সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেড : বড় মুনাফা এনেছিলেন আতাউর রহমান প্রধান

আগের সংবাদ

ভরা মৌসুমেও চালে অস্থিরতা : খুচরা বাজারে মোটা চাল ৫০ টাকা, পিছিয়ে নেই সরু চালও > কুষ্টিয়া ও নওগাঁয় বাড়ছে দাম

পরের সংবাদ

মেহেরপুর হাসপাতালে ৬ ঘণ্টায় ৫৫ ডায়রিয়া রোগী ভর্তি

প্রকাশিত: মে ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মেহেরপুর প্রতিনিধি : মেহেরপুর আবারো বাড়ছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গত ৬ ঘণ্টায় মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ৫৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। গড় হিসাবে প্রতি ১০ মিনিটে ১ জন রোগী ডায়রিয়ায় ভর্তি হয়েছেন। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যকর্মীরা রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য পরিত্যক্ত একটি আবাসিক ভবনকে ওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেখানে স্থান সংকুলান না হওয়ার কারণে ভবনের বারান্দা অতিক্রম করে সিঁড়িতেও চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রেও রোগীদের চাপ। হাসপাতালে জায়গা না পেয়ে জেলার ক্লিনিকগুলোতে ভিড় করছেন সামর্থ্যবানরা।
সরজমিনে গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে মেহেরপুর সদর জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, মেঝেতে গাদাগাদি করে রয়েছেন ডায়রিয়া রোগীরা। সিট না পেয়ে এক রোগী ভবনের সিঁড়ির নিচে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ সময় দেখা যায় প্রতি ১০ মিনিটে একজন করে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী আসছেন। গতকাল সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৫৫ জন নতুন রোগী ভর্তি হন। এ সময়ে ৩৫ জনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। রোগী ভর্তির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থান সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এই চাপ অব্যাহত থাকলে খোলা আকাশের নিচে চিকিৎসা দিতে হবে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা।
হাসপাতালের সিঁড়ির নিচে চিকিৎসা নিচ্ছে আকলিমা খাতুনের ৫ বছরের সন্তান। আকলিমা জানান, বারান্দাতেও রোগী ভরা। হাঁটার জায়গা নেই। তাই বাধ্য হয়ে সিঁড়ির নিচে সন্তানের চিকিৎসা করাচ্ছেন। কিছু কিছু ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোগীর অভিভাবক বলেন, হাসপাতালে মাস্টার রোলে সেবিকার কাজ করা মেয়েরা ক্যানুলা লাগাতে ও খুলতে টাকা দাবি করছেন রোগীদের কাছে। সন্তুষ্ট করতে না পারলে সেই রোগীর কাছে কেউ আসতে আগ্রহী হয় না।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মখলেছুর রহমান জানান, হাসপাতালে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৪২ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন। গত তিনদিনে তিন শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। হঠাৎ করে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
ডা. মখলেছুর রহমান আরো বলেন, ১০০ বেডের মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালকে ২৫০ বেডের ঘোষণা হয়েছে কয়েক বছর আগে। বাড়ানো হয়নি ভবন, লোকবল ও চিকিৎসক। একশ’ বেডের জনবল নিয়েই মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জামিল মোহাম্মদ হাসিবুস সাত্তার জানান, প্রায় ২০ দিন আগে আশপাশের জেলা থেকে ধার করে স্যালাইন এনে ডায়রিয়া মোকাবিলা করতে হয়েছে। তিনি স্বীকার করেন, হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী যেভাবে বাড়ছে তাতে ফের স্যালাইন সংকট দেখা দেবে। ইতোমধ্যে আশঙ্কার কথা তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন বলেও জানান।
মেহেরপুর আইইডিসিআর এর মাঠ গবেষক রেজাউল করিম বলেন, আমরা মেহেরপুরসহ ২২টি জেলায় কলেরার গবেষণা করছি। গত এক সপ্তাহে মেহেরপুরে ডায়রিয়া রোগী ব্যাপকভাবে বেড়েছে। আমরা ২৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করেছি। এর মধ্যে ১৭ জনের দেহে কলেরার জীবাণু পাওয়া গেছে। যাদের শরীরে কলেরার জীবাণু পাওয়া গেছে তারা বেশির ভাগ মেহেরপুর শহরের।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়