ি পুনর্র্নির্মাণ করা কষ্ট হয়ে যাচ্ছে, সেখানে তাদের পক্ষে উচ্চমূল্যে পণ্যসামগ্রী ক্রয় করা সাধ্যের বাইরে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির যেসব কারণ রয়েছে তার মধ্যে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি, সরবরাহ ব্যবস্থা, চাহিদার ওঠানামা ও আমদানি রপ্তানি ব্যয়। আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্যশস্য ও খাদ্যসামগ্রী। এখন ভরা মৌসুম। আমাদের দেশে খাদ্যশস্যের দাম বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই।
মহামারি করোনা এরই মধ্যে আমাদের অনেক কিছু কেড়ে নিয়েছে, আমাদের অনেককে নিঃস্ব করে দিয়েছে। অনেকে সবকিছু হারিয়ে অর্থকষ্টে দিনযাপন করছে। অন্তত সাধারণ জনগণের কথা ভেবে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রগুলোর যেন ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ করা হয় এবং তা যেন সবার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। সহনশীল মাত্রায় মূল্য নির্ধারণের জন্য বাজার নিয়ন্ত্রণকারীদের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনো অজুহাতে কেউ যেন কখনো ইচ্ছামতো কোনো জিনিসের দাম বাড়াতে না পারে, সেদিকে দৃষ্টি দিই।

প্রসেনজিৎ চন্দ্র শীল
শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়