ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের উদ্বেগ

আগের সংবাদ

ছাত্ররাজনীতি হঠাৎ উত্তপ্ত কেন > জাতীয় রাজনীতির ষড়যন্ত্রের অংশ : ক্ষমতাসীন দল > নির্বাচনের পথ পরিষ্কার করতেই এই হামলা : বিএনপি

পরের সংবাদ

সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেড : বড় মুনাফা এনেছিলেন আতাউর রহমান প্রধান

প্রকাশিত: মে ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেড যুক্তরাজ্যভিত্তিক একমাত্র বাংলাদেশি ব্যাংক যার ৫১ শতাংশ শেয়ার মূলধন বাংলাদেশ সরকারের এবং অবশিষ্ট ৪৯ শতাংশ শেয়ার মূলধন সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের। এটি যুক্তরাজ্য সরকারের প্রæডেনশিয়াল রেগুলেশন অথরিটি (পিআরএ) দ্বারা অনুমোদিত এবং ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস অথরিটি (এফএসএ) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। দেশ স্বাধীনের পর যুক্তরাজ্যের মাটিতে বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যে রেমিট্যান্স সেবা দেয়ার লক্ষ্যে ১৯৭৪ সালে এটি এক্সচেঞ্জ হাউস হিসেবে যাত্রা শুরু করে। পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং নীতি শাখার ২০০১ সালের ২৭ জুন বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নরের কাছে এক পত্রের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যে সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেড নামে একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যাংক চালুর ব্যাপারে সরকারের সম্মতিপত্র পাঠানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০১ সালের ১০ ডিসেম্বর থেকে যুক্তরাজ্যের মাটিতে সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেড একটি পরিপূর্ণ ব্যাংক হিসেবে কার্যক্রম শুরু করে।
সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের বর্তমান সিইও এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান প্রধান ২০১২ সালের মার্চ মাস থেকে ২০১৫ সালের মে মাস পর্যন্ত সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেডের সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০১২ সালের মার্চে তৎকালীন সিইও খন্দকার ইকবালের (পরবর্তী সময়ে বেসিক ব্যাংকের এমডি) কাছ থেকে দায়িত্ব নেন এবং ২০১৫ সালের মে মাসে এম সরোয়ার হোসেনের হাতে দায়িত্বভার অর্পণ করেন।
সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেডের ২০০৯-২০১৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যবসায়িক সূচক যেমন- এলসি, আমদানি ও মুনাফার পরিমাণ সবচেয়ে বেশি এসেছে আতাউর রহমান প্রধানের সময়ে। তিনি দায়িত্বভার ছেড়ে আসার পরই ব্যবসায়িকভাবে মারাত্মকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয় ব্যাংকটি। ব্যাংকটিতে ওই সময়ে কর্মরত সালাউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ হলে তিনি জানান, মূলত আতাউর রহমান

প্রধানের সময়ে রেমিট্যান্স, এলসি অ্যাডভাইজিংয়ের সঙ্গে ট্রেড ফাইন্যান্স সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যবসা বহুগুণ বৃদ্ধি করতে সক্ষম হন। ফলে ওই সময়ে সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয় এবং লোকাল কমিউনিটিসহ সরকারের নিকট ব্যাংকটির ভাবমূর্তি বহুগুণ বৃদ্ধি পায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১১ সালে ব্যাংকটির মুনাফার পরিমাণ জিবিপি ৫ লাখ ৭০ হাজার হলেও ২০১২ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় জিবিপি ১০ লাখ ২৭ হাজার যা তার পূর্বের বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। ২০১২ সালের এই সাফল্যে ২০১৩ সালের ১৩ জুন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে লভ্যাংশ হস্তান্তর করা হয়। সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেডের ২০১৩ সালের সাফল্য আরো ঈর্ষণীয়। ওই বছর মুনাফা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় জিবিপি প্রায় চার মিলিয়ন যা পূর্বের বছরের তুলনায় প্রায় চারগুণ। একইভাবে এই অভাবনীয় সাফল্য উদযাপন করা হয় তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের হাতে লভ্যাংশ হস্তান্তর করার মাধ্যমে। সেদিন অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, আজ আমাদের জন্য এটি একটি অত্যন্ত আনন্দের দিন। মনে হচ্ছে এটি একটি ঈদের দিন। কারণ রাষ্ট্রায়ত্ত অনেক প্রতিষ্ঠান যখন লোকসান গুনছে তখন সোনালী ব্যাংকে (ইউকে) আমাদের মুনাফা দিচ্ছে।
২০১৪ সালে ব্যাংকটির মুনাফার পরিমাণ ছিল জিবিপি ২৭ লাখ ২০ হাজার। ওই বছর জিবিপি ১০ লাখ ৩৭ হাজার প্রভিশন সংরক্ষণ করায় আয় বেশি হলেও মুনাফা কিছুটা কমে আসে। মূলত আতাউর রহমান প্রধান বাংলাদেশের ফেরত আসার পর সোনালী ব্যাংক ইউকে লিমিটেড ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে চরম বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে থাকে। এ বিষয়ে ওই সময়ে ব্যাংকটির কর্মকর্তা লুৎফর রহমানের সঙ্গে এ প্রতিবেদকের টেলিফোনে আলাপ হলে তিনি জানান, ২০০১-২০১১ সাল পর্যন্ত মোট ১১ বছরে সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লাভ করেছিল মাত্র ৮৭০ হাজার পাউন্ড। আর  আতাউর রহমান প্রধান এখানে সিইও হিসেবে অবস্থানকালীন মাত্র ৩ বছরে (২০১২- ২০১৪ সাল পর্যন্ত) লাভ করেছিল ৭৭ লাখ ৫ হাজার পাউন্ড। অন্যদিকে ২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এই চার বছরে সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেড লোকসান করে ১৮ লাখ ৯৯ হাজার পাউন্ড।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়